ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপালের ৮ বছরের কা’রাদ’ণ্ড

| আপডেট :  ৯ জানুয়ারি ২০২২, ০১:৩৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৯ জানুয়ারি ২০২২, ০১:৩৫ অপরাহ্ণ

মানি লন্ডারিং ও ঘুষ গ্রহণ মা’মলায় সিলেটের সাবেক কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) পার্থ গোপাল বণিকের ৮ বছরের কা’রাদ’ণ্ডাদেশ দিয়েছেন আ’দালত। আজ রোববার (৯ জানুয়ারি) ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আ’দালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম রোববার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন।

ঘুষ নেওয়া ও দু’র্নীতির দুই অ’ভিযোগে পার্থ গোপাল বণিককে ৫ বছর ও তিন বছরের কা’রাদ’ণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি জরিমানা করেছেন বিচারক। পাশাপাশি তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে বলেছেন।তবে মুদ্রাপা’চারের আরেক অ’ভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন সাবেক এই কারা কর্মকর্তা। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে তাকে সব মিলিয়ে সাজা খটতে হবে ৫ বছর। এর মধ্যে থেকে হাজতবাসকালীন সময় বাদ যাবে।

২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার এফডিআর, এক কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক ও ফেনসিডিলসহ কি’শোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন থেকে গ্রে’প্তার হন চট্টগ্রামের তখনকার জে’লার সোহেল রানা বিশ্বাস। সে সময় তিনি গো’য়েন্দাদের জি’জ্ঞাসাবাদে নিজের ঘুষ বাণিজ্যের পেছনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সেখানকার তৎকালীন ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিকের নাম বলেন।

ওই তথ্যের সূত্র ধরে দুদকের অনুসন্ধানী দল পার্থ গোপালকে সেগুনবাগিচার কার্যালয়ে ডেকে জি’জ্ঞাসাবাদ করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই তার ভূতেরগলির ফ্ল্যাটে অ’ভিযান চা’লিয়ে ৮০ লাখ টাকা উ’দ্ধার করার কথা জানায় দুদক।দুদকের কর্মকর্তারা সে সময় বলেছিলেন, উ’দ্ধার হওয়া টাকার মধ্যে পার্থের ফ্ল্যাটের দেয়াল কেবিনেটে গেঞ্জিতে মোড়ানো ছিল ৫০ লাখ টাকা। একটি স্কুল ব্যাগ থেকে উ’দ্ধার করা হয় বাকি ৩০ লাখ টাকা।

আ’টকের সময় পার্থ সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন, এই ৮০ লাখ টাকা তার বৈধ আয় থেকে অর্জিত। এর মধ্যে ৩০ লাখ টাকা তার শাশুড়ি দিয়েছেন, বাকি ৫০ লাখ টাকা তার সারা জীবনের জমানো টাকা। ফ্ল্যাটের নিচে থাকা তার ব্যবহারের গাড়িটির মালিকও তিনি নন, তার বন্ধুর গাড়ি ব্যবহার করেন। যে ফ্ল্যাটে থাকেন তাও তার শাশুড়ির বলে দাবি করেছিলেন তিনি।

পরদিন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বা’দী হয়ে এ মা’মলা দা’য়ের করেন। পার্থ গোপাল বণিককে সাময়িক বরখাস্ত করে স্ব’রা’ষ্ট্র ম’ন্ত্রণালয়।এক বছরের বেশি সময় ত’দন্তের পর ২০২০ সালের অগাস্ট মাসে এ মা’মলায় অ’ভিযোগপত্র দেন ত’দন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।

সেখানে বলা হয়, “পার্থ গোপাল বণিক স’রকারি চাকরিতে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অ’পব্যবহারে করে বিভিন্ন অনিয়ম, দু’র্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকা অ’বৈধভাবে অর্জন করেন। এসব টাকা গো’পন করে তার নামীয় কোনো ব্যাংক হিসাবে জমা না রেখে বিদেশে পা’চারের জন্য নিজ বাসস্থানে লুকিয়ে রেখে দ’ণ্ডবিধির ১৬১ ধারা, দু’র্নীতি দ’মন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দু’র্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শা’স্তিযোগ্য অ’পরাধ করেছেন।”

২০১৪ সালে পদোন্নতি পেয়ে কারা উপ-মহাপরিদর্শক হওয়ার পর পার্থ গোপাল বণিকের বেতন স্কেল হয় ৩১ হাজার ২৫০ টাকা। অ’ভিযোগপত্রে বলা হয়, তার বাসায় পাওয়া অর্থ ওই বেতন স্কেলের সঙ্গে ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’। তিনি কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা তোলেননি, কখনও ওই অর্থ আয়কর বিবরণীতেও প্রদর্শন করেননি।