অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে শিক্ষকদের পেটালেন চেয়ারম্যান

| আপডেট :  ২৮ মে ২০২২, ০৯:৪২ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৮ মে ২০২২, ০৯:৪২ অপরাহ্ণ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আন্তঃবার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে নিজের ক্যাডার বাহিনী দিয়ে দুই শিক্ষককে পে’টানোর অ’ভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার খান মিঠুর বি’রুদ্ধে। পরে ওই ক্যাডার বাহিনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ ভা’ঙচুর করে শিক্ষকদের ও’পর হা’মলা চালায়।

শনিবার (২৮ মে) সকাল সাড়ে দশটার দিকে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজে’লার খানমরিচ ইউনিয়নের চন্ডিপুর খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনার বিচার চেয়ে উপজে’লা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত,অ’ভিযোগ করেছেন ভু’ক্তভোগী শিক্ষকরা।

লিখিত অ’ভিযোগে ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খানমরিচ ইউনিয়নের ২৮টি বিদ্যালয়কে দুটি ভাগে ভাগ করে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে শনিবার ইউনিয়নের চন্ডিপুর খেলার মাঠে ১৪টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। উপজে’লা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নির্দেশে বাইরের অতিথিদের আমন্ত্রণ না জানিয়ে বিদ্যালয়ের প্রবীণ প্রধান শিক্ষকরা সকাল ৯টায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

এদিকে সকাল সোয়া দশটার দিকে চেয়ারম্যান মনোয়ার খান মিঠু ওই অনুষ্ঠানে এসে দাওয়াত না পাওয়ায় ক্ষো’ভ প্রকাশ করেন। ওই সময় শিক্ষকরা তাকে বসতে বললেও তিনি চলে যান। কিছুক্ষণ পর শিক্ষা কর্মকর্তার পরামর্শে বি’ষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে প্রধান শিক্ষকরা খেলার মাঠের পাশে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে যান। এতে ক্ষি’প্ত হয়ে মনোয়ার খানের নির্দেশে তৌকির, মাসুদ ও আবুল কালামসহ কয়েকজন যুবক বাঁশের লা’ঠি দিয়ে দাসমরিচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে (৫৭) বে’ধড়ক পেটায়। এ সময় অন্য শিক্ষকরা দৌঁড়ে পালিয়ে রক্ষাপান।

পরে সকাল সাড়ে দশটার দিকে তৌকির, মাসুদ ও আবুল কালামসহ প্রায় ১৫ জন যুবক লা’ঠিসো’টা নিয়ে মাঠে থাকা শিক্ষকদের ও’পর হা’মলা চালিয়ে মঞ্চ ভা’ঙচুর করে। ওই হা’মলায় চন্ডিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুনসহ কয়েকজন শিক্ষক আ’হত হন। এরপরপরই মাঠ থেকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা চলে গেলে অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়।

সুলতানপুর বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাসিনুজ্জামান স্বপন বলেন, উপজে’লা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করেই আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম’দিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ ব্যক্তিদের দাওয়াত করা হয়নি। চেয়ারম্যানকে আগামী ৩০ তারিখ প্রতিযোগিতার ফাইনালের দিনে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি শিক্ষকদের ও’পর হা’মলা করে কাজটা ঠিক করেননি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজে’লা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বি’ষয়টি জানার পরেই থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। বি’ষয়টি ঊর্ধ্বতন প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। থানা প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।
এদিকে, ওই হা’মলার ঘটনার বিচার চেয়ে ১৪টি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষে ভু’ক্তভোগী শিক্ষক হাবিবুর রহমান উপজে’লা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অ’ভিযোগ দিয়েছেন।

ভাঙ্গুড়া উপজে’লা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ হাসান খান বলেন, শিক্ষকেদের এমন একটি লিখিত অ’ভিযোগ শনিবার সন্ধ্যায় পেয়েছি। ত’দন্ত করে জ’ড়িতদের বি’রুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর যেহেতু এটি ফৌজদারি অ’পরাধ, সেকারণে পুলিশ প্রশাসনও বি’ষয়টি দেখবে।

অ’ভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার খান মিঠু বলেন, অ’ভিযোগ সঠিক নয়। সম্পূর্ণ মি’থ্যা ও বানোয়াট। অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত করা হয়েছিল। আমি গিয়ে দেখি মঞ্চে শিক্ষকরা বসে আছেন। আমাকে এক কোনায় বসতে দেয়া হয়। এভাবে সেখানে আমাকে অ’পমান করা হয়েছে। তারপরও আমি অনুষ্ঠান থেকে চলে এসে বি’ষয়টি ইউএনও, শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। কোনো হা’মলা, ভা’ঙচুর বা মা’রধরের ঘটনা ঘটেনি। বরং তারা আমাকে অ’পমান ও হেয় করার ঘটনা ধা’মাচা’পা দিতে এই মি’থ্যা ঘটনার সৃষ্টি করেছেন।