পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে ২১ জেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের মহাপরিকল্পনা

| আপডেট :  ২৯ জুন ২০২২, ১০:২১ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৯ জুন ২০২২, ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগকে ঘিরে মহাপরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। এই তিন বিভাগের ২১টি জেলায় নতুন করে ১৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) স্থাপনের পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ইতোমধ্যে কয়েকটির বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শিল্পায়ন গতিশীল হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে নির্মাণ করা হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল।’ তাঁর এই বক্তব্যেকে ঘিরে বড় স্বপ্ন দেখছে বেজা। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার মাধ্যমে পুরো দেশের সঙ্গে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর যোগাযোগের নতুন দ্বার খুলে গেছে। এ সেতু সংযুক্ত হবে এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গেও। এর মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক শিল্পায়ন হবে। তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোতে সুযোগ হবে নতুন কর্মসংস্থানের। সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে বেজা।

ইতোমধ্যে বেজা বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলায় ২০৫ একর জমি নিয়ে মোংলা ইজেড স্থাপন করেছে। এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে তিনটি শিল্প নির্মাণে এরই মধ্যে জমি বরাদ্দের চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর পাশে প্রায় ১০৫ একর জমিতে স্থাপন করা হচ্ছে আরেকটি ইজেড। এ ছাড়া বাগেরহাট জেলায় সুন্দরবন সংলগ্ন ১ হাজার ৫৪৬ একর জমি নিয়ে একটি ট্যুরিজম পার্ক স্থাপনেরও পরিকল্পনা রয়েছে বেজার।

শরীয়তপুর জেলার জাজিরা ও গোসাইরহাট উপজেলায় দুটি ইজেড স্থাপনে বেজা গভর্নিং বোর্ডের অনুমোদন রয়েছে। এ দুটির আয়তন হবে প্রায় ৫২৫ ও ৬৮৬ একর। এ ছাড়া মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলায় ১ হাজার ১২৫ একর জমিতে ইজেড স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ফরিদপুর সদর উপজেলায় আনুমানিক ৮৮৮ একর জমি নিয়ে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রায় ২০০ একর জমিতে একটি ইজেড স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় একটি ইজেড স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। যার আয়তন হবে প্রায় ২০৮ একর। এ ছাড়া জেলার তেরখাদা উপজেলার ৫০৯ একর জমি নিয়ে আরেকটি অঞ্চল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেজার গভর্নিং বোর্ড।

এদিকে, মাগুরার শ্রীপুর এবং সাতক্ষীরার সদর উপজেলার অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। হিজলা উপজেলায় ১ হাজার ৭২৯ একর জমি নিয়ে আরেকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের অনুমোদন রয়েছে। ভোলা সদরেও ইজেডের পরিকল্পনা রয়েছে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন সমকালকে বলেন, মোংলায় বাস্তবায়নাধীন দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিগগিরই শিল্প নির্মাণকাজ শুরু হবে। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে কয়েক হাজার লোকের। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়িত হবে গোপালগঞ্জ, খুলনা, মাদারীপুর, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল।

তিনি বলেন, কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলায় ৩৮২ একর জমির ওপর নির্মিত হবে কুষ্টিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল। এটির সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে পুরো ৩৮২ একর জমির মালিকানা গ্রহণ করেছে বেজা। এ ছাড়া ঢাকার নবাবগঞ্জে মাওয়ার কাছে প্রায় ৮০০ একর জমি নিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশে বিশেষ করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিকল্পিত শিল্পায়ন আরও গতিশীল হবে।