মোংলা বন্দর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় পণ্য যাচ্ছে সাড়ে ৩ ঘণ্টায়

| আপডেট :  ২৮ জুন ২০২২, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৮ জুন ২০২২, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ

পদ্মা সেতু চালুর পর মোংলা বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা এখনই সুফল পেতে শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন। এ বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় রাজধানী ও আন্তজার্তিক সমুদ্রবন্দরের মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়েছে। সময় বেঁচে যাওয়ার ফলে বছরে বাঁচবে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া পদ্মা সেতু চালুর পর ভোগান্তি কমায় আনন্দ বয়ে যাচ্ছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ট্রাক-লরি চালক ও তাঁদের সহকারীদের মধ্যে।

মোংলা বন্দর কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং অ্যাসোসিয়েশনের (সিঅ্যান্ডএফ) সভাপতি সুলতান আহমেদ খান বলেছেন, ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি আশির্বাদ। পদ্মা সেতু চালুর পর আমাদের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে প্রায় দুই শতাধিক ট্রাক ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এ বন্দর ব্যবহারের সঙ্গে আমাদের প্রায় ৪০০ ব্যবসায়ী আমদানি-রপ্তানিতে জড়িত।

আগে মোংলা বন্দর থেকে ঢাকায় আমাদের পণ্য পৌঁছাতে সময় লাগতো কমপক্ষে ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টা। এখন লাগছে সাড়ে তিন ঘণ্টা। এর ফলে, শুধু সড়কপথেই আমাদের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের সময় বাঁচার পাশাপাশি বছরে আর্থিকভাবে বেঁচে যাবে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া সময় বেঁচে যাওয়ার কারণে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে। আমরা এখনই পদ্মা সেতুর সুফল পেতে শুরু করেছি।’

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারবিডা) সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, ‘সেতু উদ্বোধনের পর আমাদের ব্যবসায়ীদের আমদানি করা শতাধিক গাড়ি মোংলা বন্দর থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় পৌঁছে গেছে।

এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের শুধু জ্বালানি তেল বাবদ বছরে প্রায় ১২ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। বারবিডার প্রায় ৩০০ সদস্য মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি করেন। কম সময়ে গাড়ি খালাস ও রাখার পর্যাপ্ত জায়গা থাকায় ব্যবসায়ীরা এ বন্দর দিয়ে আমদানি করতে বেশি পছন্দ করেন। পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানিতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বেড়েছে কয়েকগুণ।’

মোংলা বন্দর এলাকার পরিবহণ ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরদিন রোববার বিকেলে কোম্পানির মাল নিয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছি। এর আগে ঢাকায় রওনা দিলে কখন পৌঁছাব, তার কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। মাওয়া ঘাটে সিরিয়াল দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে, এমনকি দুই থেকে তিন দিন পর সিরিয়াল পেতাম।

তার ওপর ফেরির লোকজনদের ম্যানেজ করাসহ নানা ঝামেলায় পড়তে হতো। এখন আর সেই সমস্যা নেই। এখন রওনা দিয়ে কখন ঢাকা পৌঁছাব, তার নিশ্চয়তা আছে। সবচেয়ে বড় কথা, আমি আমার পরিবারের কাছে কখন পৌছাব, সে নিশ্চয়তা আমি দিতে পারব।