প্রসূতির সিজারের খবর পেয়ে সভা ফেলে ওটিতে ছুটলেন সিভিল সার্জন, রক্ষা পেল দুটি প্রাণ

| আপডেট :  ১৪ মার্চ ২০২২, ১২:২১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ মার্চ ২০২২, ১২:২১ অপরাহ্ণ

‘মানবিক চিকিৎসকের’ এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস। সঙ্কটাপন্ন দুই গর্ভবতীর জীবন বাঁচাতে আলোচনা অনুষ্ঠান ছেড়ে ছুটলেন অপারেশন থিয়েটারে। নিজের হাতেই তুলে নিলেন ছুরি-কাঁচি। অভাবনীয় এ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রোববার এই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন তিনি।

সোমবার (১৪ মার্চ) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার এ তথ্য নিশ্চিত করেছন। এর আগে শনিবার (১২ মার্চ) দুপুরে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। এরপর অল্প সময়ের ব্যবধানে দুটি সিজারের মাধ্যমে দুই প্রসূতির কোলে এনে দেন দুটি ফুটফুটে পুত্র সন্তান। ওই দুই নবজাতক ও তাদের মায়েরা সবাই সুস্থ রয়েছেন। এদিকে আলোচনা সভা ছেড়ে দুই প্রসূতির সিজার করে জেলাজুড়ে প্রশংসায় ভাসছেন সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস।

জানা গেছে, চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজার দুটি হলেও ওই দুই প্রসূতির কেউই চৌগাছা উপজেলার বাসিন্দা নন। এর মধ্যে সুমাইয়া খাতুন (১৯) ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বৈচিতলা গ্রামের জনৈক রিংকু এবং প্রসূতি শাহানারা (৩০) যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামের টিটো মিয়ার স্ত্রী।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার বলেন, আমাদের স্থায়ী কোনো স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ডা. হাবিবুন নাহার ফোয়ারা একাই সিজারিয়ান অপারেশন করে থাকেন। তবে গত শনিবার তিনি ব্যক্তিগত কারণে ছুটিতে ছিলেন। অথচ দুজন প্রসূতির সিজার করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছিল। ওই সময়ে সিজার না করালে তাকে বাঁচানো যেত না এমন পরিস্থিতি হয়ে গিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, সেই সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্সদের সঙ্গে মতবিনিময় করছিলেন সিভিল সার্জন। এমন সময় হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ড থেকে নার্সরা জানান, দুই প্রসূতিকে জরুরি সিজার করতে হবে। এরপর বিষয়টি সিভিল সার্জন মহাদয়কে জানালে সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওপারেশন থিয়েটার রেডি করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মিলে দুই প্রসূতির সিজার করেন। সিজারে দুই প্রসূতির দুটি ছেলে সন্তান হয়েছে।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, গত শনিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মতবিনিময় সভায় ছিলাম। হঠাৎই হাসপাতালে দুই প্রসূতিকে সিজারের দরকার হয়ে পড়ে। এ সময় দুঃভাগ্যক্রমে হাসপাতালে সিজারের জন্য চিকিৎসক ছিল না। এ কারণে বাধ্য হয়ে আমি সিজার করেছি। এর আগে প্রায় এক হাজারের বেশি সিজার করার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। তবে এমন বিপদগ্রস্ত অবস্থায় কোনো প্রসূতিকে অপারেশন করেনি।