সব
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বাবার সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছেন চার কন্যা। এরপর মেয়েদের খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রাগলপ্রায় বাবা। এ ঘটনায় থানায় সাধারেণ ডায়েরি করেছেন বাবা মজিবুল হক। নিখোঁজ চার কন্যা তাসনিম জাহান (১৭), মারজাহান (১৪), তাজিন সুলতানা (১২) ও মাইশা সুলতানা (৬)। তাদের মধ্যে বড় মেয়ে তাসনিম উপজেলা সদরের আফসারুল উলুম কামিল মাদ্রাসায় আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্রী। মারজাহান একই মাদ্রাসার দাখিল দশম শ্রেণি ও তাজিন সুলতানা ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। মাইশা নারুয়া তালিমুল কোরআন মডেল মাদ্রাসার শিশু শ্রেণিতে পড়ে।
জানা গেছে, প্রবাস ফেরত মজিবুল হক বিভিন্ন ব্যক্তিকে ১২ লাখ টাকা ধার দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা আর ফেরত পাননি। এ অবস্থায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। মজিবুল হক রাগের মাথায় মেয়েদের বলেছিলেন বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে। তখন বড় মেয়ে জানতে চান, বের হয়ে গেলে খুঁজতে যাবেন কিনা? বাবা তখন নাসূচক জবাব দেন। এর পর ছোট তিন বোনকে নিয়ে বের হয়ে যান তাসনিম জাহান (১৭)। এ ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও মেয়েদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না বাবা। অবশেষে শনিবার রাতে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। পুলিশ সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত কোনো সন্ধান পায়নি চার বোনের।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তাসনিমের মামা এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান জানান, মজিবুল হক ১৮ বছর বিদেশে ছিলেন। দেশে ফেরার পর তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে ব্যবসার জন্য ১২ লাখ টাকা দেন। কিন্তু সেসব টাকা তিনি ফেরত পাননি। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে মজিবুল। এ ছাড়া তার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগ রয়েছে। এমন অবস্থায় তিনি বিভিন্ন সময়ে স্ত্রী-সন্তানদের তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বকাবকি। গত ২৫ মে তিনি মেয়েদের বেশি বকাঝকা করেন। একপর্যায়ে তিনি তাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
এরপর মারজাহান ও তাজিন সুলতানা ওইদিন বিকেলে পার্শ্ববর্তী নারুয়া গ্রামে নানার বাড়ি যায়। পরদিন সকালে তাসনিম জাহানও ছোট বোন মাইশাকে নিয়ে নানার বাড়ি আসেন। এরপর তাসনিম মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে তিন বোনকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু মামা বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মাদ্রাসায় গিয়ে জানতে পারেন তারা সেখানে যায়নি। বিভিন্ন আত্মীয়স্বজন ও তাসনিমের বান্ধবীদের বাড়িতে খোঁজ করেও তাদের পাওয়া যায়নি।