শ্রুতিমধুর তেলাওয়াতে মুগ্ধ তিন প্রজন্ম, একই মসজিদে ৫০ বছর তারাবি পড়াচ্ছেন 

| আপডেট :  ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০৩:২৬ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০৩:২৬ অপরাহ্ণ

সারাদেশ: অর্ধশত বছর ধরে একটি পেশায় নিয়োজিত থাকা বিশেষ একটি ব্যাপার। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহজিবাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র মসজিদে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে খতম তারাবি পড়াচ্ছেন উপজেলার একতিয়ারপুর গ্রামের হাফেজ মোঃ মাহফুজুর রহমান। এই মহেন্দ্রক্ষণ উদযাপন করা হচ্ছে মহান আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় করার মাধ্যমে। 

অর্ধশত বছর পূর্তি উপলক্ষে মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান তাহাজ্জুদের নামাজে ১০ খতম কোরআন তেলাওয়াতের উদ্যোগ নিয়েছেন। হাফেজ মাহফুজুর রহমান স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘আমি ৭-৮ বছর বয়সেই হাফেজ হই। মাধবপুর উপজেলার হরষপুর মাদরাসায় হাফেজ নুরুজ্জামানের কাছে মাত্র ২ বছরে হিফজ সম্পন্ন করি। তখন আমার সাথে যারা ছিল তারা কেউ আমার মত কম বয়সে হাফেজ হতে পারেনি। ৫০ বছর আগে শাহজিবাজার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা খতম তারাবি পড়ানোর জন্য হাফেজ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে আমাদের মাদ্রাসায় আসেন।তখন অল্প কয়েকটি মসজিদে খতম তারাবি পড়ানো হতো। মাত্র নয় বছর বয়সে আমি খতম তারাবি পড়াতে এই মসজিদে আসি।  আগে টিনের মসজিদ ছিল এখন সেখানে পাকা ভবন হয়েছে। 

হাফেজ মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘একটানা ৪৮ বৎসর আমি একাই নামাজ পড়িয়েছি। এখনো একাই নামাজ পড়াতে সক্ষম। দুই বছর যাবৎ আমার সঙ্গে আমার এক ছাত্রও নামাজ পড়াচ্ছেন। টানা ৫০ বছর তারাবি পড়াতে গিয়ে অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। অনেক বড় বড় কর্মকর্তা এখানে নামাজ পড়েছেন। আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে, এই মসজিদে আমি তিন প্রজন্মকে তিলাওয়াত শোনাতে পেরেছি। তাজুল ইসলাম নামে এক মুসল্লি শুরুর দিকে এখানে তারাবি পড়তেন। পরে তাঁর ছেলে নজরুল ইসলামও এখানে নিয়মিত তারাবি পড়েন। এখন নজরুল ইসলামের ছেলে ফুয়াদও আসে তারাবিতে। তিন প্রজন্মকে মুসল্লি পাওয়া অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয়। এখানকার মানুষ ও মুসল্লিরা আমাকে অনেক সম্মান করে। তাই আমি বারবার এখানে চলে আসি তারাবির নামাজ পড়ানোর জন্য। যত দিন তারা আমাকে বলবে, আল্লাহ আমাকে সুস্থ রাখলে এই মসজিদেই তারাবি পড়াব। অনেক বড় বড় মসজিদে আমাকে তারাবি পড়ানোর জন্য আমন্ত্রণ জানালেও এই মসজিদের প্রতি যে মায়া তার জন্য আমি সব আমন্ত্রণ বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করি। করোনার মহামারিতেও গতম তারাবি অক্ষুণ্ণ রাখতে পারায় আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ‘