টিপকাণ্ডে পুরুষ নারী হয়ে যাচ্ছে : ব্যারিস্টার সানাউল্লাহ

| আপডেট :  ৪ এপ্রিল ২০২২, ০৯:১৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৪ এপ্রিল ২০২২, ০৯:১৩ অপরাহ্ণ

‘টক অব দ্য কান্ট্রি’-তে পরিণত হয়েছে টিপকাণ্ড। তেজগাঁও কলেজের শিক্ষিকাকে হে’নস্তার প্র’তিবাদে সরব বিভিন্ন মহল। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে টিপ পরা ছবি দিয়ে অন্তর্জালে ঝড় তুলেছেন। শুরু হয়েছে পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা।এ বি’ষয়ে সোমবার (৪ এপ্রিল) রাতে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাসে নিজের অভিমত তুলে ধরেছেন ব্যারিস্টার সানাউল্লাহ নূর সাগর। বি’তর্কি’ত বি’ষয়টির এপিঠ-ওপিঠ নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

`পা’গলের দেশে বসবাস আমার। আমিও পা’গল। আমার দেশটাও পা’গল। থুক্কু! দেশ পা’গল না। দেশের মানুষগুলো পা’গল। ইঞ্জিনিয়ার হয় পুলিশ। ডাক্তার হয় কাস্টমস কর্মকর্তা। উকিল হয় ব্যাংকার। আবার এদিকে বুদ্ধিজীবিরা বুদ্ধি বিক্রি করে রুটির তাগিদে। পার্লামেন্ট কাঁপে টিপ নিয়ে। অথচ রেপ ইস্যুতে সবার মুখে কুলুপ আঁটে। প্যান্টের ও’পর জাঙ্গিয়া পরে সুপারম্যান হওয়ার মতন অবস্থা!

টিপ লয়ে ক’টুক্তি করার অধিকার কারও নাই। ব্যক্তি স্বাধীনতা। মানুষ তার নিজস্ব রুচিতে চলবে। কেউ ক’টুক্তি করলে তার শা’স্তি হবে। খেল খতম। এটা নিয়ে সুবর্ণা আপা পার্লামেন্ট কাঁপালেন। যেন এই রাষ্ট্র নারীর টিপ দেওয়ার অধিকার হরণ করেছে।

কোথাকার কোন পুলিশ ক’টুক্তি করেছে, তার বি’রুদ্ধে হে’নস্তার অ’ভিযোগ দা’য়ের করা হতো। এখন তো বি’ষয়টা যেভাবে দেখানো হলো, তাতে মনে হচ্ছে এই দেশ আফগানিস্তান। এখানে নারীর অধিকার খর্ব করা হয়। নারীরা স্বাধীনভাবে চলতে পারে না। অথচ এই দেশের আইনগুলোও নারীবান্ধব। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তা পুরুষের ও’পর বার’ডেন।

নারী ও শি’শু নি’র্যাতন আইন, যৌ’তুক আইন নারীরা একরকম অ’স্ত্র হিসেবেই ব্যবহার করে। ই’ভটিজিং তো একটা আছেই। আমি বলছি না, এই আইনগুলোর দরকার নেই। বোঝাতে চাচ্ছি, এই দেশে নারীরা সর্বোচ্চ অধিকার এক্সেস করার সুযোগ পায়। পুরুষদের হিং’স্রতা থেকে নারী রক্ষার্থেই এসব আইন।

দেখেন আইন কেমন নারীবান্ধব! একটা মা’রাত্মক অ্যাবসার্ড আইনের কথা বলি। প’রকীয়া করলে নারীর বি’রুদ্ধে কোনো মা’মলা করা যায় না। বরং যে পুরুষ প’রকীয়া করল, তার বি’রুদ্ধে দ’ণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারায় মা’মলা করা হবে। পুরুষটির পাঁচ বছরের সাজা। দুই হাতে তালি বাজে। দোষ হয় এক হাতের।

যাক, আসল কথায় আসি। আমি নারী বিদ্বেষী না। নারীর প্রতি শ্রদ্ধার কোনো কমতি নাই। আমার মা, বউ এবং একমাত্র স’ন্তানের জেন্ডারও নারী। নারীর অধিকার রক্ষা করা, তাদের নিরাপত্তা বিধান করা পুরুষদের অবশ্য কর্তব্য। এখানেও তর্ক শুরু করতে পারে কেউ কেউ। নারীর অধিকার পুরুষ কেন রক্ষা করবে? নারীর অধিকার নারী নিজেই রক্ষা করবে। যুক্তি মেনে নিলাম। কিন্তু যুগ যুগ ধরে মশাই পুরুষরাই নারীদের রক্ষা করে। বায়োলজিক্যালি পুরুষরা শক্তিশালী। প্রাচীন যুগ থেকে তাই হয়ে আসছে। এটা নিয়ে বিতর্ক মানে কুতর্ক।

অন্যদিকে পুরুষরা ইচ্ছেমতো টিপ পরতেছে। এটা নাকি প্র’তিবাদ! প্র’তিবাদ করতে গিয়ে পুরুষ নারী হয়ে যাচ্ছে। আজব ব্যাপার-স্যাপার! ধরেন, নারীর মিন্সট্রুয়েশান নিয়ে কোনো পুরুষ ক’টুক্তি করল। ইনফ্যাক্ট আগে নাকি এমন করত। ওই নারীদের ব্যবহারিক প্যাড নিয়ে পাউরুটি-টাউরুটি বলে ক’টুক্তি করত। এর বিপরীতে আন্দোলন করতে গিয়ে পুরুষরা কি মিন্সট্রুয়েশানের ব্যবস্থা বা প্যাড পরা শুরু করবে? এসব অদ্ভুত আচরণ! এমন প্র’তিবাদে নারীর অধিকার রক্ষা হয় না, বরং খর্ব হয়।

এদেশের নারীবা’দীরা অদ্ভুত ক্যাটাগরির! এদের ন্যারেটিভ কনফিউজিং। কয়েক দিন আগে রাস্তায় নারী গু’লি খেয়ে মরল, নো প্র’তিবাদ। ছোট্ট মেয়ে শি’শু রেপ হয়, নো প্র’তিবাদ। টিপ নিয়ে ক’টুক্তি হলো, মহা প্র’তিবাদ। মানুষের ফ্রিডম অব চয়েজ ন’ষ্ট হলে প্র’তিবাদ তো হবেই। তাই না!

আচ্ছা, নারী হিজাব পরলে দোষ! তখন ফ্রিডম অব চয়েজ সিন্দুকে তালা মে’রে রাখেন। তাই তো! হ্যাঁ, ঠিক। এসব অদ্ভুত প্রা’ণীগুলোই আমাদের দেশের নারীবা’দী। সো কল্ড বুদ্ধিজীবি!’