পুলিশের কেউ অপরাধ করলে বাহিনী থেকে বের করে দেয়া হবে : আইজিপি

| আপডেট :  ২৩ মার্চ ২০২২, ১০:২৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ মার্চ ২০২২, ১০:২৮ অপরাহ্ণ

আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশে কোনো অ’পরাধের স্থান নেই। অ’পরাধীর বি’রুদ্ধে লড়াই করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী, নিজেরা অ’পরাধ করার জন্য নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেরা ক্রা’ইম করবো না, সিনিয়র, জুনিয়র কোনো সহকর্মীকে ক্রা’ইম করতে দেবো না। কোনো পুলিশ সদস্য ক্রা’ইমের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাকে পুলিশ বাহিনী থেকে বের করে দেয়া হবে।’

যশোর পুলিশ লাইনসে বুধবার সকালে খুলনা রেঞ্জের সকল পুলিশ ইউনিটের বিভিন্ন পদবির অফিসার ও ফোর্সের সঙ্গে এক বিশেষ কল্যাণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এই হুঁ’শিয়ারি দেন। খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ড. খ. মহিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যশোর জে’লার পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার।

বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান বিপিএম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আইজিপি তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি মুক্তিযু’দ্ধ এবং ক’রোনাকালে দেশ ও জনগণের সেবায় আত্মোৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশ পুলিশকেও উন্নত দেশের উপযোগী আধুনিক পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। পুলিশের আধুনিকায়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশে সর্বাধুনিক টেকটিক্যাল বেল্ট, বডি ওর্ন ক্যামেরা ইত্যাদি যুক্ত হয়েছে। দেশ ও জনগণের কল্যাণে এবং জনগণকে উন্নত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে আগামীতে পুলিশের আধুনিকায়নে যা যা করা প্রয়োজন, তা-ই করা হবে।

পুলিশের নিয়োগ পদ্ধতির সংস্কারের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর পর পুলিশের কনস্টেবল, সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট পদে বিদ্যমান নিয়োগ বিধি সংস্কার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কনস্টেবল পদে জব মার্কেট থেকে ‘বেস্ট অব দি বেস্ট’ প্রার্থী নিয়োগ করা হয়েছে। সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

মানুষের সঙ্গে অ’মানবিক ও অপেশাদার আচরণ না করার জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আইজিপি বলেন, মানুষের সাথে অপেশাদার আচরণ করা যাবে না।

ক’রোনাকালে পুলিশের মহাকাব্যিক অবদানের কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ক’রোনা মোকাবেলায় পুলিশ কখনো এক মুহূর্তের জন্যও দায়িত্ব পালনে পিছপা হয়নি। তিনি বলেন, প্রথম দিকে পুলিশের সুরক্ষা সামগ্রী ছিল না, পিপিই ছিল না, তবু পুলিশ দেশ ও জনগণের সেবায় প্রথম দিন থেকেই আত্মনিয়োগ করেছে। ক’রোনাকালে দেশমাতৃকার সেবায়, দেশ ও জনগণের জন্য আমাদের ১০৬ জন সহকর্মী আত্মোৎসর্গ করেছেন। ২৭ হাজার পুলিশ সদস্য আ’ক্রান্ত হয়েছেন। নিজেদের দায়িত্বের গণ্ডি পেরিয়ে পুলিশ মানুষকে সেবা দিয়েছে। দেশের ১৮ কোটি মানুষ পুলিশকে ফ্রন্টলাইন ফাইটার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ এখন ‘ফ্রন্টলাইন হিরো’

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, মুক্তিযু’দ্ধে প্রথম বু’লেট নি’ক্ষেপের মধ্য দিয়ে পুলিশ জনগণের আস্থা, ভালোবাসা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে। আবার ক’রোনাকালে পুলিশ মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। জনগণের এ বিশ্বাস, আস্থা ধরে রাখা অত্যন্ত কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমাদের সকলকে এ কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। সবাই মিলে পুলিশ বাহিনীর সম্মান বাড়াতে হবে। পুলিশ বাহিনীর সম্মান বাড়লে ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের সম্মান বাড়বে।

আইজিপি যশোর পুলিশ হাসপাতাল, ইন্সপেক্টর কোয়ার্টার, চৌগাছা, যশোর এবং পুলিশ অফিসার্স মেস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। তিনি যশোর জে’লা পুলিশের মাল্টিপারপাস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।