স্ত্রীর নামে বিউটি পার্লার খুলে লাখ টাকায় পুরুষকে ‘নারী’ বানান তারা

| আপডেট :  ৩১ জুলাই ২০২২, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩১ জুলাই ২০২২, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ণ

লেজার বিউটি পার্লারের আড়ালে পুরুষদের তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তর— এমনকি অ’বৈধভাবে ঠোঁট ফোলানো, শরীর ফর্সা করা এবং সিলিকন ব্রেস্ট ইমপ্ল্যান্ট করা এমন একটি চ’ক্রকে আ’টক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গো’য়েন্দা পুলিশ (ডি’বি)।

গো’য়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাতে অ’ভিযান চা’লিয়ে চ’ক্রের মূলহোতা হাদিউজ্জামান রহমান, তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তারসহ দুই সহযোগীকে গ্রে’ফতার করেছে ডি’বি রমনা বিভাগ। এসময় তাদের কাছ থেকে জ’ব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অপারেশনের বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং হরমোন পরিবর্তনের ও’ষুধ।শনিবার (৩০ জুলাই) রাতে গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন ঢাকা মহানগর গো’য়েন্দা পুলিশের (ডি’বি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্ম’দ হারুন অর রশীদ।

জানা গেছে, লেজার বিউটি পার্লারের আড়ালে পুরুষদের তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তর করে আসছে একটি চ’ক্র। দীর্ঘ পাঁচ বছরে শতাধিক রূপান্তরকামী পুরুষের অ’স্ত্রোপচার করেছে তারা। চ’ক্রের মূলহোতা হাদিউজ্জামান। এক সময় তিনি খুলনায় এক চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। রাজধানীর মালিবাগে মাহি হাসান টাওয়ারের চতুর্থ তলায় স্ত্রীর নামে লেজার বিউটি পার্লার খুলে শুরু করেন লিঙ্গ রূপান্তরের ব্যবসা। নিজেই সার্জন বনে যান।

মোহাম্ম’দ হারুন অর রশীদ বলেন, কথিত সার্জন হাদিউজ্জামান গ্রে’ফতারের পর পুলিশকে জানিয়েছেন— তিনি খুলনায় এক সার্জনের সহযোগী ছিলেন। সেখানে পুরুষদের তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তর করা হতো। সেখানে কাজ শিখে ঢাকায় চলে আসেন। এরপর ঢাকায় এসে পার্লারের আড়ালে তিনি নিজেই সার্জন সেজে শুরু করেন এ ব্যবসা। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া এ চ’ক্রের আর কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এ কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও ও’ষুধ সব চীন থেকে এনেছে চ’ক্রটি।

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরাই নিয়ে আসেন এসব পুরুষদেরঃ দেশের বিভিন্ন এলাকায় থাকা তৃতীয় লিঙ্গে গুরু মায়েদের সঙ্গে অনেক পুরুষের সখ্যতা রয়েছে। এ সখ্যতা গড়ে ওঠার পর ওই সব পুরুষদের নিজেদের দলে রাখতে অফার দেন গুরু মা। এজন্য তাদের সার্জারি বা অপারেশন করতে বলেন। একপর্যায়ে আগ্রহীদের গুরু মা হাদিউজ্জামানের ঠিকানা দেন। মালিবাগের এ পার্লারে আসার পর পুরুষদের শরীরে হরমোন প্রয়োগ করা হয়। এরপর তাকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করা হয় এবং এক পর্যায়ের অপারেশন করা হয়।

পুলিশের জি’জ্ঞাসাবাদে হাদিউজ্জামান বলেছেন, সার্জারির আগে হরমোন প্রয়োগ করে তাদের নারীসুলভ শরীর করা হয়। এরপর সার্জারি করা হয়। এসব সার্জারি সে নিজেই করেন বলেও পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।

লাখ টাকায় পুরুষকে তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তরঃ পুরুষ থেকে তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তর করতে প্রতিজনের কাছ থেকে লাখ টাকা নেওয়া হয় বলে পুলিশকে জানিয়েছেন হাদিউজ্জামান।

এ বি’ষয়ে ডি’বিপ্রধান বলেন, প্রতিটি সার্জারির আগে হাদিউজ্জামান লাখ টাকা নেন। তার কোনো চিকিৎসা সনদ নেই, নেই কোনো কাগজপত্র। তারপরও সে এসব সার্জারি করতেন। সে নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে অন্তত একশ পুরুষকে তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তর করেছেন। কৃত্রিম স্ত’ন প্রতিস্থাপন ও ঠোঁটের আকার পরিবর্তনও করতেন তিনি।