মহানবীকে নিয়ে আ’পত্তিকর মন্তব্য করা কে এই নূপুর

| আপডেট :  ৮ জুন ২০২২, ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ জুন ২০২২, ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ

ভারতের কূটনীতিকে বড় এক প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন একজন নূপুর শর্মা। তিনি মহানবী হযরত মুহাম্ম’দ (সা.)কে নিয়ে আ’পত্তিকর মন্তব্য করে নিজে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির মুখপাত্রের পদ থেকে সাময়িক ব’হিষ্কার হয়েছেন।

মু’সলিম’দের বি’রুদ্ধে হা’মলা, নি’র্যাতনের ইস্যুতে বিজেপি খুব একটা কথা বলে না। কিন্তু বিজেপি’র মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লি মিডিয়া শাখার প্রধান নবীন জিন্দালের আলাদা মন্তব্যের পর পরিস্থিতি যখন উত্তাল হয়ে উঠেছে, তখন রোববার বিজেপি একটি বিবৃতি দিতে বা’ধ্য হয়েছে। এতে মু’সলিম’দের ক্ষো’ভ মেটেনি। আরব বিশ্ব ক্ষো’ভে ফুঁসছে। কাতার সহ অনেক দেশে ভারতীয় পণ্য বর্জন শুরু হয়েছে। ভারতীয় বিশ্লেষকরাই বলছেন, এতে মু’সলিম দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষ’তিগ্রস্ত হবে। কিন্তু কে এই নূপুর শর্মা, যার কারণে ভারতের কূটনীতিতে এমন আ’ঘাত লেগেছে? এ প্রশ্নে গুগল সার্চ বলছে, ১৯৮৫ সালের ২৩শে এপ্রিল নয়াদিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। একটি শিক্ষিত পরিবারে তার জন্ম।

এ পরিবারের সদস্যদের অনেকেই স’রকারি চাকরিজীবী। নূপুরের মা দেরাদুনের। দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নকালে সংঘ পরিবারের ছাত্র বি’ষয়ক শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদে (এবিভিপি)তে যোগ দেন। ২০০৮ সালে স্টুডেন্টস ইউনিয়নে প্রে’সিডেন্টশিপ জয় করেন। দিল্লি ইউনিভার্সিটির হিন্দু কলেজ থেকে তিনি অর্থনীতিতে বিএ গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। পরে দিল্লি ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর অব ল’জ ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স থেকে মাস্টার অব ল’জ ডিগ্রি সম্পন্ন করেন এবং একজন আইনজীবী হয়ে ওঠেন।

ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একজন কর্মী হয়ে ওঠেন তিনি। অরবিন্দ প্রধান, অরুণ জেটলি, অমিত শাহের মতো সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৫ সালে ৩০ বছর বয়সে তিনি দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বি’রুদ্ধে প্রতিদ্ব’ন্দ্বিতা করেন বিজেপি’র টিকিটে। কিন্তু ৩১ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।

এরপর মনোজ তিওয়ারির অধীনে বিজেপি’র দিল্লি ইউনিটে বিজেপি’র আনুষ্ঠানিক মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ পান। তবে ২০২০ সালে জে. পি নাড্ডার সভাপতিত্বে দলের জাতীয় পর্যায়ে মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ পান। দিল্লি বিজেপি’র একজন নেতার তথ্যমতে, নূপুর শর্মা দলের দিল্লি ইউনিটের অংশ হওয়া সত্ত্বেও তাকে জাতীয় ইস্যুতে বিতর্ক করতে টেলিভিশন বিতর্কে পাঠানো হতো। এর কারণ, দলের সিনিয়র পর্যায়ে তার আইনগত ঘনিষ্ঠতা। এ ছাড়া জাতীয় এবং দ্বিভাষিক দক্ষ’তার জন্য তাকে বাছাই করা হতো। তাকে দেখা হতো তরুণ, এনার্জেটিক ও বে’পরোয়া হিসেবে।

২৭শে মে ২০২২। এ দিনটিতে তিনি টাইমস নাউ টেলিভিশন চ্যানেলে জ্ঞানবাপি মসজিদ নিয়ে বিতর্কে অংশ নেন। এই বিতর্কেই তিনি মহানবী হযরত মুহাম্ম’দ (সা.) ও তার সবচেয়ে ছোট স্ত্রী আয়েশা (রা.)কে নিয়ে বি’তর্কি’ত মন্তব্য করেন। এক্ষেত্রে তিনি একটি হাদিস উল্লেখ করেন। দাবি করেন ওই হাদিসটি যথার্থ। অল্ট নিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্ম’দ জুবাইর ওই বিতর্কের এই অংশটির একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তা নিয়ে পরে অ’ভিযোগ তোলেন নূপুর। তার দাবি এই ভিডিও অনেক বেশি এডিট করা হয়েছে এবং নির্বাচিত অংশ নেয়া হয়েছে। নূপুরের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন অল্ট নিউজের আরেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহা।

তিনি দাবি করেন, এই ভিডিও এডিট করা হয়নি। এটি একটি দীর্ঘ ক্লিপের অংশ। তাতেই এই বক্তব্য আছে। ওদিকে এ নিয়ে বিতর্ক, উ’ত্তেজনা সৃষ্টির পর পরের দিন ইউটিউব থেকে ওই প্রো’গ্রামের ভিডিও মুছে দেয় টাইমস নাউ কর্তৃপক্ষ।