সিজার ছাড়াই ১২ ঘণ্টায় ৬ নবজাতকের স্বাভাবিক প্রসবে অনন্য রেকর্ড!

| আপডেট :  ২৮ মে ২০২২, ০৯:০০ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৮ মে ২০২২, ০৯:০০ অপরাহ্ণ

নরমাল ডেলিভারি বা স্বাভাবিক প্রসবে রীতিমত রেকর্ড গড়ছে চট্টগ্রামের হাটহাজারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তিনদিনের ব্যবধানে ওই হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে জন্ম হয়েছে ১২ শিশু। গত ২৫ মে রাত থেকে ২৬ মে ভোর পর্যন্ত নরমাল ডেলিভারি হয় ৬টি। এরপর শনিবার (২৮ মে) জন্ম হয়েছে আরও ৬ শিশুর। এরআগে ১১ মে ১২ ঘণ্টায় জন্ম নেয় ৯ শিশু। যাদের সবাই স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে পৃথিবীর আলো দেখেছে।

এটাকে খুব ইতিবাচক উল্লেখ করে স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যেখানে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ানের মাধ্যমে বাচ্চা জন্মদানের হার বাড়ছে, সেখানে এটা ভালো দিক। এতে করে নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি যেমন নিশ্চিত হচ্ছে, তেমনি সাশ্রয় হচ্ছে খরচও।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুরজিত দত্ত জানান, প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ প্রসব নিয়ে বরাবরই উদ্বেগে থাকেন। বিশেষ করে খরচ নিয়ে। তাই, মানুষকে নিরাপদ মাতৃত্ব বা নিরাপদ স্বাস্থ্যের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে এই হাসপাতালে বরাবরই জোর দেয়া হয় নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে। তাই এই হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির হার বাড়ছে।

পরিসংখ্যানে জানা গেছে, গত বছর হাটহাজারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ১ হাজার ২০০। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত এ সংখ্যা প্রায় ৬০০। যা চট্টগ্রামের অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্ষেত্রে বেশি বলে জানান স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

ডা. সুরজিত আরও জানান, বেশি জটিল না হলে এই হাসপাতালে কোনো সিজারিয়ান হয় না। কোনো প্রসূতি আসলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয় নরমাল ডেলিভারির। তাই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা সেদিকে বেশি নজর রাখেন। স্বাভাবিক প্রসবের ব্যাপারে প্রচারণা ও সচেতনতা বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন ডা. সুরজিত।

কেননা, প্রসবের ব্যাপারে এখনও গ্রামে নানাধরনের কুসংস্কারের পাশাপাশি ভীতি আছে। পাশাপাশি সিজারিয়ান নিয়েও মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা আছে। সবাই চেষ্টা করলে অন্তত সরকারি হাসপাতালগুলোতে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব বলে জানান চিকিৎসকরা। এক্ষেত্রে উদাহরণ হতে পারে হাটহাজারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ক্রমাগত নরমাল ডেলিভারির সংখ্যাবৃদ্ধি।

জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে একেকটি সিজারিয়ানের পেছনে খরচ পড়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার। ক্ষেত্রবিশেষে তা আরও বেশি। এতে এমনও অভিযোগ আছে, প্রয়োজন ছাড়াই সিজারিয়ানের মাধ্যমে বাচ্চা জন্মদানের। নরমাল ডেলিভারির সুযোগ থাকলেও তা হচ্ছে সিজারিয়ানের মাধ্যমে।

বেসরকারি সংস্থার সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে শিশু জন্মদানের ৭৫ শতাংশই সিজারিয়ান। এতে নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে বলেও উল্লেখ করা হয় জরিপে।