বৃদ্ধাশ্রমে মমতার ইফতার

| আপডেট :  ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

সারাদেশ: সাধারণত শহরের বৃদ্ধাশ্রম গুলোকে নিষ্ঠুর জায়গায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ বৃদ্ধাশ্রমের অনেকের মাঝে থেকেও এক অন্যরকম নিঃসঙ্গ জীবন সেখানে অতিবাহিত করতে হয়। গত শনিবার ঢাকার দক্ষিণ পাইকপাড়ার ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রম এ গিয়ে অনেকটা পারিবারিক পরিবেশ দেখা গিয়েছে। আশ্রমের বয়স্করা এবং সেবা কর্মীরা একে অপরকে পিতা পুত্র হিসেবে সম্বোধন করছেন।

বয়সের ভারে শরীরে নানা রকম রোগের বাসা বাঁধে। আগের মত জোর থাকে না শরীরে। তাই সবার পক্ষে রোজা থাকা সম্ভব হয়না। রোজা নেই তো কি হয়েছে ইফতারি করতে তো আর বাধা নেই। আসরের পর থেকেই শুরু হয় ইফতারের প্রস্তুতি। ২১০ জন মানুষের ইফতারির আয়োজন ছিল গতকাল এখানে। চিড়া, দই, কলা, দুধ, শরবত, খেজুর ও অন্যান্য মৌসুমি ফল দিয়ে সাজানো হয় ইফতারির থালা। ভাজাপোড়া বা বাজারের অন্যান্য মুখরোচক খাবার বয়স্ক মানুষের হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে বলেই এই পদগুলো বেছে নেওয়া।

আশ্রমের পরিচালক মিল্টন সমাদ্দার বলেন, সবাই বয়স্ক এবং কোনো না কোনো অসুখে ভুগছেন। তাই খাবার-দাবারের প্রতি বাড়তি নজর রাখতে হয়। মাগরিবের দশ-পনের মিনিট আগে ইফতারির থালা প্রতিটি রুমে পৌঁছে দেওয়া হয়।

মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী দীপু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর সনদ লাভ করে প্রকৌশলী হিসেবে একটি বেসরকারি কম্পানিতে চাকরি করতেন। শেষ বয়সে এসে সড়ক দুর্ঘটনায় পড়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। চিকিৎসার এক পর্যায়ে পরিবারের লোকজন তাঁকে হাসপাতালে ফেলে রেখে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছুদিন পর ছাড়পত্র দিয়ে বিদায় করে দিলে তাঁর ঠাঁই হয় পথে। অবশ অবস্থায় গুলশানের রাস্তা থেকে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে আশ্রম কর্তৃপক্ষ। এখন হাঁটাচলা করতে পারেন, কথাও বলতে পারেন।

পরিবারের সঙ্গে বসে ইফতার করার কোনো স্মৃতির কথা বলতে চাইলেন না এই প্রকৌশলী।এই আশ্রমের শুরুটা হয়েছিল কোন রকম পরিকল্পনা ছাড়াই। ২০১৪ সালে একজন মানুষকে রাস্তা থেকে তুলে আনার মাধ্যমে এই আশ্রমের শুরু।