‘তুই শিবির করিস’ বলে কলেজ অধ্যক্ষকে চ’ড়-থা’প্পড় এমপির

| আপডেট :  ২০ মে ২০২২, ১১:৪৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২০ মে ২০২২, ১১:৪৫ অপরাহ্ণ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ স’রকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজের দুই সহকারী অধ্যাপককে শা’রীরিকভাবে লা’ঞ্ছিত করার অ’ভিযোগ উঠেছে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সং’সদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের বি’রুদ্ধে।বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দুপুরে কলেজে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অ’ভিযোগ দিয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষ ড. মো. মাহবুবুর রহমান।লা’ঞ্ছনার শি’কার শিক্ষকরা হলেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন।

লিখিত অ’ভিযোগে অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান উল্লেখ করেন, ঐতিহ্যবাহী এ কলেজটি ২০১৪ সাল থেকে একটি কুচ’ক্রী মহলের চ’ক্রান্তের শি’কার। কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত বহিরাগত স’ন্ত্রাসী দ্বারা তিনিসহ প্রতিবা’দী শিক্ষকরা হা’মলার শি’কার হচ্ছেন। ঘটনার দিন দুপুর ১টার দিকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাত বস্তার খাতা চু’রির চাঞ্চল্যকর মা’মলার আ’সামি এবং একজন ননএমপিওভুক্ত জুনিয়র প্রভাষকের নেতৃত্বে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সং’সদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার কলেজে প্রবেশ করেন। তিনি (কলেজ অধ্যক্ষ) জরুরি কাজে ঢাকায় অবস্থান করায় সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক মোশারফ হোসেনের ও’পর দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু সং’সদ সদস্যের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় ৬১ নম্বর সিরিয়ালধারী ননএমপিওভুক্ত প্রভাষক সুব্রত কুমার নন্দী জো’র করে অধ্যক্ষের চেয়ার দ’খল করে শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণ করছেন।

ঘটনার সময় সং’সদ সদস্য আনার কলেজে প্রবেশ করেই খাতা চু’রি মা’মলার সাক্ষী সহকারী অধ্যপক সাজ্জাদ হোসেনকে ‘তুই শিবির করিস’ বলেই চড়-থা’প্পড় মা’রতে থাকেন। এরপর কলেজ থেকে বেরিয়ে যান। এরপর কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ খাতা চু’রি মা’মলার ২ নম্বর আ’সামি আব্দুল মজিদ মন্ডল, সুব্রত কুমার নন্দী, খাতা চু’রি মা’মলার ১ নম্বর আ’সামি রকিবুল ইসলাম মিল্টন, অফিস সহকারী সবুজ ও তাপস সাধুখা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেনকে টেনেহিঁচড়ে তার কক্ষে নিয়ে যান।

অ’ভিযোগে কলেজ অধ্যক্ষ আরও উল্লেখ করেন, ‘সেখানে তাকে (ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন) জি’ম্মি করে তার কাছে রক্ষিত দু’র্নীতি দ’মন কমিশনের একটি ফাইল ছি’নতাই করার চেষ্টা করেন। পরে আমি জানতে পেরে খুলনা ডিআইজিকে ফোন দিলে তিনি স্থানীয় থানা পুলিশকে শিক্ষকদের উ’দ্ধারের নির্দেশ দেন।’

এ বি’ষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান মোবাইলে বলেন, ‘কলেজ থেকে স’রকারি খাতা চু’রির বি’ষয় নিয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশে আ’দালতে একটি চু’রির মা’মলা করা হয়। মা’মলাটি বর্তমান সিআইডি ত’দন্ত করছে। এই মা’মলার সাক্ষী আছেন গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন। এ কারণে তার ও’পর ক্ষুদ্ধ আ’সামিরা।’

লা’ঞ্ছনার শি’কার সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তিনি তার ডিপার্টমেন্টে জরুরি কাজ করছিলেন। এমন সময় তার কক্ষে সং’সদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম হাজির হন। তার সঙ্গে থাকা উপজে’লা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শিবলী নোমানীকে কক্ষের দরজা বন্ধ করতে বলেন। সং’সদ সদস্য তাকে লক্ষ্য করে ‘তুই কলেজে গ্রুপিং করিস, তুই শিবির করিস’ বলেই মুখে চড় মা’রতে থাকেন। একে একে পাঁচ থেকে ছয়টি চড় দিয়ে তাকে শিক্ষক কমন রুমে যেতে বলা হয়।

কা’ন্নাজ’ড়িত কণ্ঠে শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘কথামতো আমি শিক্ষক কমন রুমে গিয়ে বসি। এরপর বাথরুমে যেতে চাই। বাথরুমের দরজা পর্যন্ত চলে যাওয়ার পর ডেকে মোবাইল রেখে যেতে বলা হয়। তারপর মোবাইল রেখে বাথরুমে যাই। বাথরুম থেকে ফিরে এসে আবারও কমন রুমে বসি।’

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দুদকের একটি ফাইল হাতিয়ে নিতে সুব্রত ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল আমাকে অ’পমান-অপদস্ত করেন। কিন্তু এ ধরনের একটি স’রকারি ডকুমেন্ট নিতে হলে কালীগঞ্জ ইউএনওর সম্মতি ছাড়া আমি দিতে পারবো না বলে তাদের সাফ জানিয়ে দিই। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সুবিধা করতে না পেরে তারা আমাকে ছেড়ে দেন।’

অ’ভিযোগের বি’ষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সং’সদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার বলেন, ‘কলেজ গ্রুপিংসহ নানা স’মস্যার কথা জানতে পেরে আমি ওই কলেজে গিয়েছিলাম। স’মস্যাগুলো মিটমাট করার জন্য একটু কড়া ভাষায় কথা বলেছি। তবে কাউকে অ’পমান-অ’পদস্থ করা হয়নি। তারা মি’থ্যা অ’ভিযোগ দিয়েছেন।’ সূত্রঃ জাগো নিউজ