আর্থিক অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার, দিনাজপুরের মেয়র সাময়িক বরখাস্ত

| আপডেট :  ১৬ জুন ২০২২, ০৫:১৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৬ জুন ২০২২, ০৫:১৩ অপরাহ্ণ

বাংলা একাত্তর ডেস্কঃ অবশেষে তৃতীয় বারের মতো সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে। প্রশাসনিক অদক্ষতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ প্রদান করা হয়।

মেয়রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়- ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে ৬৪ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা ছাড়াই ২ কোটি ৪৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬০৫ টাকার টেন্ডার করা এবং পরবর্তীতে ২০২০-২০২১ অর্থ বছর পরবর্তী ৩ বছরের বরাদ্দ হতে তা সমন্বয় করার কারণে কোনো টেন্ডার করা হয়নি, যা বিধিসম্মত হয়নি মর্মে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

২০২০-২০২১ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে পৌরসভার গরিব, দুস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। কিন্তু তার মধ্যে ১৪ লাখ ৩২ হাজার ৭৯০ টাকা দুস্থদের কাছে বিতরণ প্রক্রিয়ায় কোন প্রচলিত বিধিবিধান প্রতিপালিত হয়নি। বর্তমান মেয়র দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তার কর্মকালীন ১৯৩ জন মাস্টাররোলে কর্মচারী নিয়োগে কোনো বিধি-বিধান অনুসরণ করেননি এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিয়োগ দিয়েছেন।

ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের ধার্যকৃত নিবন্ধন ও নবায়ন ফি হতে আয় দিনাজপুরের প্রাক্তন জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংক্রান্ত সভায় ড্রাইভারদের প্রশিক্ষণ, ইজিবাইক হলুদ, নীল রং দ্বারা চিহ্নিতকরণ, ডাটাবেজ তৈরী প্রভৃতি করার সিদ্ধান্ত ছিল, কিন্তু তার কোন কিছুই করা হয়নি। আদায়কৃত অর্থ বর্ণিত সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বেতন ভাতা সম্মানী খাতে ব্যয় করা হয়েছে।

দিনাজপুর পৌরসভার দাখিলকৃত ৬১টি বিলবোর্ডের ভাড়া বাবদ বর্তমানে ১১ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া রয়েছে। টাকাগুলো আদায়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। দিনাজপুর বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে পৌরসভার জমি ভাড়ার টাকা দাবি করে ২৪ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছে। এ কারণে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এনে উন্নয়ন বরাদ্দ প্রাপ্তি হতে পৌরসভা বঞ্চিত হয়েছে।

গত ২০১০ সালের ৩০ মে স্থানীয় সরকার বিভাগের ৭৯৮নং স্মারকে পৌরভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত ৩৮ লাখ টাকা ভবন নির্মাণ না করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, মেয়র ও কাউন্সিলরদের সম্মানী ভাতা প্রদান করেছেন। এসব কারণে মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে, এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমার বিরুদ্ধে ২০১২ সালে ২০১৫ সালে দুদক তদন্ত করে আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। এবারও আমি অব্যাহতি পাব।