পুলিশের এআইজি ফারুকীর বিরুদ্ধে ভ্রূণ হ’ত্যার মামলা

| আপডেট :  ১৭ মার্চ ২০২২, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৭ মার্চ ২০২২, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ

স্ত্রীর সম্মতি ছাড়া গ’র্ভপাত করানো ও ভ’য় দেখানোর অ’ভিযোগে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-লজিস্টিকস) মোহাম্ম’দ মহিউদ্দিন ফারুকীর বি’রুদ্ধে মা’মলা হয়েছে। মহিউদ্দিন ফারুকীর সাবেক স্ত্রী আয়শা ইসলাম বা’দী হয়ে গত মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যা’জিস্ট্রেট আ’দালতে এই নালিশি মা’মলা করেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার মো. জাফর আহমেদ আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, এক নারী এআইজি মহিউদ্দিন ফারুকীর বি’রুদ্ধে সিএমএম আ’দালতের নালিশি দরখাস্ত করেছেন। আ’দালত বি’ষয়টি প্রাথমিক ত’দন্তের জন্য ডিএমপির গো’য়েন্দা বিভাগের (ডি’বি) উপকমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মা’মলার আরজিতে বলা হয়, ২০১৯ সালে মহিউদ্দিন ফারুকীর সঙ্গে ফেসবুকে আয়শার পরিচয় হয়। সম্পর্কের প্রথম থেকে আয়শা ইসলামকে দেখা করতে প্রলুব্ধ করেন ফারুকী। এরপর তিনি বিভিন্ন অজুহাতে আয়শার বাসায় যাতায়াত করেন। প্রথম স্ত্রীকে তা’লা’ক দিয়ে আয়শাকে বিয়ে করতে চান তিনি। পরে আয়শার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। একপর্যায়ে আয়শা অ’ন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

২০২০ সালের ১৮ মার্চ ফারুকী চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বলেন, আয়শাকে ভিটামিন ও’ষুধ খাওয়ানোর কথা বলে গ’র্ভপাত করানোর ও’ষুধ খাইয়ে দেন বলে আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ও’ষুধটি গ’র্ভপাতের ছিল বলে ফারুকী পরে আয়শার কাছে স্বীকার করেন। এ সময় আয়শা অ’সুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান ফারুকী। সেখানে গ’র্ভপাত করার সময় স্বামীর নামের স্থলে ফারুকী সই করেন। কিন্তু গ’র্ভপাতে আয়শার সম্মতি ছিল না।

আরজিতে আরও বলা হয়, গ’র্ভপাতের পর ফারুকীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন আয়শা। তবে পরে ফারুকী কৌশলে তাঁর সঙ্গে আবারও সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং সহকর্মীদের কাছে আয়শাকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি আয়শাকে বিয়ে করার কথা বলে চা’পের মুখে তাঁর স্বামীকে তা’লা’ক দিতে বা’ধ্য করেন। গত বছরের ১৬ এপ্রিল আয়শা জানতে পারেন, তিনি আবারও অ’ন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় ফারুকী আবারও আয়শার গ’র্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করেন।

ভ্রূণ হ’’ত্যা করতে না দেওয়ায় ফারুকী ক্ষু’ব্ধ হয়ে ওঠেন এবং আয়শা ও গর্ভের স’ন্তানকে মে’রে ফেলার হু’মকি দেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে মা’মলার আরজিতে। এতে আরও বলা হয়েছে, আয়শা আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে ফারুকী বিয়ে করতে সম্মত হন। শেষমেশ গত বছরের ৬ জুন মু’সলিম শরিয়াহ আইন অনুযায়ী আয়শাকে বিয়ে করেন।

এরপর আয়শার ও’পর শা’রীরিক ও মা’নসিক নি’র্যাতন চালান তিনি। গর্ভের স’ন্তানকেও হ’’ত্যার চেষ্টা করেন ফারুকী। ওই বছরের ২৫ আগস্ট আয়শা নিজের ও গর্ভের স’ন্তানের জীবন রক্ষার জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে আবেদন করেন। পরে ১৬ সেপ্টেম্বর একই বি’ষয়ে স্ব’রা’ষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে আবেদন করেন।

এর আগেই আয়শাকে তা’লা’ক দেন ফারুকী। গত বছরের ২৩ নভেম্বর আয়শা কন্যাস’ন্তান জন্ম দেন। স’ন্তানের ভরণপোষণ চেয়ে পারিবারিক আ’দালতে পৃথক একটি মা’মলা করেছেন আয়শা।

অ’ভিযোগের বি’ষয়ে কথা বলতে এআইজি ফারুকীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেননি। অ’ভিযোগের বি’ষয়বস্তু উল্লেখ করে ফারুকীর বক্তব্য নিতে মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হয়। পরে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কে’টে দেন।

মা’মলার বা’দী আয়শা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সদর দপ্তর তাঁর সাক্ষ্য নিলেও তিনি কোনো প্রতিকার পাননি। গত ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি স্ব’রা’ষ্ট্র ম’ন্ত্রণালয়ে ত’দন্ত কমিটির কাছে ফারুকীর বি’রুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

আয়শা অ’ভিযোগ করেন, ফারুকী মি’থ্যা মা’মলা দিয়ে তাঁকে হ’য়রানি করছেন। তাঁর সঙ্গে করা হ’য়রানির ন্যায়বিচার ও স’ন্তানের ন্যায্য অধিকার চান। সূত্রঃ প্রথম আলো