চাঞ্চল্যকর তথ্য, চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে হ’ত্যার কারণ জানালেন আসামি আশীষ

| আপডেট :  ৬ এপ্রিল ২০২২, ১০:২০ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৬ এপ্রিল ২০২২, ১০:২০ অপরাহ্ণ

দীর্ঘ ২৪ বছর আগে চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হ’’ত্যা মা’মলার প’লাতক ও অ’ভিযোগপত্রের এক নম্বর আ’সামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রে’ফতার করেছে র‌্যা’ব। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে দশটার দিকে রাজধানীর গুলশানের পিংক সিটি সংলগ্ন ১০৭ রোডের ২৫/বি ‘ফিরোজা গার্ডেন’ থেকে তাকে গ্রে’ফতার করে র‌্যা’ব সদর দপ্তরের গো’য়েন্দা শাখার একটি দল।

প্রাথমিক জি’জ্ঞাসাবাদে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে হ’’ত্যার কারণসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্টতার বি’ষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন আশিষ বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে র‍্যা’ব। জি’জ্ঞাসাবাদে আশিষ রায় চৌধুরী বলেছেন, “১৯৯৬ সালে বনানীর আবেদীন টাওয়ারে আশিষ ও আসাদুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের যৌথ মালিকানায় ট্রা’ম্পস ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানে সন্ধ্যা থেকে ভোররাত পর্যন্ত নানান অসামাজিক কার্যকলাপ হতো। একপর্যায়ে ক্লাবটি আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন ও গ্যাং লিডারদের একটি বিশেষ আখড়ায় পরিণত হয়। আজিজ মোহাম্ম’দ ভাইও সেখানে যেতেন।

ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের চ’ক্রগুলোর সঙ্গে মিটিং করতে এই ক্লাবে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। ঘটনাক্রমে বান্টি ও আশিষের সঙ্গে আজিজ মোহাম্ম’দের সু-সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তখন তিনজন ক্লাব ব্যবহার করে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। বনানী জামে মসজিদের পাশেই ছিল ক্লাবটি। সোহেল চৌধুরী মসজিদ কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবের অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধে বারবার চেষ্টা চা’লিয়ে ব্যর্থ হন। সোহেল চৌধুরীর প্র’তিবাদের কারণে ক্লাব মালিক বান্টি ও আশিষের ব্যবসায়িক স্বার্থে আ’ঘাত আসে।

একই কারণে আজিজ মোহাম্ম’দের স্বার্থেও আ’ঘাত লাগে। ক্লাবটি বন্ধের চেষ্টা করায় বান্টি, আশীষ, আজিজ, তৎকালীন শীর্ষ স’ন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমনের চক্ষুশূলে পরিণত হন সোহেল চৌধুরী। ঘটনার এক পর্যায়ে ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই আজিজের সঙ্গে নায়ক সোহেল চৌধুরীর তর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আজিজ ক্ষু’ব্ধ হয়ে সোহেলের ও’পর প্র’তিশোধ নিতে বান্টি ও আশিষকে অনুরোধ জানান।”

র‍্যা’বের জি’জ্ঞাসাবাদে আশিষ আরও বলেছেন, “জনসমক্ষে আজিজকে অ’পমান করায় সোহেলের ও’পর প্র’তিশোধ নিতে তিনি (আশিষ) ও বান্টি একটি পরিকল্পনা করেন। ক্লাবে ইমনের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। তখন বান্টি, আশিষ ও আজিজ শীর্ষ স’ন্ত্রাসী ইমনকে দিয়ে সোহেলকে হ’’ত্যার প্রস্তাব দেন। ইমন এ প্রস্তাবে রাজি হন। পরে ইমন এ হ’’ত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করেন।”

উল্লেখ্য, বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রা’ম্পস ক্লাবের নিচে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর স’ন্ত্রাসীদের গু’লিতে মা’রা যান সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বা’দী হয়ে রাজধানীর গুলশান থানায় হ’’ত্যা মা’মলাটি দা’য়ের করেন। ত’দন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গো’য়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী এ মা’মলায় ৯ জনের বি’রুদ্ধে আ’দালতে চার্জশিট (অ’ভিযোগপত্র) দাখিল করেন। চার্জশিটে আছে আ’সামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীর নাম।

২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আ’দালত আ’সামিদের বি’রুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন। দুই বছর পর মা’মলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য এই ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ওই সময় এক আ’সামি হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট বিভাগের তৎকালীন বিচারপতি এমএ মতিন ও সৈয়দ রিফাত আহম’দের বেঞ্চ ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর ওই রিট আবেদনে প্রথমে তিন মাসের জন্য নিম্ন আ’দালতে মা’মলাটির কার্যক্রম স্থগিত করেন।

এরপর ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রিটের রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মা’মলাটির নিম্ন আ’দালতের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এরপর গত ২০ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেন ওই মা’মলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২০ মার্চ দিন ধার্য করেন। ওই দিন শুনানি শেষে আ’দালত তিনজনের বি’রুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।