১০ বছর আগে যাঁরা বিদেশে গেছেন, ফিরে বলেন কোথায় এলাম: নানক

| আপডেট :  ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০১:২৪ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ০১:২৪ অপরাহ্ণ

বড় জোট গঠন করে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ স’রকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের জন্য এক দফা দাবিতে বিএনপির আন্দোলনে নামার উদ্যোগে ‘কোনো লাভ হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিএনপির উন্নয়ন ভালো লাগে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘১০ বছর আগে যাঁরা বিদেশে গেছে, আজকে তাঁরা এই দেশে এসে বলেন যে, কোথায় এলাম? সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক না দুবাইয়ে এলাম?’

রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মাঠে ‘হল সম্মেলন ২০২২’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হল শাখা ছাত্রলীগের সমন্বিত সম্মেলন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তবে অ’সুস্থতার কারণে তিনি অংশ নিতে পারেননি।

অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘পদ্মা সেতু আজ বাস্তব। ইনশাআল্লাহ, আগামী জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতু চালু হলে, আমরা প্রবৃ’দ্ধি অর্জনে নতুন মাত্রা যোগ করব। মেট্রোরেল নির্মাণের মধ্য দিয়ে ঢাকা এক বৃহত্তর নগরীতে পরিণত হবে। ফ্লাইওভার হওয়ার মধ্য দিয়ে আজকে ঢাকা শহরের চেহারা বদলে গেছে। ১০ বছর আগে যাঁরা বিদেশে গেছে, আজকে তাঁরা এই দেশে এসে বলে যে কোথায় এলাম? সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক না দুবাইয়ে এলাম? যে মানুষটি রাস্তার ফুটপাতে ঘুমাত, কোনো ঠিকানা ছিল না, তাঁকে ঠিকানা দিয়েছেন শেখ হাসিনা।’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের এই নেতার ভাষ্য, ‘যাঁরা লু’টপাট ও বিদেশে অর্থপা’চার করে দেশকে ধ্বং’স করেছে এবং একাত্তরের মুক্তিযু’দ্ধের যাঁরা বি’রোধিতা করেছে, অসা’ম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে যাঁরা সা’ম্প্রদায়িকতার বি’ষবাষ্পে পতিত করেছিল—এই উন্নয়ন তাঁদের ভালো লাগে না।’

বিএনপিকে ‘ভালো লাগে না’ রো’গে পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক৷ তিনি বলেন, ‘সর্বত্র উন্নয়ন দেখে সব মানুষের ভালো লাগলেও তাঁদের ভালো লাগে না। কারণ তাঁদের ভালো না লাগার ব্যামোতে-ব্যারামে পেয়েছে। এই রো’গের ও’ষুধ আমাদের কাছে নেই। তবে জনগণের কাছে আছে। সেই ও’ষুধ হচ্ছে ভোটের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান। অতীতে জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাঁদের যেভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাঁরা জানে আগামী নির্বাচনেও সেই ও’ষুধ ব্যবহার করবে। সেই ও’ষুধ ব্যবহার করে জনগণ তাঁদের বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফে’লে দেবে। সেই ভ’য়ও তাঁদের আছে।’

নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা জনগণের জন্য আরেকটি চিরস্থায়ী ব্যবস্থা করে গেলেন বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা। বিএনপির উদ্দেশে নানক বলেন, ‘ভালো না লাগার পার্টি এখন বলছে, তাঁদের নেতৃত্বে এক দফাভিত্তিক জোট তৈরি হবে। কাদের ভ’য় দেখান? যাঁরা আইয়ুব, ভুট্টো, ইয়াহিয়াকে মো’কাবিলা করেছে, যাঁরা একাত্তরে বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর পাকিস্তানি সে’নাবা’হিনীকে মো’কাবিলা করেছে? বিএনপি-জামায়াত জোটকে যাঁরা মো’কাবিলা করেছে, তাঁদের ভ’য় দেখান? ওই ভ’য় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। জনগণের শক্তিই হলো শেখ হাসিনার শক্তি। জনগণের শক্তি দিয়েই তা মো’কাবিলা করা হবে। এ দেশে বি’রোধী দল করতে হলে তাঁকেও মুক্তিযু’দ্ধের পক্ষের শক্তি হতে হবে।’

হল সম্মেলন সামনে রেখে গত ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারি ১৮টি হলে ধারাবাহিকভাবে কর্মী সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সেখানে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারাও বক্তব্য দেন। ১৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও হল শাখাগুলোর নেতাদের নিয়ে একটি বিশেষ বর্ধিত সভা করা হয়। ২৪ জানুয়ারি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ও বিভিন্ন উপকমিটি গঠন করা হয়। ২৬ জানুয়ারি কমিটিগুলোর সভা হয়। রোববার সম্মেলন উপলক্ষে বিশেষ সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের উদ্যোগে ছিল ‘উৎসবের কল্পচিত্র’ ও ‘উচ্ছ্বাসের আলোকশিখা’ শীর্ষক আনন্দ-আয়োজন।