মু’সলিম যুবকের উপর পুলিশের যে নি’ষ্ঠুরতার ভিডিও ভারতকে নাড়া দিয়েছে

| আপডেট :  ১৮ জুন ২০২২, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৮ জুন ২০২২, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ

ভারতীয় পুলিশ তাদের হেফাজতে থাকা একদল মু’সলিম পুরুষকে বেদম প্রহার করছে, এরকম একটি ভিডিও অনলাইনে দেখেছেন লাখ লাখ মানুষ। ভিডিওটি শেয়ার করেছেন ক্ষমতাসীন বিজেপির এক নির্বাচিত জন-প্রতিনিধি। তিনি পুলিশের নিষ্ঠুর আচরণের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘এই পি’টুনি আসলে এই লোকগুলোর জন্য একটি উপহার।’এ ঘটনায় জড়িত অফিসারদের বি’রুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নি’র্যাতনের শি’কার মানুষগুলোর পরিবার বলছে, তাদের প্রিয়জনরা নির্দোষ। তাদের মুক্তি দেয়া উচিৎ।

‘এটা আমার ভাই। ওকে প্রচণ্ড মে’রেছে ওরা। ও ব্য’থায় অনেক চি’ৎকার করছিল,’ বলতে বলতে কা’ন্নায় ভে’ঙে পড়লেন জেবা। যে হাতে ধরা মোবাইলফোনে তিনি তার ছোট ভাই সাইফকে মা’রার এই ভয়ঙ্কর ভিডিওটি দেখছিলেন, তার সেই হাতটি তখনো কাঁপছিল। তিনি বলেন, এই দৃশ্যের দিকে আমি তাকাতে পারছি না। ওকে যে কি সাং’ঘাতিকভাবে মে’রেছে।

উত্তর ভারতের শহর সাহা’রানপুরে নিজের বাড়িতে এ সময় তাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছিলেন আত্মীয়-স্বজনরা। বিচলিত হওয়ার মতো ভিডিওটিতে দেখা যায় কিছু ভারতীয় পুলিশ তাদের হাতে ব’ন্দী কয়েকজন মু’সলিম পুরুষকে মা’রতে উদ্যত, যার মধ্যে জেবার ভাইও রয়েছে।

ভিডিওতে আরো দেখা যায়, পুলিশ অফিসাররা ওই লোকগুলোকে র’ড দিয়ে পে’টাচ্ছেন। র’ডগুলো তারা বেসবল ব্যাটের মতো করে ঘোরাচ্ছে। প্রতিবার যখন কারো ও’পর এরকম র’ডের বাড়ি পড়ছে, তখন তার শব্দ শোনা যাচ্ছে, এরপরই শোনা যাচ্ছে চি’ৎকার।

‘খুব ব্য’থা লাগছে, খুব ব্য’থা লাগছে …আর মেরো না,’ আ’তঙ্কে-ভয়ে এক কোনায় দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে জড়োসড়ো হয়ে থাকা কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়।এরপরও যখন বেদম প্রহার চলতে থাকে তখন সবুজ রঙের টি-শার্ট পরা এক লোককে প্রার্থনা করতে দেখা যায়। আর সাদা শার্ট পরা সাইফকে দেখা যায় ও’পরে দুই হাত তুলে যেন তিনি আত্মসমর্পণ করছে।

গত সপ্তাহে পুলিশ যে কয়েকজন মু’সলিম পুরুষকে ধরে নিয়ে আ’টকে রেখেছিল, ২৪ বছর বয়সী সাইফ তাদের একজন।ভারতে ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবা’দী দল বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মা হজরত মোহাম্ম’দ সা: সম্পর্কে উ’স্কানিমূলক কিছু মন্তব্য করার পর দেশজুড়ে প্র’তিবাদ শুরু হয়। সাহা’রানপুরেও শুক্রবার মসজিদে জুমার নামাজের পর বি’ক্ষো’ভে যোগ দিয়েছিল হাজার হাজার মানুষ।

মু’সলিম দেশগুলো থেকে তীব্র প্র’তিবাদের মুখে বিজেপি পরে নূপুর শর্মাকে দল থেকে ব’রখাস্ত করে। এছাড়াও ঘোষণা করে, তারা যেকোনো ধর্মকে অবমাননার বি’রুদ্ধে।সাহা’রানপুরের এই প্র’তিবাদ ছিল মোটামুটি শান্তিপূর্ণ। মসজিদ থেকে বেরিয়ে লোকজন শহরের দোকানপাটের সামনে দিয়ে মিছিল করে যায়। তবে উ’ত্তেজনা যখন বাড়ছিল, তখন হিন্দু মালিকানাধীন কিছু দোকানে হা’মলা হয়। এ সময় দু’জন ব্যবসায়ী আ’হত হন। পরে জনতাকে ছত্র-ভঙ্গ করতে পুলিশ লা’ঠি চালায়।

পুলিশের কাগজপত্রে অ’ভিযোগ করা হয়, সাইফ ও আরো ৩০ জন মিলে দা’ঙ্গা-হাঙ্গামা করেছে। সহিং’সতায় উ’স্কানি দিয়েছে। একজন স’রকারি কর্মচারীর কাজে বা’ধা দিতে ইচ্ছেকৃতভাবে তাকে আ’হত করেছে এবং জীবনকে ঝুঁ’কিতে ফে’লেছে।

সাইফের পরিবার কার্ডবোর্ড বিক্রি করে কোনোরকমে জীবন চালায়। তারা বলছে, সাইফ নির্দোষ, এমনকি তিনি ওই বি’ক্ষো’ভেও ছিল না।তারা জানায়, সাইফ শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার দিকে ঘর থেকে বেরিয়েছিল তার এক বন্ধুর জন্য বাসের টিকেট কাটতে। তখন পুলিশ তাকে গ্রে’ফতার করে এবং সাহা’রানপুরের কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়।

জেবা যখন তাকে থানায় দেখতে যান, তখন তার ভাইয়ের শরীরে আ’ঘাতের চিহ্ন দেখেন বলেও জানান। তিনি বলেন, বেদম পি’টুনির ব্য’থায় তার শরীর নীল হয়ে গিয়েছিল। তিনি ঠিকমতো বসতে পর্যন্ত পারছিলেন না।

ভিডিওতে স্পষ্টভাবেই পুলিশের নৃ’শংসতা দেখা যাচ্ছে। সেটি অনলাইনে শেয়ার করেন বিজেপির এক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, শালাভ ত্রিপাঠি। ভিডিওর নীচে তিনি আবার ক্যাপশনে লিখেছিলেন, ‘বি’দ্রোহীদের জন্য একটি ফিরতি উপহার।’ ভিডিওটি অনলাইনে ভাইরাল হয়।

ত্রিপাঠি ভারতের সবচেয়ে ক্ষমতাধর এক রাজনীতিক ও উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সাবেক মিডিয়া উপদেষ্টা। ঘটনাটি ঘটেছে এ প্রদেশেই।

বিজেপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ ভিডিওর ঘটনার কোনো নি’ন্দা করা হয়নি। বিজেপি স’রকারের তরফ থেকেও নয়।

মা’নবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, ভারতে ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেখানে পরিবেশ ক্রমেই অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। দেশটির সংখ্যালঘু মু’সলিম’দের টার্গেট করে ঘৃণা-বিদ্বেষপূর্ণ কথাবার্তা বাড়ছে। বাড়ছে তাদের টার্গেট করে হা’মলার ঘটনাও।

বিবিসি এ পর্যন্ত কয়েকটি মু’সলিম পরিবারের সাক্ষ্য নিয়েছে যারা বলছে, গত শুক্রবার সাহা’রানপুরে তাদের আত্মীয়-স্বজনকে গ্রে’ফতারের পর কোতোয়ালি থানায় পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মা’রধর করা হয়েছে।

এরা ভিডিওতে তাদের নিকটজনকে চিহ্নিতও করেন, যাতে দেখা যায় পুলিশ সহিং’সতা চালাচ্ছে। অন্য ফুটেজে দেখা যায়, এই লোকগুলোকে একটি ভ্যানে তুলে অন্য একটি স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই দৃশ্যে কোতোয়ালি থানার সাইনবোর্ড স্পষ্টভাবেই চোখে পড়ে।

পুলিশের রিপোর্টেও কোতোয়ালি থানার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু এসব সত্ত্বেও এ সপ্তাহের শুরুতে স্থানীয় পুলিশ সেখানে এরকম কিছু ঘটার কথা অস্বীকার করেছিল।

পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার আকাশ টোমার বলেন, সাহা’রানপুরে এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দু’টি বা তিনটি ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। আপনি যদি একটি ভিডিও স্লো মোশনে দেখেন, আপনি সেখানে অন্য একটি জে’লার নাম দেখতে পাবেন।

টোমার পরে আবার বলেন, তিনি এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা করছেন। দরকার হলে ব্যবস্থাও নেবেন বলে জানান।

ভিডিওতে অন্য যাদের দেখা যাচ্ছে, তাদের পরিবার জানিয়েছেন, তাদের প্রিয়জনরা যখন আরো তথ্যের জন্য থানায় গিয়েছিলেন, তখন তাদের আ’টক করা হয়।

ফাহমিদার ছেলে সুবহান (১৯) থানায় গিয়েছিল তার বন্ধু আসিফ গ্রে’ফতার হওয়ার পর কি হয়েছে দেখতে। সেখানে যাওয়ার পর সুবহানকেও গ্রে’ফতার করে পে’টানো হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, হালকা হলুদ রঙের পোশাক পরা সুবহান মাটিতে পড়ে আছে। আর পুলিশ তার দিকে লা’ঠির বাড়ি মারছে। পরিবার বলছে, সুবহান গত শুক্রবার মসজিদে যায়নি। বি’ক্ষো’ভে অংশ নেয়া তো আরো পরের কথা। আমার ছেলেকে নির্দয়-ভাবে পে’টানো হয়েছে, কাঁদতে কাঁদতে বললেন ফাহমিদা।

এদিকে কর্মকর্তারা বলছেন, শুক্রবারের বি’ক্ষো’ভের সময় সহিং’সতার অ’ভিযোগে তারা ৮৪ জনকে গ্রে’ফতার করেছে।

পুলিশের সুপারিন্টেনডেন্ট রাজেশ কুমার বলেন, কেবলমাত্র অ’পরাধীদেরই গ্রে’ফতার করা হয়েছে। আমরা যখন কাউকে গ্রে’ফতার করি, তখন প্রথমে যেকোনো স’হিংস বি’ক্ষো’ভে অংশ নিচ্ছিল এমন ফুটেজ তাদের দেখাই, এরপরই কেবল তাদের গ্রে’ফতার করা হয়।

তবে তার এই কথার সাথে গ্রে’ফতার হয়েছে এমন কিছু লোকের পরিবারের কাছ থেকে আমরা যে বিবরণ শুনেছি, তা মিলছে না।

পুলিশের থানায় যখন এসব ঘটনা ঘটছে, তখন শহরের অন্যদিকে আইনের জো’র অন্যভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে। বুলডোজার দিয়ে দু’জন মু’সলিম পুরুষের বাড়ির অর্ধেকটা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এ দু’জনের বি’রুদ্ধে অ’ভিযোগ, তারা সহিং’সতায় উ’স্কানি দিয়েছিল।

ভারতে লাখ লাখ মানুষ এমন সব জোড়াতালি দেয়া ঘরবাড়িতে থাকে, যেগুলো কর্তৃপক্ষের যথাযথভাবে অনুমোদিত পরিকল্পনা ছাড়াই নির্মাণ করা হয়। বিজেপি এখন অহরহ এই বি’ষয়টিকে শা’স্তির একটি কারণ হিসেবে ব্যবহারের কৌশল নিয়েছে। সম্প্রতি বি’ক্ষো’ভে অংশ নেয়া লোকজনের অ’বৈধভাবে নির্মিত ঘর-বাড়ি ভে’ঙে দেয়ার যে নির্দেশ, তা একেবারে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অনুমোদন পেয়েছে।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ টুইট করে জানান, কথিত আইন-ভঙ্গকারীদের বি’রুদ্ধে বুলডোজারের কাজ চলবে।

শুক্রবার যে মু’সলিমরা নামাজ পড়েন, তাদের প্রতি ইঙ্গিত করে তার মিডিয়া উপদেষ্টা মৃ’ত্যুঞ্জয় কুমার একটি বুলডোজারের ছবি পোস্ট করেন। এর নীচে লেখা- ‘শুক্রবারের পর শনিবার আছে কিন্তু!’ এরপর গত শনিবার বিকেলে মুসকানের বাড়িতে আসলো একটি বুলডোজার এবং বাড়ির সামনের গেট ভেঙ্গে ফেলা শুরু করল।

পুলিশ সেখানে এসে হাজির হলো তার ভাইয়ের এক ছবি হাতে। জিজ্ঞেস করল, এ বাড়িতেই তিনি থাকেন কিনা। ১৭ বছর বয়সী ছেলেটিকে এর আগের রাতেই পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছিল।

মুসকান বলেন, ‘আমার বাবা নিশ্চিত করলেন ছবিটি তার ছেলের।’ জিজ্ঞেস করলেন, কিছু ঘটেছে কিনা। পরে তারা কোন উত্তর দিল না। হঠাৎ বুলডোজার চা’লানো শুরু করল।

কর্মকর্তারা এই তরুণের বি’রুদ্ধে শুক্রবার সহিং’সতায় উৎসাহ দেয়ার অ’ভিযোগ এনেছেন। একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে একটি ভিডিও দেখিয়েছেন। যেটিতে তারা বলছেন, ছেলেটিকে দেখা যাচ্ছে জনতাকে উ’স্কানি দিতে।

ছবিতে দেখা যায়, ছেলেটি জনতার উদ্দেশে বক্তৃতা দিচ্ছে, ‘এই দেশের মু’সলিমরা ঘুমিয়ে আছে। ইতিহাস সাক্ষী। যখনই মু’সলিমরা জেগেছে, তারা ক্রোধ নিয়ে জেগেছে।

মুসকান তার ভাইয়ের বি’রুদ্ধে আনা সব অ’ভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ও এমন ছেলে নয় যে ধ্বং’সাত্মক কিছু করবে। কিছু ভাঙার মতো ছেলে তিনি নয়, এগুলো সব মিথ্যে।

কর্মকর্তারা বলছেন, যাদেরকে ধরা হয়েছে, তাদের পরিবারকে এরকম নোটিশ দেয়া হয়েছিল যে, তাদের বাড়ি-ঘর যথাযথ অনুমোদন ছাড়া তৈরি করা হয়েছে। আমরা যখন ত’দন্ত চালাই, তখন দেখলাম তার পরিবার এমন এক আত্মীয় বাড়িতে থাকছে, যেটি অনুমোদন ছাড়া নির্মাণ করা।

পুলিশের এক অফিসার কুমার বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় এসব বাড়ি পরিদর্শন করছে। এরপর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি হুঁ’শিয়ারি দিয়ে বলেন, গ্রে’ফতার হওয়া আরো লোকজনের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হবে।

তিনি বলেন, যাদের গ্রে’ফতার করে জে’লে পাঠানো হয়েছে, তাদের ব্যাপারে অ’বৈধ কোনো কিছু জানা গেলে বুলডোজার চা’লানো হবে।

যোগী আদিত্যনাথের একজন উপদেষ্টা নভনীত সেহগাল বলেন, বুলডোজার দিয়ে যা করা হচ্ছে তা আইন ও সব নিয়ম মেনেই করা হচ্ছে। এখানে আইনের বি’রুদ্ধে কিছু হচ্ছে না।

ভারতের একদল শীর্ষস্থানীয় আইন বিশেষজ্ঞ, যাদের মধ্যে সাবেক বিচারপতি ও নামকরা আইনজীবীরা রয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন পেশ করেছেন পুলিশের এসব মা’রধর ও বুলডোজারের অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবহারের সর্বশেষ ঘটনাবলীর বি’রুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে।

তাদের চিঠিতে তারা অ’ভিযোগ তুলেন, আদিত্যনাথ পুলিশকে নিষ্ঠুর ও বেআইনিভাবে বি’ক্ষো’ভকারীদের ও’পর নি’র্যাতন চালাতে ম’দত দিচ্ছেন। তারা আরো বলেন, সর্বশেষ এসব ঘটনা জাতির বিবেককে নাড়া দিচ্ছে।

তারা বলেন, শাসকশ্রেণির এরকম নিষ্ঠুর দ’মন-নি’পীড়ন আইনের শাসনকে যেভাবে ধ্বং’স করছে, তা মানা যায় না। এটি সংবিধান ও রাষ্ট্র যেসব মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছে, তাকে একটা পরিহাসে পরিণত করছে।

মা’নবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভারত স’রকারের বি’রুদ্ধে অ’ভিযোগ তুলে বলে, তারা যেকোনো ধরণের ভিন্নমতকে দ’মন করতে চাইছে। ভারত স’রকার বেছে বেছে ও হিং’স্রভাবে ওই সব মু’সলিমের ও’পরই দ’মন চালাচ্ছে, যারা তাদের বি’রুদ্ধে বৈষম্যের প্র’তিবাদ জানাচ্ছে এবং শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ভিন্নমত তুলে ধরছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভারতীয় বোর্ডের প্রধান আকার প্যাটেল এক বিবৃতিতে বলেন, বি’ক্ষো’ভকারীদের মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ করে দ’মন করা। বিনা বিচারে আ’টকে রাখা এবং শা’স্তি হিসেবে ঘরবাড়ি ভে’ঙে দেয়া, এগুলো আন্তর্জাতিক মা’নবাধিকার আইন ও মানদ’ণ্ড রক্ষা করে চলার যে অঙ্গীকার ভারত করেছে, তার পুরোপুরি ল’ঙ্ঘন।

এদিকে সাহা’রানপুরে মুন্নি বেগম তার ছেলে ও স্বামীর খবরের অপেক্ষায় একটা দুঃসময় পার করছেন। তিনি অ’ভিযোগ করেন বলেন, এ দু’জনকেও পুলিশ মা’রধর করছে। তিনি জানেন না, কখন তারা ফিরে আসবে। যখন ফিরবে তখন তাদের থাকার মতো কোনো বাড়ি আর দাঁড়িয়ে থাকবে কিনা তাও তিনি জানেন না।

তিনি বলেন, ‘আমার নির্দোষ ছেলে ও স্বামী এখন জে’লে। আমি আমার মেয়েদের নিয়ে নতুন তৈরি করা বাড়িতে একাকী থাকছি। যদি ওরা আমাদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভে’ঙে দেয়, তখন কি হবে? সেটা নিয়ে আমি চিন্তিত। আমি রাতে ঘুমাতে পারি না।’

সূত্র : বিবিসি