হ’ত্যার পর সারারাত শিমুর ম’রদেহের সঙ্গেই থাকেন স্বামী, পরদিন করেন জিডি

| আপডেট :  ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১০:২১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১০:২১ অপরাহ্ণ

ম’রদেহ উ’দ্ধারের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু হ’’ত্যা র’হস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।পুলিশের প্রাথমিক জি’জ্ঞাসাবাদে শিমুকে (৩৫) হ’’ত্যার দায় শি’কার করেছেন তার স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল।এদিকে পুলিশের জেরায় চাঞ্চল্যকর সব তথ্য দিয়েছেন নোবেল ও তার বন্ধু ফরহাদ।

নোবেলের জ’বানব’ন্দির বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার রাতে গ্রিন রোডের বাসায় শ্বা’সরো’ধে হ’’ত্যার পরদিন বাল্যবন্ধু ফরহাদকে নিয়ে কেরানীগঞ্জে গিয়ে ম’রদেহ ফে’লে দিয়ে আসেন নোবেল। ফিরে এসে কলাবাগান থানায় স্ত্রী নি’খোঁজের ডায়েরি (জি’ডি) করেন তিনি।

ঢাকা জে’লা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার শাহাবুদ্দিন কবির গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স্ত্রীকে হ’’ত্যার পর সারারাত ম’রদেহের সঙ্গেই থাকেন নোবেল। পরদিন সকালে বন্ধু ফরহাদকে বাসায় ডাকেন। সকালে তারা ভবনের নিরাপত্তাকর্মীকে নাস্তা আনতে বাইরে পাঠিয়ে একটি বস্তায় করে ম’রদেহটি গাড়িতে রাখেন।

এরপর ম’রদেহ ফেলার জায়গা খুঁজতে তারা সাভার, আশুলিয়া ও মিরপুর বেড়িবাঁধের দিকে যান। কিন্তু সেখানে সুবিধা করতে না পেরে বিকেলে আবার ম’রদেহ নিয়ে বাসায় ফেরেন। তারা রাত অবধি অপেক্ষা করে আবার লা’শ নিয়ে গাড়িতে করে বেরিয়ে পড়েন এবং কেরানীগঞ্জের আলিয়াপুর ম’রদেহ ফে’লে আসেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা যোগ করেন,‘রোববার রাতে ম’রদেহ ফেলার পর নোবেল কলাবাগান থানায় গিয়ে একটি জি’ডি করেন। জি’ডিতে বলা হয়, তার স্ত্রী রোববার সকাল থেকে নি’খোঁজ।’

শনিবার রাতেই শিমুর সঙ্গে শেষ কথা হয় এবং এর পর থেকে তার বোনকে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে জানিয়েছেন শিমুর বড় ভাই শহিদুল ইসলাম খোকন।এদিকে শিমুকে যে এভাবে মে’রে ফেলা হবে ভাবতেই পারছেন না তার ছোটবোন ফাতিমা নিশা।

শিমুর ম’রদেহ উ’দ্ধার হওয়ার আগের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ফাতিমা বলেন,‘রোববার সন্ধ্যায় আমার কাছে একটি ফোন আসে যে, আমার বোন রাইমা ইসলাম শিমুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। তখন থেকেই শিমুর ফোন নাম্বারে বারবার কল দিই। নাম্বার বন্ধ পাচ্ছিলাম।

পরে আমি আমার বোনের মেয়েকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করি— তোমার আম্মু কোথায়? সে আমাকে বলে, মা সকালে একা বের হয়েছে এখনও বাসায় ফেরেননি। তার পর আমি আমার বোনের স্বামী সাখাওয়াত আলী নোবেল ভাইকে ফোন দিই। তাকে ফোন দিয়ে বলি, ভাইয়া আপু কোথায়? তার ফোন তো বন্ধ পাচ্ছি। তখন তিনি আমাকে বলেন, আমি তো বি’ষয়টি জানি না। সারাদিনে আমি তাকে ফোন দিইনি। তার নাম্বার যে বন্ধ সেটিও আমি জানি না।’

পর দিনই (সোমবার) শিমুর লা’শ উ’দ্ধারের বি’ষয়টি জানতে পারেন ফাতিমা। এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক ও দাম্পত্য ক’লহের জেরে স্ত্রী শিমুকে খু’ন করেন নোবেল।

মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করে ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নোবেল ও ফরহাদকে জি’জ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ও ব্যাপক জি’জ্ঞাসাবাদে শিমু হ’’ত্যায় এ দুজনের সংশ্লিষ্টতার পাওয়া গেছে। বিভিন্ন পারিবারিক বি’ষয় কেন্দ্র করে স্বামী নোবেলে সঙ্গে শিমুর দাম্পত্য ক’লহ শুরু হয়। সেই ক’লহের জেরে গত রোববার সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে যে কোনো সময় শিমুকে হ’’ত্যা করা হয়।

এসপি আরও জানান, যে গাড়ি ব্যবহার করে শিমুর লা’শ গু’মের চেষ্টা করা হয়েছে সে গাড়ি জ’ব্দ করে থানায় নিয়েছে পুলিশ। অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, স্বামী ও দুই স’ন্তানকে নিয়ে রাজধানীর গ্রিনরোড এলাকার বাসায় থাকতেন অভিনেত্রী শিমু। রোববার শুটিংয়ের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে নি’খোঁজ হয়ে যান। স্ত্রীর নি’খোঁজের বি’ষয়টি সোমবার কলাবাগান থানায় জি’ডি করেন শিমুর স্বামী নোবেল।

এর মধ্যে সোমবার দুপুরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে বস্তাব’ন্দি এক নারীর মৃ’তদেহ উ’দ্ধার করে পুলিশ। ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের ম’র্গে রাতে গিয়ে ওই লা’শ শিমুর বলে শনাক্ত করেন তার বড় ভাই শহীদুল ইসলাম খোকন।