কাঁচাবাজারের কর্মচারী থেকে জাতীয় ফুটবলে সাইফুল

| আপডেট :  ৩০ জুন ২০২২, ১১:২২ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩০ জুন ২০২২, ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ

বাংলা একাত্তর ডেস্কঃ নাম সাইফুর রহমান রাতুল। কথা বলেন গুছিয়ে গুছিয়ে। বলার ভঙ্গীতে যেমন স্মার্টনেস, তেমনি তেমনি পায়ের কাজেও। তাই দশম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই এবারের বঙ্গবন্ধু জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সুযোগ হয়েছে তাঁর। রাতুল ছিলেন আড়তের কাঁচাবাজারের কর্মচারী। দিনে পেতেন ৫০ টাকা। এখন ফুটবলে বেশি সময় দিতে গিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন কাঁচাবাজারের সেই কাজ।

সাইফুর রহমান রাতুলের দাবি, যশোরের ফুটবল ইতিহাসে দলের হয়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার তিনি। এখন বেনাপোলের এই উঠতি ফুটবলার অবস্থান করছেন ঢাকায়। জাতীয় স্কুল ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে বেনাপোল মাধ্যমিক স্কুলের নেতৃত্ব কাঁধে নিয়ে। কাল পল্টন ময়দান খ্যাত আউটার স্টেডিয়ামে তার করা জোড়া গোলের ওপর ভর করেই চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধনী ম্যাচে জিতেছে তার দল। ৩-১ গোলে হারায় হবিগঞ্জের ইদ্রিস আলী স্কুলকে। অথচ এই রাতুল ছিলেন আড়তের কাঁচাবাজারের কর্মচারী। দিনে পেতেন ৫০ টাকা। এখন ফুটবলে বেশি সময় দিতে গিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন কাঁচাবাজারের সেই কাজ।

বেনাপোল এলাকাটি ভারতীয় সংলগ্ন হওয়ায়, এখানে মাদক আর চোরাকারবারের ব্যাপক প্রভাব। তরুণদের মাদক আর চোরাকারবারের থেকে মুক্ত রাখতেই জন্ম আলহাজ নুর ইসলাম ফুটবল একাডেমির। এই একাডেমির ছেলে মেহেদী হাসান অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলেন সেমিফাইনাল ও ফাইনালে পেনাল্টি ঠেকিয়ে। সেই একাডেমির এই প্রজন্ম রাতুল।

খেলেন রাইট উইং, লেফট উইং এবং স্ট্রাইকার পজিশনে। তার মতে, আমি কোচের পছন্দমাফিক এই তিন পজিশনের যেকোনো একটিতে খেলি। সব পজিশনই আমার প্রিয়। এবারের জাতীয় স্কুল ফুটবলের বাছাই পর্বে ৩ ম্যাচে ৩ গোল করেছেন। আর করিয়েছেন আরো চার গোল। জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার সাব্বির আহমেদ পলাশের কোচিংয়ে চলছে এই একাডেমি। রাতুলের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ পলাশ। জানান, ‘ওর ডান পা বাম পা সবই সমান তালে চলে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ও।’ এবারের জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে এই টিন এজ ফুটবলারের তিন গোল ছিল।

সাইফুর রহমান রাতুলের স্বপ্ন এখন বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে। জানান, আমি কাঁচাবাজারের কাজ ছেড়েছি ফুটবলে বেশি সময় দেয়ার জন্য। আগে সকালে একবেলা কাজ করে বিকেলে ফুটবল খেলতাম। এখন দুই বেলা অনুশীলন করি। তাই কাজটি ছেড়ে দিয়েছি। পরবর্তী লক্ষ্য লাল-সবুজ জার্সি গায়ে তোলা।

তিনি জানান, এলাকা ভবারবেড় মাদককারবারিদের আখড়া। আমাদের সাথের বহু ফুটবলার এই মাদক বহনের সাথে জড়িয়ে ফুটবল থেকে হারিয়ে গেছে। আমাদের একাডেমিতে ২০০ ফুটবলার থাকলেও এখন সে সংখ্যা কম। যোগ করেন, আমি এবং আমার কিছু বন্ধুরা এর সাথে জড়ায়নি। ফুটবলে এসেছি এসব থেকে দূরে থাকতে। এক্ষেত্রে কোচ আমাদের সার্বিক সহায়তা করেছেন।