৮ মাসে কোরআন হাফেজ হলেন ৭ বছরের শিশু রাশাদ

| আপডেট :  ৮ জুলাই ২০২২, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ জুলাই ২০২২, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ণ

বাংলা একাত্তর ডেস্কঃ সাত বছর বয়সী এক শিশু মাত্র ৮ মাসে পবিত্র কোরআন হিফজ করেছে। শিশুর নাম রাশাদ নিমর আবু রাস। ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজা উপত্যকার সন্তান সে। এ শহরের সর্বকনিষ্ঠ হাফেজ হিসেবে সবার প্রশংসা কুড়ায় এ শিশু। মঙ্গলবার (২৪ মে) প্যালেস্টাইন ক্রনিকল সূত্রে এ খবর জানা যায়।

শিশুটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন তৈরি করেছেন। তার হিফজ সমাপন উপলক্ষে মাদরাসায় বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে গাজা উপত্যাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, পবিত্র কোরআন হিফজের পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ায় রাশাদকে অভিবাদন জানায় সবাই। রাশের অনন্য কৃতিত্বে তার প্রশংসা করেন পরীক্ষাকরা। পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা আলিঙ্গন করেন তাকে। ‘রাশাদ সবচেয়ে সুন্দর হাফেজ’ লেখা একটি প্ল্যাকার্ড ধরে রাখেন রাশাদের বোন।

রাশাদের বাবা নিমর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাশাদকে গাজা শহরের হিফজ মাদরাসায় ভর্তি করা হয়। আমি মনে করি, আমার সন্তন যেন ছোট্ট বয়সেই কোরআনের হাফেজ হোন মহান আল্লাহ সেই ব্যবস্থা করে দেন। ছোটবেলা থেকেই আমি তার জন্য দোয়া করতাম- ‘হে আল্লাহ আপনি তাকে সুপথপ্রাপ্ত ও সৎপথের প্রদর্শক করুন। ’ তার মুখ দেখলেই আমি তার জন্য দোয়া করতাম। ভোরে ঘুম থেকে উঠে তার মাথায় হাত বুলিয়ে কপালে চুমো খেতাম। ’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রতি মুহূর্তে তার জন্য আমি দোয়া করেছি- ‘হে আল্লাহ আপনি তাকে সুপথপ্রাপ্ত ও সৎপথের প্রদর্শক করুন। রাশাদের হিফজ সম্পন্ন হওয়ার পর আমি উপলব্ধি করি যে মহান আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছেন। তাকে সুপথের দিশা দিয়েছে। কারণ পবিত্র কোরআন মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় সুপথপ্রাপ্তির মাধ্যম।’

রাশাদের হিফজের শিক্ষক জানান, ‘কোরআন হিফজের বিষয়টি তিনটি বিষয়ে নির্ভরশীল। শিক্ষক, পরিবার ও মাদরাস। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মাদরাসার চিন্তা ছিল, এখানের সব শিশু একদিন হাফেজ হবেন। তবে বিষয়টি মোটেও সহজ নয়। বরং এর পেছনে অনেক চেষ্টা পরিশ্রম ও আত্মত্যাগের প্রয়োজন। হিফজের সময়গুলো মানুষের জীবনে সেরা মুহূর্ত। কোরআনকেন্দ্রিক জীবনব্যবস্থা জীবনে নিত্য-নতুন দিগত্নের উন্মোচন করে দেয় যা অন্যান্য জ্ঞানচর্চায় হয় না।’

হাফেজ রাশাদের পিতা বলেন, ‘মাদরাসায় ভর্তির পর রাশাদের হিফজের পরিমাণ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। এক সময় সে নিজেই ১০ দিনে দুই পারা পর্যন্ত হিফজ করতে থাকে। হিফজের পুরো আমরা সবাই তার প্রতি খুবই যত্নবান ছিলাম। রাশাদের শিক্ষক, তার মা ও আমি তার জন্য অনেক পরিশ্রম করতাম। এক দীর্ঘ পরিশ্রমের পর আমরা এ সাফল্য পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছি। ’

শুরু থেকেই বাবা-মা, প্রতিবেশী ও শিক্ষকদের সবাই কোরআন হিফজ করতে রাশাদকে উৎসাহ দিতেন। উৎসাহ বাড়াতে তার জন্য নিয়মিত পুরস্কার থাকত। প্রতি পৃষ্ঠা মুখস্থ করার পুরস্কার হিসেবে সে অনেক খেলনাসামগ্রী পেয়েছে। অবশেষে কোরআন হিফজ সম্পন্ন করে সে এখন একটি বাইক পেয়েছে।

প্রসঙ্গত, রাশাদ নিমর আবু রাস গাজা শহরের আত-তাবেয়িন আশ-শরইয়্যাহ হিফজ মাদরাসার প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সেই ছিল চলতি শিক্ষাবর্ষে মাদরাসাটির সবচেয়ে কম বয়সী হাফেজ।