‘কনেযাত্রী’ নিয়ে বরের বাড়িতে বিয়ে করতে এলেন ইতি

| আপডেট :  ১৩ জুলাই ২০২২, ১০:৩৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৩ জুলাই ২০২২, ১০:১৩ অপরাহ্ণ

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় কনেযাত্রী নিয়ে বরের বাড়ি এসে বিয়ে করে আলোচনায় দম্পতি। বুধবার এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। দেশের চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী বর তার আত্মীয়-স্বজনসহ অন্যান্য সহযাত্রীদের নিয়ে কনের বাড়ি যান বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে। এরপর সেখান থেকে কনেকে নিজের বাড়ি নিয়ে আসেন।

কিন্তু ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকার ইউএনওর গাড়িচালক আব্দুল কাদেরের মেয়ে ইতি সেলিনা উল্টো কাজটি করেছেন। তিনি তার সহযাত্রীদের নিয়ে একই উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের সামসুদ্দিন লস্করের ছেলে দীপ্ত টিভির সাংবাদিক এম এ মালেক শান্তর বাড়ি হাজির হন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে।

প্রথাগতভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশমুখে যেভাবে বরকে বরণ করা হয়, তেমনি এই বিয়েতেও কনেকে ফুলের মালা পরিয়ে, মিষ্টি খাইয়ে বরণ করে নেন বরপক্ষের আত্মীয়-স্বজন। এরপর বর-কনে আসনে বসে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। সব অতিথিদের আপ্যায়ন করানো হয় এবং কনে থেকে যান ছেলের বাড়ি।

ব্যতিক্রমী এ বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহের কমতি ছিল না। বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে বরের বাড়ীতে যেমন উৎসাহী জনতা ভিড় ছিল তেমনি কনের বাসায়ও অনেক মানুষ জড়ো হন। প্রথার বাইরের বিয়ের প্রস্তাবটি আসে মূলত বর শান্তর পক্ষ থেকে। তারা চেয়েছেন এ বিয়ের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে।

এ ব্যাপারে কনে সেলিনা বলেন, ছেলেরা যদি পারে মেয়েদেরকে বিয়ে করে নিয়ে আসতে তাহলে মেয়েরা কেন পারবে না। নতুন সিস্টেমে বিয়ে করতে পেরে আমি অনেক খুশি। প্রথমে ভেবেছিলাম এভাবে বিয়ে করব, ঠিক হবে কি না। কিন্তু পরে আমি রাজি হই। এমন অন্যরকম ভাবে বিয়ে এর আগে আর কেউ করেনি। বিয়েতে এজন্য অনেক আনন্দ হয়েছে।

তিনি বলেন, শুরুতে দুই পরিবারের আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশী আপত্তি জানালেও পরে তারা রাজি হন এবং সাদরেই এ প্রস্তাব গ্রহণ করেন। বর এম এ মালেক শান্ত বলেন, পুরুষশাসিত সমাজে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের জন্য নতুন নিয়মে বিয়ে করে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি।