কক্সবাজারে ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিত পর্যটক মিলছে না

| আপডেট :  ১০ জানুয়ারি ২০২২, ০৩:৩৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১০ জানুয়ারি ২০২২, ০৩:৩৯ অপরাহ্ণ

গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধ’র্ষণ, আবাসিক হোটেলের অস্বাভাবিক ভাড়া এবং রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবারের দাম নিয়ে নৈরাজ্যের প্রভাব পড়েছে কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসার ওপর। এখানে ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিতসংখ্যক পর্যট’কের দেখা মিলছে না। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।

কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, এ সময় প্রতি বছর পর্যটন এলাকার আবাসিক হোটেলগুলোর ৮০ থেকে ৯০ ভাগের বেশি রুমের বুকিং থাকে। কিন্তু এবার ৫০ ভাগের বেশি রুম খালি পড়ে আছে। বলতে গেলে চলতি পর্যটন মৌসুমে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পর্যট’ক নেই।

পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নুরুল আবছার জানান, বছরের শেষ দিন অর্থাৎ ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ উদ্যাপনেও এবার সেভাবে পর্যট’কের দেখা মেলেনি। কিন্তু অন্য সব বছর এমন সময় হোটেলে রুম পেতে পর্যট’কদের গলদঘর্ম হতে হতো। দেশে করো’না পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার পরও ধ’র্ষণকা’ণ্ড ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর গলাকা’টা বাণিজ্যে পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছে।

কক্সবাজার পর্যটন গলফ মাঠের গাড়ি পার্কিংয়ের ইজারাদার পৌর কাউন্সিলর সালাহউদ্দিন সেতু বলেন, ১৬-১৮ ডিসেম্বর ছুটির ৩ দিন এখানে পর্যট’কদের ৩৫০ বড় বাস পার্কিং করা হয়েছিল। এখানে পার্কিং করার জায়গা না পেয়ে ইলিয়াছ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠসহ বিভিন্ন স্থানে আরও আড়াইশ বড় বাস পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু পর্যটনের ভরা মৌসুমে কক্সবাজারে পর্যট’কদের ১০০টির মতো বড় বাস পার্কিং করা হয়। এতে পর্যটন ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন।

ইজারাদার সেতু আরও বলেন, গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধ’র্ষণ এবং রেস্টুরেন্টগুলোতে ডাল-ভাতের অস্বাভাবিক দামের খবর প্রচারিত হওয়ায় দেশজুড়ে তোলপাড় হয়। এসব খবরে কক্সবাজার থেকে ভ্রমণপিপাসু পর্যট’করা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আবুল কাশেম সিকদার বলেন, এবার আশানুরূপ পর্যট’ক আসেননি। থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে মাত্র ৫০ শতাংশের অধিক রুম বুকিং হয়েছে। এছাড়া সমুদ্রসৈকতে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনে সরকারি নিষেধাজ্ঞাও পর্যট’ক ধসের আরেকটি কারণ। কক্সবাজারে এমন নাজুক অবস্থা আর কখনো হয়নি।

ট্যুরিস্ট পু’লিশের অ’তিরিক্ত পু’লিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে ৪৫০টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। প্রতিটি হোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা ও পর্যট’কদের নিরাপত্তায় কয়েক স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারে আর যাতে কোনো নেতিবাচক ঘটনা না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পু’লিশ।

জে’লা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, সম্প্রতি কক্সবাজার নিয়ে প্রচারণায় কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। পর্যট’কদের সেবার মান বাড়াতে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে।