সব
প্রেম মানে না কোনো ভয়, মানে না কোনো ভৌগোলিক সীমারেখা। তাই নিজের প্রেমিককে কাছে পেতে জলের কুমির, ডাঙায় বাঘের ভয়কে উপেক্ষা করে প্রায় এক ঘণ্টা সাঁতরে নদী পার হয়ে ভারতে গেছেন বাংলাদেশের মেয়ে কৃষ্ণা মণ্ডল। ভারতের কালীঘাটে গিয়ে ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করে সংসার বেঁধেছেন তিনি।
বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক দূরত্ব খুব বেশি না হলেও এক বাংলা থেকে আরেক বাংলায় প্রবেশে কম ঝক্কি নেই। আইনি মারপ্যাঁচও কম নয়। কিন্তু তাই বলে কি ভালোবাসার মানুষের কাছে পৌঁছনো যাবে না? প্রেম যে কোন বাধা মানে না সেটাই প্রমাণ করে দেখালেন কৃষ্ণা মণ্ডল। বাংলাদেশ থেকে নদী-জঙ্গল আর বিপজ্জনক পথ পেরিয়ে ঠিকই চলে গেছেন ভারতে, প্রেমিকের কাছে।
প্রেমের কারণে জীবন বাজি রাখার এ গল্পে অবশ্য খুশি নয় ভারতের স্থানীয় প্রশাসন। বেআইনিভাবে দেশটিতে প্রবেশের অভিযোগে গতকাল সোমবার কৃষ্ণা মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় পুলিশ। আজ মঙ্গলবার তাকে আদালতে ওঠানোর কথা রয়েছে। ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে।
স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে খবরে জানানো হয়, বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা কৃষ্ণা মণ্ডলের সঙ্গে ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার নরেন্দ্রপুর থানার রানিয়া এলাকার যুবক অভীক মণ্ডলের ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের ভিত্তিতে অভীককে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন কৃষ্ণা। কিন্তু ভারতে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট বা ভিসা নেই তার কাছে।
শেষ পর্যন্ত সুন্দরবনের বিপজ্জনক জঙ্গল আর নদী পেরিয়ে ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেন ওই তরুণী।পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সপ্তাহে সুন্দরবনের ভয়ংকর জঙ্গল পেরিয়ে নেমে পড়েন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মাতলা নদীতে। যে নদীতে যখন তখন বাঘ-কুমিরের মুখে পড়ার আশঙ্কা ছিল তার। কিন্তু বিপদের তোয়াক্কা না করে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে নদী সাঁতরে ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার কৈখালীতে ঢুকে যান কৃষ্ণা। পরে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করে সেখানকার কালীঘাট মন্দিরে গিয়ে বিয়ে সেরে ফেলেন দুজনে।
প্রেমের জন্য কৃষ্ণার এই সাহসিকতার কাহিনী লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এ গল্প যায় পুলিশের কানে। গতকাল সোমবার রানিয়া এলাকায় হানা দেয় স্থানীয় নরেন্দ্রপুর থানা পুলিশ। বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে তারা কৃষ্ণাকে গ্রেপ্তার করে।