দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন রওশন এরশাদের খবর নেয় না কেউ

| আপডেট :  ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০৪:৩৬ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০৪:৩৬ অপরাহ্ণ

জাতীয় সং’সদের বি’রোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে প্রায় তিন মাস ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরও আগে আড়াই মাস ধরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। কিন্তু অবস্থা সং’কটাপন্ন হয়ে গেলে শেষ পর্যন্ত ব্যাংককে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। কিন্তু বর্তমানে এই প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের শা’রীরিক অবস্থার প্রকৃত চিত্র সম্পর্কে জানেন না জাতীয় পার্টির নেতারা।

অ’ভিযোগ রয়েছে, রওশন এরশাদের সঙ্গে ব্যাংককে আছেন তার ছেলে সাদ এরশাদ। তিনি জাতীয় পার্টির নেতাসহ রওশন এরশাদের স’রকারি ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগে খুব বেশি আগ্রহী নন। তবে মাঝেমধ্যে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলেও মায়ের শা’রীরিক অগ্রগতি বা অ’বনতি সম্পর্কে খুব বেশি জানাতে উৎসাহ দেখান না তিনি। ফলে রওশন এরশাদের শা’রীরিক অবস্থার প্রকৃত চিত্র দেশে অবস্থানরত দলীয় নেতাকর্মী ও তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের কাছে নেই।

রওশন এরশাদের চিকিৎসাসংক্রান্ত বি’ষয়ে জাপার মহাস’চিব মুজিবুল হক চুন্নু গণমাধ্যমকে বলেন, রওশন এরশাদের শা’রীরিক অবস্থার সরাসরি কোনো খবর আমি জানি না। কারণ তার সঙ্গে যোগাযোগের কোনো সুযোগ নেই। ব্যাংককে আছেন। সাদ এরশাদ যদি ফোন করে, তখন জানি। ৮-১০ দিন আগে আমাকে ফোন করেছিল। অবস্থা একটু ভালো। এরপর আর কোনো ফোন পাইনি। খবরও জানি না।

তিনি আরও বলেন, সত্য কথা বলতে কি, তার প্রতিদিনের সংবাদটাও পাচ্ছি না। সাদ এরশাদ যোগাযোগ না করলে আমাদের যোগাযোগ করার সুযোগ নেই। এজন্য আমরাও একটু উ’দ্বেগে আছি। দেখি কয়েক দিনের মধ্যেই উনার রো’গমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করব। দলে তার যথেষ্ট অবদান আছে। পার্টির সৃষ্টিলগ্ন থেকে ওনার অবদান। দুঃসময়ে অবদান আছে। তার অবদানের শেষ নেই।

এ ব্যাপারে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথম দিকে তার সম্পর্কে কিছু খবর পেলেও এখন তিনি কেমন আছেন তা বলতে পারব না। তার সঙ্গে যোগাযোগ করার যে মাধ্যম সেখান থেকেই যোগাযোগ করা হচ্ছে না।অন্য প্রেসিডিয়াম সদস্য লোটন সিকদার বলেন, রওশন এরশাদ হাসপাতালে আছেন, এটুকুই জানি। ব্যাংককে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে আছেন। কেবিনে দিয়েছে। এর বেশি জানি না।

বি’রোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মামুন হাসান। তার কাছে রওশন এরশাদের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমি নিজেই গত কয়েক দিন ধরে ক’রোনায় আ’ক্রান্ত। সাদ এরশাদের সঙ্গেও আমার কথা হচ্ছে না। এ কারণে উনার (রওশন এরশাদ) বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমার জানা নেই।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের নিজেও গত ১৫ জানুয়ারি থেকে ক’রোনাভা’ইরাসে আ’ক্রান্ত। শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) তিনি ক’রোনামুক্ত হন। তার কাছে রওশন এরশাদের শা’রীরিক অবস্থার বি’ষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ব্যাংককের হাসপাতালের চিকিৎসকদের মোবাইল নম্বর তো আমার কাছে নেই। ফলে, চিকিৎসকদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ করাও সম্ভব নয়। তবে আমার সঙ্গে সাদ এরশাদের কথা হয়। রওশন এরশাদের শা’রীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও সেটা খুবই ধীরগতিতে হচ্ছে। বয়স ও অন্যান্য রো’গ মিলিয়ে তার শা’রীরিক উন্নতির অবস্থা খুব বেশি স্থিতিশীল নয়।

এদিকে, জাপার নেতারা অ’ভিযোগ করেছেন, জাপা এখন জাতীয় সং’সদের বি’রোধী দল। সে হিসেবে স’রকারের পক্ষ থেকেও জাতীয় সং’সদের বি’রোধী দলের এ শীর্ষ নেতার চিকিৎসার ব্যাপারে কোনো খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে না।

দলের নেতারা আরও জানান, গত বছর থেকেই রওশন এরশাদ বার্ধক্যজনিত নানা স্বা’স্থ্যগত জটিলতায় ভুগছিলেন। তখন প্রায় আড়াই মাস তিনি ঢাকার সম্মিলিত সা’মরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২০ অক্টোবর থেকে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। তার ফুসফুসে সং’ক্র’মণ দেখা দেয়। পরে অবস্থার অ’বনতি হলে ৫ নভেম্বর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে নেওয়া হয়। রওশন এরশাদের বয়স ৭৮ বছর।