স্ত্রী বাসায় না থাকলে নার্সের কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে বাসায় ডাকেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

| আপডেট :  ৮ আগস্ট ২০২২, ০৪:২১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ আগস্ট ২০২২, ০৪:১৭ অপরাহ্ণ

চাঁদপুরের হাইমচর উপজে’লা স্বা’স্থ্য কমপ্লেক্সের স্বা’স্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেনের বি’রুদ্ধে সিনিয়র নার্স এবং সহকারী এক নার্সের মেয়েকে যৌ’ন হ’য়রানির অ’ভিযোগ উঠেছে। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জার ও ভিডিও চ্যাটে অশালীন প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় চাঁদপুর সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অ’ভিযোগ দিয়েছেন ভু’ক্তভোগীরা।

রবিবার (০৭ আগস্ট) রাতে এ ঘটনায় দুটি অ’ভিযোগ পাওয়ার বি’ষয়টি নিশ্চিত করেছেন জে’লা সিভিল সার্জন ডা. শাহাদাত হোসেন।তিনি বলেন, ‘ডা. বেলায়েতের বি’রুদ্ধে দুটি অ’ভিযোগ পেয়েছি। অ’ভিযোগগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই কর্মকর্তার বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

লিখিত অ’ভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজে’লা স্বা’স্থ্য কমপ্লেক্সের এক সহকারী নার্স চাকরির সুবাদে তার কলেজশিক্ষার্থী মেয়েকে নিয়ে স্বা’স্থ্য কমপ্লেক্সের কোয়ার্টারে থাকেন। সম্প্রতি ডা. বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে নার্সের মেয়ের পরিচয় হয়। তখন কলেজশিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বর চান বেলায়েত।

মোবাইল নম্বর দিতে রাজি না হলে জো’রপূর্বক নিয়ে নেন। মোবাইল নম্বর নেওয়ার পর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারে ফোন দিয়ে অ’শ্লীল কথাবার্তা, মেসেজ ও ছবি পাঠান। সেইসঙ্গে ওই কর্মকর্তার স্ত্রী বাসায় না থাকলে ছাত্রীকে বাসায় যাওয়ার প্রস্তাব দেন। ওই কর্মকর্তার কথা না শুনলে ছাত্রীর মাকে অন্যত্র বদলি করার হু’মকি দেন।

কলেজশিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি ডা. বেলায়েতকে বাবার মতো শ্রদ্ধা করি। অথচ আমার সঙ্গে যে ধরনের অ’শ্লীল কর্মকাণ্ড করতে চেয়েছেন তিনি, তা প্রকাশ করার মতো নয়। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারে তার কর্মকাণ্ডের প্রমাণ আছে। তার যৌ’ন হ’য়রানির কারণে আমি মা’নসিকভাবে বি’পর্যস্ত। নিরুপায় হয়ে তার বি’রুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অ’ভিযোগ দিয়েছি।’ এদিকে, ডা. বেলায়েতের বি’রুদ্ধে যৌ’ন হ’য়রানির অ’ভিযোগে সিভিল সার্জনের কাছে আরেকটি লিখিত অ’ভিযোগ দিয়েছেন সিনিয়র এক নার্স।

তিনি অ’ভিযোগে উল্লেখ করেন, ক’রোনার টিকা দেওয়ার প্রণোদনা হিসেবে স্বা’স্থ্য কমপ্লেক্সের আট নার্সকে ২৪ হাজার করে এক লাখ ৯২ হাজার টাকা দেয় ম’ন্ত্রণালয়। আট নার্সকে শুধুমাত্র ৪৮ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা অফিস খরচ বাবদ কে’টে রাখেন বেলায়েত হোসেন। এসব টাকা চাইলে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারে অ’শ্লীল কথা বলে হ’য়রানি করেন।

অফিসে আ’পত্তিকর কথাবার্তা বলেন। যৌ’ন হ’য়রানির ভ’য়ে স্বা’স্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সরা তার অফিস রুমে যেতে ভ’য় পান। এজন্য অনেক নার্স প্রণোদনার টাকা দাবি করেন না। তার যৌ’ন হ’য়রানির কারণে কাজে মনোযোগ দিতে পারছি না আমরা। এজন্য জে’লা সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অ’ভিযোগ ও ভিডিও বক্তব্য জমা দিয়েছি।

এই সিনিয়র নার্স বলেন, ‘ডা. বেলায়েত বিভিন্ন সময় হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারে অ’শ্লীল কথাবার্তা লিখে পাঠান। এতে আমার পরিবারে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। সেইসঙ্গে ফেসবুকে কোনও পোস্ট দিলে বাজে মন্তব্য করেন। ফলে পোস্টগুলো ডিলিট করতে বা’ধ্য হই। আমাকে দেখলেই অ’শ্লীল মন্তব্য করেন। নার্সদের প্রণোদনা অফিস খরচ দেখিয়ে নিজেই আ’ত্মসাৎ করেছেন। এজন্য প্রতিকার চেয়ে সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অ’ভিযোগ দিয়েছি।’

এসব অ’ভিযোগের বি’ষয়ে জানতে চাইলে ডা. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আমার বি’রুদ্ধে তারা কেন অ’ভিযোগ দিয়েছে তা জানি না। কিছুক্ষণ আগে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এসেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বি’ষয়ে আমাকে এখনও কিছু বলেননি। আমি এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জ’ড়িত নই।’ সুত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন