বিমানের বিকল্প ইঞ্জিনের থিওরি আবিষ্কার করলেন নারায়ণগঞ্জের রায়হান

| আপডেট :  ১২ মে ২০২২, ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১২ মে ২০২২, ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ

আকাশপথে উড়ন্ত অবস্থায় বিকল হয়ে যাওয়া বিমানের বিকল্প ইঞ্জিন থিওরি আবিষ্কার করেছেন কাজী জহির রায়হান। তার দাবি, আর্থিক যোগান দিতে পারলে সেই থিওরির বাস্তব রূপ দিতে পারবেন। এ ইঞ্জিন তৈরিতে ৫২ জন টেকনিশিয়ান নিয়ে তার দুই মাস (৬০ দিন) সময় লাগবে। ইঞ্জিনটি শুধু বিকল হয়ে যাওয়া বিমান রক্ষায় কাজ করবে না মৃত্যুর হাত রক্ষা করবে যাত্রীদের।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা জহির রায়হান। ছোটকাল থেকেই কারিগরি বিভিন্ন কাজের প্রতি আগ্রহ ছিল তার। ঢাকা কলেজে অনার্সে পড়াকালীন সময়ে একটি বিমান দুর্ঘটনার খবর পান তিনি। সে দুর্ঘটনায় অনেক মানুষ মারা যায়। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলে জহির রায়হানকে। সে থেকেই চিন্তা থেকে বিকল হয়ে যাওয়া বিমানের বিকল্প ইঞ্জিনি তৈরি করা। শুরু হয় গবেষণা।

কাজী জহির রায়হান বলেন, ২০০৫ সালে ঢাকা কলেজে পড়াকালীন সময় থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের ২১ তারিখ পর্যন্ত গভীর গবেষণা করি। দীর্ঘ ১৫ বছর পর বিকল্প ইঞ্জিন আবিষ্কার করতে সক্ষম হই। আকাশপথে বিমানটি বিকল হয়ে পড়লে পাইলট বিকল্প এ ইঞ্জিন ব্যবহার করে পাশের এয়ারপোর্ট বা কোনো বিশেষ স্থানে নিরাপদে অবতরণ করতে পারবেন।

তিনি বলেন, বিমানের এ বিকল্প ইঞ্জিনটি তৈরি করতে ১৪১টি বিশেষ যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হবে। যন্ত্রগুলো বাংলাদেশ, ভারত ও চীন থেকে সংগ্রহ করা যাবে। ২৮০-৩০০ আসনের বিমানের ইঞ্জিনটি তৈরি করতে প্রায় ৩২ লাখ টাকা খরচ হবে। এ ইঞ্জনের মাধ্যমে জীবন রক্ষার পাশাপাশি সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় সম্ভব হবে।

জহির রায়হান বলেন, সরকারিভাবে ইঞ্জিন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলে আমি যন্ত্রাংশগুলোর তালিকা দিয়ে দিবো। সেই থিওরিও তাদের দিয়ে দিবো। যদি আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে ৫২ জনবল নিয়ে দুই মাসের মধ্যে তৈরি করে দিতে পারবো।

তিনি বলেন, বেসরকারি উদ্যোগেও আমি রাজি। মাত্র ৩২ লাখ টাকা খরচ করে কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারবে। আমি চাই আমার এ থিওরি কাজে লাগিয়ে দেশবাসী উপকৃত হ হোক। বিশ্বব্যপী দেশের সুনাম ছড়িয়ে পড়ুক।

এ ইঞ্জিন থিওরি আবিষ্কার করতে গিয়ে অনেক কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে বলে জানান জহির রায়হান। পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব সবাই নানান সময় তিরস্কার করেছেন। কেউ কেউ পাগল হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন। অনেক সময় পরিবারের সদস্যরাও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।

জহিরের বাবা কবির হোসাইন বলেন, ছোটবেলা থেকে নানা কারিগরি কাজের প্রতি আগ্রহ ছিল ছেলেটার। ইচ্ছা ছিল উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ পাঠাবো। সব প্রক্রিয়া সম্পন্নও হয়েছিল। কিন্তু দালালের খপ্পরে পরে শেষ পর্যন্ত যাওয়া হয়নি। পরে ছেলেটার মন ভেঙে যায়। এখন সারাদিন এ গবেষণা নিয়েই ব্যস্ত থাকে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিফাত ফেরদৌস বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। আমার সঙ্গে কেউ দেখাও করেনি। অনেকেই এ ধরনের আবিষ্কারের কথা বলেন। কিন্তু বাস্তবে সেটা কার্যকর হয় না। এর জন্য আগে টেকনিকেল পার্সনের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, বিমানের বিষয়টি আরও সেনসিটিভ। এখানে অনেকগুলো অনুমতির বিষয় রয়েছে। এরকম সেনসিটিভ ইস্যু নিয়ে আমরা আগালাম দেখা গেলো পরে সেটা সফল হলো না। তাহলে সবার জন্যই বিষয়টি বিব্রতকর হবে।