র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত গর্হিত কাজ: প্রধানমন্ত্রী

| আপডেট :  ২৮ মার্চ ২০২২, ১২:৪২ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৮ মার্চ ২০২২, ১২:৪২ অপরাহ্ণ

আমেরিকাকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা অ’পরাধীদের রক্ষা করে তাদের দেশে স্থান দেয়। আর বিনা অ’পরাধে আমাদের দেশে (র‌্যা’ব সদস্যদের) নি’ষেধাজ্ঞা দেয়। এই নি’ষেধাজ্ঞাকে ‘অত্যন্ত গর্হিত কাজ’ বলেও মনে করেন তিনি।সোমবার (২৮ মার্চ) সকাল ১০টায় কুর্মিটোলায় র‌্যা’ব সদরদপ্তরের শহীদ লে. কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে বিশেষ দরবারে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলা সংস্থার যে কেউ যদি অ’পরাধে জড়িয়ে পড়ে আমরা কিন্তু শা’স্তির ব্যবস্থা করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বি’ষয় হচ্ছে, যারা আমাদের বিনা কারণে বিনাদোষে র‌্যা’বের কয়েকজন সদস্যের বি’রুদ্ধে নি’ষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তাদের দেশে কিন্তু এ ধরনের অ’পরাধ করলে কোনো বাহিনীর বি’রুদ্ধে কোনো রকম শা’স্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। আমি স্পষ্ট বলি, আমেরিকায় ছোট্ট বাচ্চা ছেলে জাস্ট পকে’টে হাত দিয়েছে, তাকে গু’লি করে মারল অথবা পা দিয়ে পাড়া দিয়ে গ’লা চে’পে মে’রে ফে’লে দিল।

সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে অ’পরাধ করলে শা’স্তি দেওয়া হয় না। কিন্তু বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, সেখানে কেউ অ’পরাধ করলে শা’স্তি নিশ্চিত করি। তারপরও দুর্ভাগ্যের বি’ষয় যে যারা হলি আর্টিজানের মতো এ ধরনের অ’ভিযান করে সাফল্য অর্জন করেছে, তাদের বি’রুদ্ধে নি’ষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমাদের এই সাফল্যে এরা দুঃখ পেয়েছে কি না আমি জানি না। তবে বাংলাদেশ যে সাফল্য অর্জন করেছে, সেটাই সত্য। সেখানে এরকম নি’ষেধাজ্ঞা অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, সবচেয়ে দুঃ’খজনক হলো- আমাদের দেশের কিছু মানুষ নানা ধরনের অ’পপ্রচার চা’লায়। তারা কিন্তু অ’পরাধী। কোনো না কোনো কারণে চাকরি হা’রিয়েছে বা দেশ ছেড়েছে। সেখানে আমাদের যু’দ্ধাপরাধীরা যেমন ঠাঁই পেয়েছে, তেমনি জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খু’নিও আমেরিকায় বসবাস করছে। তাকে তারা সেখানকার সিটিজেন করে নিয়েছে। আমরা বারবার তাদের রিকোয়েস্ট করেছি। একের পর এক প্রে’সিডেন্টের কাছে ধর্ণা দিয়ে যাচ্ছি। তারা অ’পরাধীদের রক্ষা করে তাদের দেশে স্থান দেয়। আর বিনা অ’পরাধে আমাদের দেশে নি’ষেধাজ্ঞা দেয়। এটাই যাদের চরিত্র, তাদের বি’ষয়ে আর কী বলবো?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা সব সময় বাংলাদেশের উন্নয়ন। একটাই লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশকে আমরা মুক্তিযু’দ্ধের চেতনায় গড়ে তুলবো। বঙ্গবন্ধু হ’’ত্যার ২১ বছর পরে হলেও বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা শুরু হয়। আজকের এই উন্নয়নে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানসহ র‌্যা’বেরও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কারণ মুক্তিযু’দ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের আইনশৃঙখলা রক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে র‌্যা’বের প্রতিটি সদস্য আন্তরিকতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কর্ম’দক্ষ’তা ও পেশাদারত্ব এই বাহিনীকে ঈর্ষণীয় সাফল্য এনে দিয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ যে এগিয়ে যাচ্ছে, এই ধারাবাহিকতা আমাদের বজায় রাখতে হবে। তার জন্য যে কাজগুলো চলছে- তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো বিশ্বব্যাপী যে জ’ঙ্গিবাদ-স’ন্ত্রাস শুরু হলো। কিছু এলাকায় এমন কিছু ঘটনা ঘটত জলদস্যু বনদস্যু; এদের জন্য মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরা ও পণ্য পরিবহন সবকিছু বিঘ্নিত হত। তাছাড়া স’ন্ত্রাস ও জ’ঙ্গিবাদ যেভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ২০০১ এর পরে বিএনপি-জামায়াতের আমলে দেশে সবেচেয়ে বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। র‌্যা’ব স’ন্ত্রাস ও জ’ঙ্গিবাদ দ’মন, অ’বৈধ আ’গ্নেয়াস্ত্র ও মা’দক উ’দ্ধার, চ’রমপন্থিদের দ’মন ও ভে’জালবি’রোধী অ’ভিযানসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বিশেষ করে জ’ঙ্গিবাদ দ’মনে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে আমাদের এই বাহিনী। এজন্য এই বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই।

এসময় মা’দকের বি’রুদ্ধে অ’ভিযান অব্যাহত রাখার উপর তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রোজাকে সামনে রেখে কিছু মজুতদারী, কালোবাজারী আছে। এগুলোর বি’রুদ্ধেও র‌্যা’ব অ’ভিযান চালাচ্ছে।র‌্যা’ব মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে এতে অংশ নেন স্ব’রা’ষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র স’চিব মো. আখতার হোসেন ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। এছাড়া বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।