আহসানউল্লাহ স্বামী নন, তাহলে কেন তিনি জয়া আহসান?

| আপডেট :  ১৯ জুন ২০২২, ১০:১৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৯ জুন ২০২২, ১০:১৯ অপরাহ্ণ

ক্যারিয়ার শুরু জয়া মাসউদ নামে। মডেল ও অভিনেতা ফয়সাল আহসানের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে নিজের নামের শেষে মাসউদের বদলে জুড়ে নেন আহসান। এখন তিনি ‘জয়া আহসান’ নামেই দুই বাংলায় সমধিক পরিচিত। ১৯৯৮ সালে ফয়সাল আহসানকে বিয়ের পর এই দম্পতির সুন্দরভাবেই কেটে যায় এক যুগ। কিন্তু ১৩ বছরের মাথায় সেই দাম্পত্য আর টেকেনি। শোনা যায়, ২০১১ সালে ফয়সাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় জয়া তাকে ডিভোর্স দেন। যদিও এই বিচ্ছেদের খবর তাদের দুজনের কেউই কখনো নিশ্চিত করেননি।

জানা যায়, ব্রিটিশ ভারতের ঢাকার নবাব খাজা আহসানউল্লাহ পরিবারের সন্তান ফয়সালের পুরো নাম মোহাম্মদ ফয়সাল আহসানউল্লাহ। বিয়ের পর নামের শেষে জোড়া স্বামী ফয়সালের নামের অংশ এখনো রেখেছেন জয়া আহসান।গত প্রায় এক যুগ ধরে ফয়সাল আহসান জয়ার স্বামী না হলেও জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী এখনো কেন তার নামের অংশ ধরে রেখেছেন? ভক্ত-অনুরক্তদের রয়েছে জানার কৌতূহল। কিন্তু এই প্রশ্নের জবাব কখনোই দেননি অভিনেত্রী।

নানা সময়ে এ নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হলেও ‘ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই না’ বলে এড়িয়ে গেছেন। এছাড়া ফয়সাল আহসানের সঙ্গে কেন তার সংসার টেকেনি, তা নিয়েও কখনো মুখ খোলেননি দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয় এই লাস্যময়ী অভিনেত্রী।

যেভাবে ফয়সালের সঙ্গে প্রণয়: ঢাকার জমিদার পরিবারের ছেলে ফয়সাল। তার পূর্বপুরুষদের হাতেই গড়ে উঠেছিল সদরঘাটে অবস্থিত দেশের ঐতিহাসিক স্থাপনা আহসান মঞ্জিল। জয়ার সঙ্গে ফয়সালের পরিচয় ১৯৯৮ সালে। সেই প্রথম দেখার কথা ফয়সাল বলেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে। কীভাবে শুরুর দিকের ‘তিক্ত সম্পর্ক’ প্রেমে রূপ নিয়েছিল, সে গল্পটাও তিনি বলেছিলেন ওই সাক্ষাৎকারে।

১৯৯৮ সালে একটি বিজ্ঞাপনে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন জয়া ও ফয়সাল। সেখানেই প্রথম দেখা। শুটিংয়ে এক ঘণ্টা দেরি করে আসেন ফয়সাল। মেকআপ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন জয়া। রেগে ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন ফয়সালের ওপর। নানা তিক্ত কথা শুনিয়ে দেন। সেই রাগই পরে বদলে যায় অনুরাগে। ফোনে কথা বলতে বলতে পড়েন গভীর প্রেমে। সেই প্রণয় পরে গড়ায় পরিণয়ে।

কেন ভাঙল দাম্পত্য?
দাম্পত্য জীবনের কোনো বিষয় নিয়েই কখনো মুখ খোলেননি জয়া বা ফয়সাল। বিয়ের পরও বিভিন্ন নাটক ও বিজ্ঞাপনে জয়ার সঙ্গে কাজ করছিলেন ফয়সাল। জনপ্রিয় তারকা জুটি হয়ে উঠেছিলেন তারা। ধানমন্ডিতে ‘প্রেমের সোপান’ নামে একটি ফাস্টফুডের দোকানও খুলেছিলেন। সুখেই চলছিল তাদের সংসার। কয়েক বছর যাওয়ার পর ঘটে ছন্দপতন।

সেসময় জয়ার জনপ্রিয়তা বাড়ছিল হুহু করে। তুলনায় পিছিয়ে ছিলেন ফয়সাল। জয়ার সেই সাফল্যই তাদের দাম্পত্যে ফাটল ধরিয়ে দেয় বলে গুঞ্জন। মনোমালিন্য বাড়তে থাকে। ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্বও ক্রমশ বাড়তেই থাকে।

ফয়সাল চেষ্টা করেছিলেন সংসারটা টেকাতে। কিন্তু জয়ার পক্ষ থেকে সায় ছিল না। ফলে দুরত্বও আর কমেনি। ফাটল বড় হতে হতে ২০১১ সালে তা বিচ্ছেদে রূপ নেয়। বিয়েবিচ্ছেদ হয় তাদের।

ফয়সাল ও জয়া এখন যেমন: দাম্পত্য ভাঙার এক যুগেও জয়ার হাতে ওঠেনি মেহেদির রং। অর্থাৎ দ্বিতীয়বার সংসার গড়ার উদ্যোগ নেননি অভিনেত্রী। তিনি কি আর ঘর বাঁধবেন না? এ নিয়ে গত বছর এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছিলেন, বিয়ের কোনো চিন্তা ভাবনা তার মাথায় নেই। কারণ কাজ নিয়ে তিনি এতটাই মগ্ন যে, সংসারের মায়াজালে আর আবদ্ধ হতে চান না।

বর্তমানে এপার-ওপার দুই বাংলায় সমানে কাজ করছেন জয়া আহসান। আগামী ২৪ জুন কলকাতায় মুক্তি পেতে চলেছে তার নতুন ভারতীয় বাংলা সিনেমা ‘ঝরা পালক’। কবি জীবনানন্দ দাশের জীবনী নিয়ে এই সিনেমা। পরিচালক সামন্ত মুখোপাধ্যায়। সেখানে জীবনানন্দ দাশের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ব্রাত্য বসু। তার স্ত্রী লাবণ্যের চরিত্রে দেখা যাবে জয়াকে। এছাড়া তার হাতে রয়েছে আরও একগুচ্ছ কাজ।

হটপ্যান্ট স্লিভলেস টপ পরে উদ্দাম ড্যান্স ‘পটলকুমার’ হিয়ার: এদিকে ফয়সাল আহসানও আর বিয়ে করে সংসারী হননি। হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসাই বুকে লালন করে রেখেছেন তিনি। একসময়ের জনপ্রিয় মডেল ফয়সাল বর্তমানে রেস্টুরেন্ট, বুটিক হাউজ ও আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। এছাড়া সাবেক হকি খেলোয়াড়দের নিয়ে ‘ভ্যাটারান হকি বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

সূত্র : ঢাকাটাইমস২৪