চটপটি-ফুচকা বিক্রিতে ইসমাইলের মাসে আয় ৬০ হাজার টাকা

| আপডেট :  ২২ মে ২০২২, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২২ মে ২০২২, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ

বেকার না ঘুরে কোনো কাজকে ছোট না ভেবে পরিশ্রম শুরু করলে সফলতা আসবেই। আর তেমনটি করে দেখাচ্ছেন চাঁদপুর শহরের হাসানআলী মাঠে ভ্রাম্যমাণ চটপটি-ফুচকা বিক্রেতা মো. ইসমাইল হোসেন। তিনি সব খরচ বাদ দিয়ে চটপটি-ফুচকা বিক্রি করে প্রতি মাসে আয় করছেন প্রায় ৬০ হাজার টাকা। এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমার যখন ১৭ বছর বয়স। তখন পারিবারিক অভাব অনটনে ঢাকায় কাজ খুঁজতে যাই। পরিচিত এক মামার সঙ্গে পরিচয়ের পর ঢাকার নিউ মার্কেটে মামার সঙ্গে থেকে টানা ৬ বছর চটপটি-ফুচকা বিক্রি করেছি। এরপর ২০১৪ সালে চাঁদপুরে ফিরে এই হাসানআলীর মাঠে ভ্রাম্যমাণভাবে ‌‘অল ফুচকা অ্যান্ড চটপটি হাউজ’ নামের একটি ভ্যান তৈরি করি। এটায় করে নিজেই এরপর চটপটি ফুচকা বিক্রি শুরু করে এখন মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা আয় করে জীবিকা নির্বাহ করছি।’

মো. ইসমাইল হোসেনের বাবা ইব্রাহীম সৈয়াল এবং মা আনোয়ারা বেগম। তারা শরিয়তপুর জেলার বাসিন্দা। ইসমাইল হোসেন বাবা-মায়ের বড় সন্তান। তিনি বর্তমানে চাঁদপুরে থেকে এ ব্যবসা করছেন। বাবা-মায়ের জন্যও পাঠাচ্ছেন অর্থ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মো. ইসমাইল হোসেনের চটপটি ফুচকা বিক্রির আয় রোজগার ভালো শুনে হাসানআলীর মাঠে এখন সফিক, আনোয়ার, মনির হোসেন, শরিফ ও প্রদীপ নামের আরও ৫ জন নিয়মিত প্রতিযোগিতা দিয়েই চটপটি ফুচকা বিক্রি করছেন। প্রত্যেকেই নিজ নিজ দোকানের সামনে ২৫/৩০টি প্লাস্টিকের চেয়ার বসিয়েছেন। তবে এতে একটুও যেন মনে কষ্ট নেই বলে জানিয়েছেন ওই মাঠটিতে সর্ব প্রথম চটপটি ফুচকার ব্যবসা শুরু করে মাতিয়ে রাখা মো. ইসমাইল হোসেনের।

ইসমাইল হোসেন বলেন, আমার ব্যবসার স্লোগান হচ্ছে ‌‘কথায় নয় স্বাদে পরিচয়’। প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই হাসানআলীর মাঠে চটপটি ফুচকা বিক্রি করে চলেছি। এখানে প্রতি প্লেট ফুচকা ৪০ টাকা, চটপটি ৪০ টাকা, ভেলপুরি ৪০ টাকা এবং দই ফুচকার প্লেট ৮০ টাকা বিক্রি করছি এবং পার্সেলেরও ব্যবস্থা রেখেছি।

‘আমার এই ছোট্ট আয় থেকে এই অল ফুচকা অ্যান্ড চটপটি হাউজ’ নামে বড়স্টেশনেও আরও একটি চটপটি ফুচকার দোকান চালু করেছি। দুই দোকানে বর্তমানে ৬ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে দিনে কমপক্ষে ২ হাজার টাকা আমার আয় হচ্ছে। এই আয় দিয়েই পুরানবাজারের মমিনবাগে ২ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বাসা ভাড়া করে জীবন কাটাচ্ছি। যদিও আমরা পুরানবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা, বলেন তিনি।

বেকার যুবক ও তরুণদের উদ্দেশে মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ফুটপাতের ব্যবসাকে ছোট করে না দেখে আমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। তাই এই চটপটি ফুচকা বিক্রির পেশায় স্বল্প পুঁজিতে অধিক লাভ করতে যে কেউই আসতে পারেন। মূল কথা হচ্ছে পরিশ্রম করলে আল্লাহ কাউকে বেজার করেন না। আমি সবার কাছে আমার চটপটি ফুচকার ব্যবসা এগিয়ে নিতে দোয়া কামনা করছি।