বাস মালিকের ‘বউ ফেরতের’ পাওনা আড়াই লাখ টাকা চান জবি ছাত্রলীগকর্মী

| আপডেট :  ১৪ মার্চ ২০২২, ১১:০৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ মার্চ ২০২২, ১১:০২ অপরাহ্ণ

আড়াই লাখ টাকা না দেওয়ায় এফ.আর হিমাচল পরিবহনের একটি এসি বাস গত আটদিন ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আটকে রেখেছিলেন শাখা ছাত্রলীগকর্মী মেহেদী। গত ৬ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এফ.আর হিমাচল পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব; ১৫৭১-২২) বাসটি পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার এলাকা থেকে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আটকে রাখা হয়।

এ বিষয়ে এফ.আর পরিবহনের এমডি নোমানের অভিযোগ, তাঁতিবাজার মোড় থেকে কোনো কারণ ছাড়াই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমার গাড়ি নিয়ে যান। পরে মেহেদী নামের একজন আমার কাছে আড়াই লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত গাড়ি ছাড়া হবে না বলে জানানো হয়।

তিনি আরও বলেন, আমি তাকে বলি আপনি আমার কাছে টাকা পান এমন কোনো প্রমাণ যদি দেখাতে পারেন তাহলে আমি আপনাকে দ্বিগুণ টাকা দেবো। তখন তিনি আমাকে বলেন- ‘আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সেক্রেটারি আকতার হোসেনের সবচেয়ে কাছের লোক। আমাকে কেউ কিছু করার ক্ষমতা নেই’। টাকা না দিয়ে যদি এই নিয়ে বাড়াবাড়ি বা থানায় অভিযোগ করি তাহলে আমাকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন মেহেদী।

তবে ছাত্রলীগকর্মী মেহেদী চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। মেহেদী বলেন, বাস মালিক নোমানের বউ আমার এলাকার এক ছেলের সঙ্গে চলে গিয়েছিল। পরে নোমান আমাকে বলেছিলেন, তার বউকে এনে দিতে পারলে আমাকে বাইক, কক্সবাজারের এয়ার টিকিট, আমার গার্লফ্রেন্ডকে স্বর্ণের চেইন ও কক্সবাজারে চারদিন থাকা খাওয়ার খরচসহ আরও টাকা দিবেন।

‘পরে আমি নোমানের বউকে কৌশলে তার কাছে এনে দিয়েছিলাম। এরপর ২০ দিন নতুন করে ঘর সংসার করে নোমানের বউ আবার নোমানকে ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এখন আমার কাজের পাওনা আমাকে দিতে হবে। নোমান টাকা না দিয়ে পালিয়ে চলে যাওয়াতে তাকে আর খুঁজে পাইনি। তাকে না পাওয়ায় তার গাড়ি আটকে রেখেছি। নোমান টাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাবেন।’

জানা যায়, গত ৬ মার্চ শাখা ছাত্রলীগ কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের দর্শন বিভাগের ছাত্র মেহেদী ও তার সহপাঠীরা মিলে তাঁতিবাজার থেকে বাসটি আটক করে আনেন। আটদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আটকে রাখার পর আজ সেখান থেকে প্রক্টরিয়াল টিমের মধ্যস্থতায় বাসটি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম আকতার হোসাইন বলেন, এ ব্যাপারে গতকাল আমাকে ফাঁড়ির ইনচার্জ অবগত করেন। আমি বলে দিয়েছি এর সঙ্গে আমি এবং আমার সভাপতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার বলেন, আমরাও কিছুদিন ধরে বাসটি গেটের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম। বিষয়টি নিয়ে আমি কোতোয়ালি থানার ওসি ও ক্যাম্পাস ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছি। কে বা কারা বাসটি আটকে রেখেছেন আমি সেটা জানি না। আজ কোতোয়ালি থানার পুলিশ সদস্যরা এসে বাসটি উদ্ধার করে নিয়ে গেছেন। সূত্রঃ জাগোনিউজ