প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের হাতে আলাদীনের চেরাগ, বাড়ি গাড়িসহ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি

| আপডেট :  ২৪ মে ২০২২, ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৪ মে ২০২২, ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ

ছিলেন স্কুলশিক্ষক। সেখান থেকে প্রশ্নফাঁ’স চ’ক্রে জড়িয়ে কয়েক বছরের ব্যবধানে বনে যান কোটিপতি। রয়েছে আলিশান বাড়ি। আছে ব্যক্তিগত গাড়ি। সম্প্রতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁ’স চ’ক্রের সন্ধান পেয়েছে র‌্যা’ব। চ’ক্রের মূলহোতাসহ একাধিক সদস্যকে গ্রে’প্তার শেষে জি’জ্ঞাসাবাদে বেড়িয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্র জানায়, চ’ক্রের মূলহোতা মো. ইকবাল হোসেন।

তিনি ২০০৮ সালে সিরাজগঞ্জের একটি স’রকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। নিজ এলাকায় শিক্ষকতা করার সময় ২০১৫ সালে একই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত স’রকারি কর্মচারী আলতাফ হোসেনের সঙ্গে পরিচয় হয়। আলতাফের কাছ থেকেই প্রশ্নফাঁ’সের প্র’তারণার হাতেখড়ি হয় ইকবালের আলতাফ আগে থেকেই এই প্র’তারণার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও ক’রোনার সময় তিনি অ’সুস্থ হয়ে মা’রা যান। আলতাফের মৃ’ত্যুর পরে ইকবাল হোসেন প্রশ্নফাঁ’স চ’ক্রটি পরিচালনার দায়িত্ব পান। ইকবালের নেতৃত্বে চ’ক্রটি স’রকারি-বেস’রকারিসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার আগে চুক্তিভিত্তিক প্রশ্ন ফাঁ’স করে প্রার্থীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

ত’দন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁ’সে অংশ নেয় চ’ক্রটি। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইকবাল হোসেনের নিজ এলাকায় রয়েছে নিজস্ব চারতলা বাড়ি, গাড়িসহ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। ইকবালসহ চ’ক্রের চার সদস্য বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে প্র’তারণার কাজ করতো।

চ’ক্রটি জানায়, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন উপায়ে সারা দেশে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার আগে প্রার্থীদের প্রথমে খুঁজে বের করে। এরপর প্রতিটি পরীক্ষার্থীর বিপরীতে ৯ থেকে ১৫ লাখ এবং কখনো তার বেশি টাকার চুক্তি করতো। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার আগে প্রার্থীদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত নিতেন।

পরবর্তীতে চাকরি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে তারা টাকা নেয়। প্র’তারণার অংশ হিসেবে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে তারা। যার একটি অংশ পরীক্ষার্থীর কাছে বিশেষভাবে রাখা হয় আরেক অংশে থাকে গো’পন কলার। যার মাধ্যমে কৌশলে উত্তরপত্র পাঠিয়ে দেয় চ’ক্রটি। এ সময় পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্র পাওয়ার পরপরই কৌশলে ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চ’ক্রের কাছে পাঠায়। প্রশ্নপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সমাধান করে চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের কাছে বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে উত্তরপত্র সরবরাহ করে থাকে।

প্রশ্নফাঁ’স চ’ক্রের অন্যতম সহযোগী রমিজের সঙ্গে গত দুই বছর আগে পরিচয় ইকবালের। সে সময় রমিজ হ’’ত্যা মা’মলাসহ পারিবারিক ও আর্থিক সং’কটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছিলেন। সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে মূলহোতা ইকবাল অর্থের প্রলোভনে চ’ক্রের সদস্য করে নেয় রমিজকে। চ’ক্রের আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম একটি প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করার সুবাদে বিভিন্ন জে’লা থেকে প্রার্থী সংগ্রহ এবং মধ্যস্থতার কাজটি তিনিই করতেন।

এ বি’ষয়ে র?্যাপিড অ্যা’কশন ব্যা’টালিয়নের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় এই প্রশ্নফাঁ’স চ’ক্রটি তাদের চুক্তিবদ্ধ একাধিক শিক্ষার্থীকে ডিজিটাল ডিভাইসসহ বিভিন্ন উপায়ে চাকরির উত্তরপত্র সরবরাহ করে। চ’ক্রটি দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নফাঁ’স করে কোটি কোটি টাকা আ’ত্মসাৎ করেছে। প্রশ্নফাঁ’স চ’ক্রের এই সদস্যদের সঙ্গে আরও যারা যুক্ত আছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে কাজ করছে আইনশৃৃঙ্খলা বাহিনী।