সার্চ কমিটি প্রধান ও অন্যান্য সদস্যদের পরিচয় জেনে নিন

| আপডেট :  ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:২০ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:২০ অপরাহ্ণ

কেমন হবে নতুন নির্বাচন কমিশন? কারা আসবেন দায়িত্বে? এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে নতুন সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটির প্রস্তাবে। তারাই অনুসন্ধান করে বের করবেন ইসির নতুন সদস্যদের। নির্বাচন কমিশন গঠনে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে ছয় সদস্যের এই কমিটি করা হয়েছে। কমিটির বাকি পাঁচজন হলেন, হাইকোর্টের বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামান, বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ স’রকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক। তাদের কর্মজীবনে কে কোথায় ছিলেন বিস্তারিত তুলে ধরার হলো পাঠকের জন্য।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
দুই বছর ধরে দেশের সর্বোচ্চ আ’দালত আপিল বিভাগে ধরে বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। ইসি গঠনের সার্চ কমিটিতে এর আগেও দায়িত্ব পালন করেছেন এই বিচারক।

২০১৭ সালের সার্চ কমিটিতে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে সদস্য ছিলেন তিনি।
ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেন। এর আগে বিএসএস ও এমএসএস করেছেন অর্থনীতিতে।
ওবায়দুল হাসান ২০১২ সালে আন্তর্জাতিক অ’পরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন।

৬২ বছর বয়সী ওবায়দুল হাসানের বাবা ডা. আখলাকুল হোসাইন আহমেদ মুক্তিযু’দ্ধের অন্যতম সংগঠক। তিনি গণপরিষদ সদস্য হিসেবে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সংবিধান রচনায় সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখেন।প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ স’চিব ও বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ছোটভাই ।

তিনি আইনজীবী হিসেবে জে’লা আ’দালতে কাজ শুরু করেন ১৯৮৬ সালে। হাইকোর্ট বিভাগে ১৯৮৮ সালে এবং আপিল বিভাগে ২০০৫ সালে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৯ সালে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।

বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান
রাজবাড়িতে জন্ম নেওয়া ৬১ বছর বয়সী এস এম কুদ্দুস জামান চার বছর ধরে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন। কুদ্দুস জামান ১৯৮৪ সালে জু’ডিশিয়াল সার্ভিসে যোগ দেন। ২০০৬ সালে জে’লা জজ হন। সুপ্রিম কোর্টে রেজ্রিস্টারের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। ২০১৫ সালে ঢাকার জে’লা ও দায়রা জজ হন কুদ্দুস জামান। ২০১৮ সালে হাই কোর্টে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী।

মুহাম্ম’দ ছহুল হোসাইন
সিলেটের স’ন্তান ছহুল হোসাইন জে’লা জজ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জে’লায় দায়িত্ব পালন করেন। পরে আইন স’চিবও হয়েছিলেন তিনি। অবসর নেওয়ার পর তিনি নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

মুহাম্ম’দ ছহুল হোসাইন ২০০৭-২০১২ সালে নির্বাচন কমিশনারেরর দায়িত্ব পালন করেন। জরুরি অবস্থার সময় দায়িত্ব নেওয়া সে কমিশনই সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আইনের প্রথম খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিল।

একাদশ সং’সদ সং’সদের সময় তার নামে সিলেট-১ আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহও করেছিলেন সমর্থকরা। ছহুল বর্তমানে তিনি একটি বেস’রকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিন হিসেবে কর্মরত।

আনোয়ারা সৈয়দ হক
আনোয়ারা সৈয়দ হক মনোরো’গ বিশেষজ্ঞ হিসেবে দেশে এক নামে পরিচিত। লেখক হিসেবেও রয়েছে তার পরিচিতি। তার স্বামী প্রয়াত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হকের খ্যাতি ছিল সব্যসাচী লেখক হিসেবে।

১৯৪০ সালে যশোর জে’লায় জন্ম নেওয়া আনোয়ারা সৈয়দ হক পড়াশোনা করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজে এবং লন্ডনের এম আর সাইক-এ। তিনি কিছুকাল বিমানবাহিনীতে চিকিৎসক হিসেবে ছিলেন।

গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও শি’শুসাহিত্য রচনা করে যাওয়া আনোয়ারা সৈয়দ হক ২০১০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। ২০১৯ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে স’রকার।

সোহরাব হোসাইন
৬১ বছর বয়সী সোহরাব হোসাইন স’রকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে।

১৯৮৪ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের এই কর্মকর্তা সবশেষ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ স’চিব ছিলেন। অবসরোত্তর ছুটিতে যান ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে।

নোয়াখালীর স’ন্তান সোহরাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে যুক্ত সোহরাব বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য।

সোহরাব হোসাইনের স্ত্রী ড. মাহমুদা ইয়াসমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক।

মোহাম্ম’দ মু’সলিম চৌধুরী
মোহাম্ম’দ মু’সলিম চৌধুরী ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই থেকে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে রয়েছেন। এর আগে অর্থস’চিব পদে ছিলেন তিনি।

চট্টগ্রামে জন্ম নেওয়া মু’সলিম চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম ইউনিভার্সিটি থেকে ফিন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিংয়ে ডিসটিংশনসহ এমএসসি ডিগ্রি নেন।

১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের অডিট অ্যান্ড একাউন্টস্ ক্যাডারে যোগ দিয়ে কন্ট্রোলার জেনারেল অব অ্যাকাউন্টস্, কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স এবং অর্থ বিভাগের উপস’চিব, যুগ্মস’চিব ও অতিরিক্ত স’চিব পদে দায়িত্ব পালন করেন মু’সলিম চৌধুরী।