ব্যাগ ভর্তি টাকা ফেরত দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন পুলিশ কর্মকর্তা

| আপডেট :  ৯ মে ২০২২, ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৯ মে ২০২২, ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

সোশ্যাল মিডিয়া: ব্যাগ ভর্তি টাকা ফেরত দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের শিক্ষানবিস উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহ আব্দুল্লাহ আল মারুফ। ঘটনা ২০ রমজানের। দিনটি ছিল শুক্রবার (২২ এপ্রিল)।

কাজ শেষে পুলিশ লাইনস থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ফিরছিলেন মারুফ। এসময় অটোরিকশার মধ্যে ব্যাগ ভর্তি টাকা পান মারুফ। ব্যগটি প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দিতে ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করেন তিনি। এই ঘটনায় প্রশংসায় ভাসছেন পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ।

ব্যাগে থাকা ৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা ফেরত পেয়ে খুশি ব্যবসায়ী মো. এরশাদ হোসেন। তিনি রাজধানীর ইসলামপুরের রয়েল টাওয়ারের রুপসী বাংলার স্বত্বাধিকারী। তিনি ফরিদপুর জেলা সদরের মুরারীদহ এলাকার মো. ইসমাইল শেখের ছেলে। টাকা পাওয়ার বিষয়ে রোববার (০৮ মে) রাতে মুঠোফোনে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা মারুফকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ব্যবসায়ী।

পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ ও ব্যবসায়ী মো. এরশাদ হোসেন জানান, ২০ রোজার দিন সব কাজ শেষে মারুফ পুলিশ লাইন্স থেকে রামগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশে শহরের উত্তর তেমুহনী সিএনজি স্টেশনে আসেন। এদিকে শহরের চকবাজারের কয়েকটি দোকান থেকে বকেয়া টাকা নিয়ে এরশাদও একই স্থানে আসেন। উত্তর স্টেশন থেকে সিএনজিযোগে রামগঞ্জ যেতে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় লাগে। মারুফ ব্যবসায়ীর সঙ্গে ভাগাভাগি করে ভাড়া দিয়ে সিএনজিটি রিজার্ভ নিতে চেয়েছিলেন। সিএনজি ভাড়া ছিল ২৫০ টাকা। এতে একজনের ভাগে পড়ে ১২৫ টাকা। কিন্তু ব্যবসায়ী কোনোভাবেই ১০০ টাকার বেশি দিতে রাজি হননি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

অন্যদিকে ইফতারের সময়ও ঘনিয়ে আসছিল। এতে বাড়তি টাকার কথা চিন্তা না করে মারুফ ব্যবসায়ীর সঙ্গে একই সিএনজিতে রওনা দেন। ইফতারের আগ মুহূর্তে রামগঞ্জ পৌর শহরের ট্রাফিক বক্স এলাকায় গিয়ে ব্যাগটা রেখেই এরশাদ সিএনজি থেকে নেমে যান। ব্যাগটা দেখে সন্দেহ হওয়ায় মারুফ নিজের কাছে ব্যাগটি রাখেন। তবে সিএনজি চালক অন্য কারও ব্যাগ বলে দাবি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু চালকের কথা সন্দেহজনক ছিল।

ইফতারের সময় হয়ে যাওয়ায় ট্রাফিক বক্সের পাশে এক বন্ধুর দোকানে মারুফ ইফতার করেন। তার ধারণা ছিল, নিশ্চয়ই ব্যাগটি খুঁজতে ব্যবসায়ী আসবেন। প্রায় ৪৫ মিনিট পর ব্যবসায়ী আসেন। তাকে দেখতে পেয়েই ছুটে যান ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তাসহ মারুফ। সবার সামনে ব্যাগটি ব্যবসায়ী ফিরিয়ে দেন তিনি।

ব্যবসায়ী মো. এরাশাদ হোসেন বলেন, মারুফ স্যার খুব সৎ লোক। টাকার ব্যাগ পেয়ে আমার জন্য প্রায় ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করেছেন। আমি সিএনজি স্টেশনে টাকা খুঁজতে আসতেই দূর থেকে দেখে কাছে এসে টাকার ব্যাগ ফিরিয়ে দিয়েছেন। ব্যাগে কি ছিল হয়তো মারুফ স্যার জানতেন না। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি তাকে মনে রাখব। তাকে কখনই ভুলব না।

ঘটনাটি কাউকে জানানোর ইচ্ছা ছিলনা মারুফের। সম্প্রতি মারুফ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত বাদশা নামে তার এক বন্ধুকে বিষয়টি জানিয়েছিল। পরবর্তীতে বাদশা ঘটনাটি তার ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করেন ৭মে। এরপর ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়।