এক পায়ে দাড়িয়েই পুরো তারাবীর নামাজ আদায় করছেন বাবু

| আপডেট :  ২৫ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩০ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৫ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩০ অপরাহ্ণ

নামাজের প্রতি বাবু আত্তারীর গভীর ভালোবাসার। স্বপ্নে প্রিয় নবীজির দিদার পাওয়ার জন্য আজও প্রতি নামাজে সিজদায় কাঁদে সে। এক পায়ে ভর করে দীর্ঘ নামাজে কষ্ট হলেও মনে প্রশান্তি পায় বাবু। কারন তার চেয়ে ভালো ভালো মানুষ চেয়ারে বসে নামাজ পড়ে অথচ সে এক পায়ে দাড়িয়ে আদায় করছে নামাজ।

একটি পা নেই। কিন্তু নামাজ আদায় করতে হবে তার। এ জন্য থেমে নেই অদম্য ধৈর্যশীল বাবু আত্তারী। ঠেংগুতে ভর করে প্রতিদিন যায় বাড়ির পার্শ্ববর্তী চিনি মসজিদে। আর এক পায়ে দাড়িয়েই আদায় করে ২০ রাকাত তারাবীর নামাজ। গোটা মাসে একদিনও তারাবীর নামাজ কাজা হয় না তার। শুধু তারাবীর নামাজ নয়, সে এক পায়ে দাঁড়িয়েই প্রতিদিন আদায় করেন জামায়াতের সাথে ৫ ওয়াক্তের নামাজ। শারিরিক প্রতিবন্ধকতাও হার মেনেছে বাবুর প্রবল ধৈর্য্য আর ইচ্ছাশক্তির কাছে।

কথা বলছিলাম নীলফামারীর সৈয়দপুরের ইসলামবাগ মহল্লার বাবু আত্তারীর (৩২)। সোমবার (২৫ এপ্রিল) ফজরের নামাজের সময় মসজিদ প্রাঙ্গনে বাবু জানায়, ২০০৯ সালে ট্রেন থেকে পড়ে একটি পা গোড়া থেকে হারায় সে। আগে থেকে নামাজ প্রেমী বাবু। পা হারানোর পরও বিন্দুমাত্র মনোবোল হারায়নি সে। এখনো এক পায়েই দাড়িয়েই সে আদায় করে তারাবী আর ৫ ওয়াক্তের নামাজ। এজন্য প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত ও তারাবির নামাজের ঠেংগুয়াতে ভর করে সৈয়দপুরের ঐতিহাসিক চিনি মসজিদে আসে বাবু।

বাবু আরও জানায়, এক সময় কাপড়ের হকারী করে দিনমজুর বাবাকে সংসার চালাতে সহায়তা করতো বাবু। ৪ ভাই ১ বোনের মধ্যে বাবু ৩য়। এখন বাবা নেই। মারা গেছেন অনেক আগে। বাবুও এক পা হারিয়ে আগের মত আর কাপড়ের হকারী করতে পারে না। তবুও এক পা নিয়েই টুকটাক কাজ করে সংসারে সহায়তা করে থাকে। বর্তমানে বাসায় এক পা দিয়েই কোনমত দর্জির কাজ করে পরিবারকে সহায়তা করে যাচ্ছে সে। কিন্তু বন্ধ নেই নামাজ, রোজা ও তারাবী।

সৈয়দপুর চিনি মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ শাহিদ রেজভী জানান, আমি যখন থেকে এই মসজিদে এসেছি তখন থেকে বাবুকে দেখে আসছি। কোন ওয়াক্তেরই নামাজ তাঁর কাজা হয় না। বিগত কয়েক বছর থেকে সে এক পায়ে ভর করেই দীর্ঘ তারাবীর নামাজ আদায় করে আসছে। নিয়মিত মুসল্লি সে এই চিনি মসজিদের।

একই মসজিদের মুসল্লী ও বাবু আত্তারীর বন্ধু হায়দার এমাদী জানান, আমরা ছোট কাল থেকে একসাথে খেলাধুলা করে আসছি। খুবই বিনয়ী আর অতিভদ্র বাবু। তার একটি পা নেই তবুও সে এক পায়েই সব নামাজ আদায় করে থাকে আজও।