র‍্যাগিংয়ের নামে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে অমানবিক নি’র্যাতন

| আপডেট :  ১৩ মার্চ ২০২২, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৩ মার্চ ২০২২, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ছাত্রলীগের রাজনীতি না করায় এক ছাত্রকে নি’র্যাতন করার ঘটনায় চারজনকে সাময়িক ব’হিষ্কার করা হয়। এর রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সিনিয়র ছাত্রের দ্বারা নি’র্মম নি’র্যাতনের শি’কার হয়েছেন এক ব্যাচ জুনিয়র শিক্ষার্থী। তার নাম সাগর চন্দ্র দে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়টির অগ্নিবীণা হলের ২০৪ নং কক্ষে এ নি’র্যাতনের ঘটনা ঘটে বলে জানান আ’হত সাগর চন্দ্র দে। তিনি বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

শনিবার রাতে হাসপাতালে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় নি’র্যাতনের শি’কার ছাত্র সাগর চন্দ্র দে’র সঙ্গে। তিনি জানান, এদিন বিকেলে ওই কক্ষে সাগরকে রোলিং চেয়ারে জো’র করে বসিয়ে ঘোরাতে থাকে চারুকলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌমিক জাহান। এসময় তাকে বারবার থামাতে বলছিলেন সাগর৷ কিন্তু তার কথায় কান না দিয়ে অনবরত চেয়ারটি জো’রে ঘোরাতে থাকে।

এক পর্যায়ে সেই চেয়ারটি উলটে গিয়ে পড়ে যান সাগর। এতে মাথায়, নাকে-মুখে মা’রাত্মক আ’ঘাত পান তিনি। এসময় দুটি দাঁত ভেঙ্গে গিয়ে র’ক্তক্ষরণ শুরু হয় তার। কিন্তু এ অবস্থাতেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি অ’ভিযুক্ত শিক্ষার্থী। এমনকি ফোনও ছি’নিয়ে নিয়ে আ’টকে রাখে সৌমিক।

সাগর বলেন, ‘ঘটনার পর আমার মোবাইলটি বারবার চাইলেও আমাকে দিতে চায়নি। তবুও অনেক চেষ্টার পর মোবাইলটি নিয়ে এক বড় ভাইকে মেসেঞ্জারে একটি ছবি পাঠাই এবং তাড়াতাড়ি আসতে বলি। তারপর ওই ভাই ৫ মিনিট পর এসে আমাকে উ’দ্ধার করে প্রথমে উপজে’লা স্বা’স্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

খবর পেয়ে সাগরকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান ওই হলের প্রভোস্ট কল্যাণাংশু নাহা। এছাড়াও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মোহাম্ম’দ ইরফান আজিজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক তপন কুমার স’রকার।

ঘটনার বি’ষয়ে জানতে চাইলে হলটির প্রভোস্ট কল্যাণাংশু নাহা বলেন, শুরুতেই আমরা রো’গীর চিকিৎসার বি’ষয়টি নিশ্চিত করেছি এবং পরে তার কাছে মূল ঘটনাটি শুনেছি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ইরফান আজিজকে আহবায়ক করে ৩ সদস্যের ত’দন্ত কমিটি গঠন করেছে অগ্নিবীণা হল প্রশাসন। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ত’দন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ছাত্র পরামর্শক তপন কুমার স’রকার বলেন, চিকিৎসক জানিয়েছেন সাগর এখন আশংকামুক্ত। ঘটনার ব্যাপারটি আমি ভিসি স্যারকে জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় ত’দন্ত করে শিগগিরই ব্যবস্থা নিবে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর মোহাম্ম’দ ইরফান আজিজ বলেন, আমরা আশা করছি ত’দন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসবে এবং প্রশাসন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।