সন্তানরা পারেনি, ঢাবির ভর্তিযুদ্ধে ৫৫ বছরের বাবা

| আপডেট :  ২০ মে ২০২২, ০৮:৩৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২০ মে ২০২২, ০৮:৩৩ অপরাহ্ণ

উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করে দেশের ‘সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ’ হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পড়ার চেষ্টা থাকে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর। অভিভাবকরাও আশায় থাকেন তাদের সন্তান ঢাবিতে চান্স পেয়ে মুখ উজ্জ্বল করবেন।তেমনি নিজের তিন সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন বেলায়েত শেখ। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি তার।স্বপ্ন পূরণে এবার নিজেই ঢাবির ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন অভিভাবক বেলায়েত শেখ। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি, যা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

সন্তানদের ওপর অভিমান করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সন্তানদের নিয়ে অনেক প্রত্যাশা ছিল। তারা পূরণ করতে পারেনি। এজন্য নিজেই ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। একই সঙ্গে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যেতে চাই, শিক্ষার কোনো বয়স নেই। যে কেউ চেষ্টা করলে সফল হতে পারে।

বেলায়েতের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুরে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভূক্ত ঘ ইউনিটে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন তিনি। আগামী ১১ জুন বেলা ১১টায় এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

নিজের পরিবারের অবস্থা জানিয়ে বেলায়েত বলেন, আমার সন্তানদের মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল। ভেবেছিলাম তারা ভালোমতো পড়াশুনা করবে। ঢাবিতে চান্স পাবে, প্রতিষ্ঠিত হবে। দুই ছেলে ও মেয়ের কেউ সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। বড় ছেলে এখন ব্যবসা করে। ছোট ছেলে কলেজে পড়ছে।

৫৫ বছর বয়সে কিভাবে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ১৯৮৩ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। বাবা অসুস্থ থাকায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পরিনি। ২০১৭ সালে আবার নবম শ্রেণীতে ভর্তি হই। ২০১৯ সালে ঢাকার দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা থেকে ৪.৪৩ ও ২০২১ সালে মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ৪.৫৮ নিয়ে এইচএসসি পাস করি। ঢাবি ভর্তিতে শর্ত পূরণ ‍করায় আবেদন করি।

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়ে বেলায়েত বলেন, আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে এই বয়সে মুখস্থ করা কঠিন। আপনারা সবাই দোয়া করলে আমি সফল হবো। সুযোগ পেলে সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ার আগ্রহ রয়েছে তার।এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকে বেলায়েতকে শুভকামনা জানিয়েছেন। তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি প্রশংসা করছেন তারা।