সব
গাইবান্ধা শহরের জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী হ’’ত্যা মা’মলার এক আ’সামির স্বজনের কাছে ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁ’সের ঘটনায় যোগদানের ৫৮ দিনের মাথায় সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুজ্জামানকে গত মঙ্গলবার রাতে জে’লা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। এরআগে ওসি তৌহিদুজ্জামান গাইবান্ধা ডি’বি পুলিশের ওসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন । বুধবার সকালে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মুহাম্ম’দ তৌহিদুল ইসলাম প্রত্যাহারের বি’ষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার বি’রুদ্ধে পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ায় ত’দন্ত করার জন্য প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
জানা যায়, গত বছরের ১০ এপ্রিল গাইবান্ধা জে’লা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার বাসা থেকে জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীর (৪৫) লা’শ উ’দ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নি’হতের স্ত্রী বিথী বেগম মাসুদসহ তিনজনকে আ’সামি করে হ’’ত্যা মা’মলা দা’য়ের করেন। অপর দুইজন আ’সামি হচ্ছেন রুমেল হক ও খলিলুর রহমান। মা’মলার ত’দন্তকারি কর্মকর্তা তৎকালীন গাইবান্ধা ডি’বি পুলিশের ওসি ও বর্তমানে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি তৌহিদুজ্জামানের সঙ্গে মা’মলার এক আ’সামির স্বজনের ঘুষ লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁ’স হয়।
মা’মলার অ’ভিযোগ পত্র থেকে এক আ’সামির নাম বাদ দেওয়া ও আইনের ধারা কমিয়ে দিতে টাকা লেনদেনের কথাবার্তা হয়। কথামতো কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত প্রদানে ফোনালাপ হয়। পাঁচ দফায় প্রায় ১৭ মিনিটের ফোনালাপ হয়। এদিকে ফোনালাপটি দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। এনিয়ে গত সোমবার থেকে জে’লাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
মা’মলা সুত্রে জানা যায়, জে’লা আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত উপ-দপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার বাসা থেকে ব্যবসায়ী হাসান আলীর লা’শ উ’দ্ধার করে পুলিশ। মাসুদ রানা দাদন ব্যবসা করতেন। প্রায় দুই বছর আগে মাসুদ রানার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঋ’ণ নেন শহরের স্টেশন রোডের জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলী। এই টাকা সুদাসলে ১৯ লাখে দাঁড়ায়। সুদের টাকা দিতে না পারায় গত বছরের ৬ মার্চ হাসানকে তুলে নিয়ে নিজ বাড়িতে আ’টকে রাখেন মাসুদ।
তিনি হাসানকে নিজ বাসায় একমাসের বেশি সময় আ’টকে রাখেন। এনিয়ে নি’হতের স্ত্রী বিথী বেগম সদর থানায় মাসুদ রানাসহ তিনজনকে আ’সামি করে হ’’ত্যা মা’মলা দা’য়ের করেন। অপর দুইজন হচ্ছেন শহরের স্টেশন রোডের জুতা ব্যবসায়ী রুমেল হক ও খলিলুর রহমান।
এ মা’মলা প্রথমে ত’দন্ত করেন গাইবান্ধা সদর থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) সেরাজুল ইসলাম। পরে গাইবান্ধা ডি’বি পুলিশের তৎকালীন ওসি ও বর্তমানে সুন্দরগঞ্জের কঞ্চিবাড়ী পুলিশ ত’দন্ত কেন্দ্রের ই’নচার্জ মানষ রঞ্জন দাস দায়িত্ব পান। সর্বশেষ মা’মলার ত’দন্তের দায়িত্ব পান তৎকালীন গাইবান্ধা ডি’বি পুলিশের ওসি ও বর্তমানে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি তৌহিদুজ্জামান।
এদিকে ঘটনার বিচারের দাবিতে ব্যবসায়ী ‘হাসান হ’’ত্যার প্র’তিবাদ মঞ্চ’ গড়ে উঠে। বিচারের দাবিতে দুই মাস ব্যাপী আন্দোলন চলে। আন্দোলনের মুখে সদর থানার তৎকালীন ওসি মাহফুজার রহমান, পরিদর্শক (ত’দন্ত) মজিবর রহমান এবং উপ-পরিদর্শক মোশারফ হোসেনকে অন্যত্র বদলি করা হয়। ঘটনার দিনই মাসুদ রানাকে গ্রে’প্তার করে পুলিশ। তিনি বর্তমানে গাইবান্ধা জে’লা কা’রাগারে রয়েছেন।
ঘটনার নয় মাস ছয়দিন পর মাসুদ ও খলিলুরের বি’রুদ্ধে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি মা’মলার ত’দন্তকারী কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান আ’দালতে অ’ভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর দুই দিন পর ১৮ জানুয়ারি বদলী হয়ে তিনি সুন্দরগঞ্জ থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। গাইবান্ধা কোর্ট পুলিশ ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে অ’ভিযোগ পত্রটি সংশোধনের জন্য ত’দন্তকারি কর্মকর্তার কাছে ফেরত পাঠান।
পরে গত ৭ মার্চ মাসুদ রানাসহ তিন আ’সামিকেই অ’ভিযুক্ত করে আ’দালতে সংশোধিত অ’ভিযোগপত্র জমা দেন ওসি তৌহিদুজ্জামান। এর পরই ফোনালাপ শুরু হয় টাকা ফেরতের জন্য। এতেই ফোনালাপটি ফাস হয়ে ভাইরাল হয়। এব্যাপারে পুলিশের রংপুর রেঞ্চের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্যের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি ওসি তৌহিদুজ্জামানকে প্রত্যাহারের বি’ষয়টি নিশ্চিত করেন। সুত্রঃ দৈনিক ইনকিলাব