ভাবি যখন বউ (সিজন ২; প্রথম পর্ব)

| আপডেট :  ২৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০৮:০৯ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০৭:২৪ পূর্বাহ্ণ

-আব্বু, স্কুলের মিস উনাকে আম্মু ডাকতে বলেছেন। গাড়িতে উঠতে উঠতে বলল নুসরাত। আসলে নুসরাতকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য ওদের স্কুলের সামনে গিয়েছিলাম। নুসরাতের স্কুল তো দুপুরে ছুটি হয়। তাই প্রতি দুপুরে আমি অফিস থেকে সোজা নুসরাতের স্কুলে চলে যাই। নুসরাতকে নিয়ে বাসায় গিয়ে লাঞ্চ করি। আসলে অফিসটা আমাদেরই তাই..। কিন্তু, একটু আগে নুসরাত এটা কি বলল? ওর মিস ওকে আম্মু ডাকতে বলেছেন। কে তিনি?

– মামনি, তোমার মিসের নাম কি? – উম, উম.. নীলা হোসেন। নুসরাতের কথায় আমি হকচকিয়ে গেলাম। নীলা!! নুসরাতের মিস। মেয়েটা এখানে শিক্ষকতা
করে। ওর আবার শিক্ষকতা করার শখ জাগল কেনো? ওরা তো বেশ সম্পদশালী। নাকি অন্য নীলা। নাহ, নীলার নামই তো নীলা হোসেন ছিল। ওর বাবার
নাম মেহতাব হোসেন। মেয়েটা এখন কি চায়?

আমার মেয়ের পিছনে কেনো পড়েছে। কয়েক বছর আগে তো আমার সাথে ছলনা করেছিল এখন আমার মেয়ের সাথে মিশে আবার কি করতে চাচ্ছে? – নুসরাত, তোমার আম্মু একজনই ছিল আর একজনই থাকবে। অন্য কাউকে আম্মু ডাকার প্রয়োজন নেই। [রাগী স্বরে বললাম] -আব্বু, কোথায় আছে আমার আম্মু? [নুসরাত]

আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম নুসরাতের প্রশ্নে এখন কি জাবাব দেই? কি করে বলি যে, তোমার আম্মু..। তোমার আম্মুকে তুমি কখনো খুঁজে পাবে না। আর এইটুকু মেয়ের আম্মুর জন্যতো মন কাঁদবেই। কত বয়সই বা ওর। মাত্র ৪ বছর। এখনো প্লে তে পড়ে। আমি নুসরাতের দিকে তাকাল। অ’সহায় দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে
আছে। আমি মেয়েটাকে বুকে আঁকড়ে ধরলাম। – মামনি, আমিই তোমার আব্বু আর আমিই তোমার আম্মু। অন্য কাউকে আর আম্মু ডাকার প্রয়োজন নেই।

– সবার তো আম্মু আব্বু দুজন থাকে। – কিন্তু, আমি একাই তোমার সব। আমি তোমার জন্য কি যথেষ্ট না? নাকি তোমার আম্মু চাই। [কাঁদতে কাঁদতে বললাম] আসলে আমার মেয়েটার ভিতরে ওর আম্মুর প্রতি যে ভালোবাসা সেটা দেখেই আমার কা’ন্না পাচ্ছে। মা ছাড়া কোন স’ন্তানই বা পরিপুর্নভাবে বেড়ে উঠতে পারে। নুসরাত ওর ছোট হাত দুটো দিয়ে আমার চোখের পানি মুছে দিল। – তুমি কেদো না আব্বু। আমার আর কেউ লাগবে না। শুধু তুমি থাকলেই চলবে।

আমি আমার মেয়েটাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরলাম। এইটুকু বয়সে এতোকিছু বুঝে আমার মেয়েটা। – আচ্ছা, এখন বাসায় যাওয়া যাক। তোমার দাদু-দিদা অপেক্ষা করছেন। গিয়ে এক সাথে লাঞ্চ করতে হবে তো। – হুম, তবে আজ কিন্তু লাঞ্চের পর আর তুমি অফিসে যেতে পারবে না। আমার একা একা ভালো লাগে না।
– একা একা কোথায়? তোমার দাদু, দিদা, আঙ্কেল আর ছোট আম্মু তো আছেই। আর তোমার একা একা লাগবে কেনো? আমি তো তোমাকে ঘুম পাড়িয়ে অফিসে যাই। আর এসে দেখি যে তুমি একটু আগে মাত্র উঠলে। তাহলে বি’ষয়টা কি হল….

– না না আজ আর তা হবে না। তুমি আমাকে ঘুম পাড়িয়ে যেতে পারবে না। আজ তুমি আমার পাশেই থাকবে সারাক্ষণ। [নুসরাত] – ওকে, ওকে যাবো না। খুশি তো। নুসরাত হাসল ছোট ছোট দাত বের করে। – হুম, খুব খুশি। – ওকে, তাহলে যাওয়া যাক। – ওক্কে…।

গাড়ি স্টার্ট করে এগোলাম বাসায় যাওয়ার জন্য। মনে মনে একটা প্রশ্ন রয়েই গেল। নীলা কি জানে যে নুসরাত আমার মেয়ে? যদি জানেই বা তাহলে নুসরাতের সাথে মেশার কি দরকার ওর? কি চায় ওও? ভাবতে ভাবতে বাসায় ফিরলাম। গাড়ির দরজা খুলতেই নুসরাত দৌড় দিল। গিয়েই দাদু, দিদার সাথে দুষ্টুমি আরম্ভ করে দিল। আমি আমি শার্টের হাতা উপরে তুলতে তুলতে ঘরে ডুকলাম। আম্মু এগিয়ে আসল, – কিরে এসে গেছিস? – হুম। – যা ফ্রেস হয়ে নিচে আয়।

আমি রুমে গেলাম। ফ্রেস হয়ে শার্ট পালটে নিলাম। ম্যানেজার কে ফোন করে বললাম, অফিসে আর যাবো না। আলমারিতে লাগাতে তখন হঠাৎ একটা ছবির দিকে চোখ পরে। হাত নিলাম মিরা আর আমার। টেবিলে রাখার জন্য ফ্রেমে বাধিয়ে ছিলাম। মিরার মুখের উপর হাত দিয়ে অনুভব করতে লাগ’লাম যেন, মিরা আমার পাশেই আছে। হুম, পাশেই থাকতো যদি না সেদিন ঘটনা টা ঘটত। চলুন তাহলে সেদিনের ঘটনায় ফিরে যাই।

অফিস থেকে ফিরে রুমে ডুকতেই দেখলাম মিরা মন খা’রাপ করে জানালার পাশে বসে আছে। – মিরা। আমার দিকে তাকিয়ে আবার, – হুহ বলে মুখ ঘুরিয়ে নিল। বুঝলাম মিরা রেগে আছে। – কি হয়েছে জানটার? বলে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলাম। কোনো কথা বলছে না। – কি হল কথা বলছো না কেনো? [আমি] – তুমি কি বলেছিলে তোমার মনে আছে? আমি ভাবতে লাগ’লাম কি বলেছিলাম? – কি বলেছিলাম? – আজ না তুমি আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে বলেছিলে। – হ্যা, ঠিকই তো। বলেছিলাম তো। – তাহলে… – তাহলে কি? – তোমার তো মনেই ছিল না যে, আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে। – কি বলো মনে ছিল না মানে। তোমাকে মেসেজ করে না বললাম যেন, তুমি রেডি থাকো। – কি? অবাক হয়ে তাকাল আমার দিকে। – হ্যা। মিরা তড়িঘড়ি মোবাইল চেক করল। মেসেজ অফশনে গিয়ে দেখল আমার মেসেজ। জিহ্বায় কা’মড়ে ধরল।

– সরি, সরি বাবু আমি দেখিনি আর না দেখেই তোমাকে দোষারোপ করছিলাম। বলে আমার গ’লা জরিয়ে ধরল। – হুহ.. [আমি] – রাগ করো না বাবু প্লিজ…
আমি কোনো কথা বললাম না। – প্লিজ কথা তো বলো। মিরা আমার মুখ ওর দিকে ঘুরালো। – প্লিজ…সরি তো । আমি আচমকাই মিরাকে আরো জো’রে টান
মারলাম যার কারনে মিরা ধড়াস করে আমার বুকে এসে সেটে গেল। – এভাবে বললে হবে না। আদর করতে হবে।। – কুত্তা। ছাড়ো কেউ এসে যাবে। আর এক
মেয়ের বাপ হয়েও শয়তানী যায়নি। – উহু। এতো সহজেই তো।আজ ছাড়ছি না আমি। – কাব্য… অ’সহায় দৃষ্টিতে তাকাল আমার দিকে। – নো নো হবে না। কোনোমতেই না। তুমি আমাকে আদর করবে তারপর ছাড়ব। – ওকে ওকে.. মিরা ওর ঠোটঁ আমার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে নিয়ে এলো।

ছোট্র করে চুমু দিল। শুধু ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়াল। আমি আমার ঠোঁট ডুকিয়ে দিলাম মিরার ঠোঁটে। তারপর এর মধুর সময়। মিরা উউ উউ করে ধাক্কাচ্ছে। ছেড়ে দিলাম। জো’রে জো’রে শ্বাস নিচ্ছে। – তুমি না শোধরাবে না। – উঁহু। বউ পাশে থাকলে কেউই শোধরায় না এই অভ্যাসটা। – শয়তান বলে হাসি দিয়ে দৌড় দিল। সেদিনই ছিল আমার মিরার শেষ দিন। মিরা চলে যাচ্ছিল দৌড়ে আমি পিছন থেকে বললাম, (চলবে…)