মা’দক নিরাময় কেন্দ্রের নারী পরিচালক নিজেই মা’দকাসক্ত

| আপডেট :  ৫ জানুয়ারি ২০২২, ১২:৩০ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৫ জানুয়ারি ২০২২, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ

গাজীপুরে একটি মা’দক নিরাময় কেন্দ্র থেকে মা’দক উ’দ্ধার করা হয়েছে। মা’দকাসক্তদের পুনর্বাসনের জন্য কেন্দ্র খোলা হলেও সেখানে চলতো শা’রীরিক, মা’নসিক ও যৌ’ন নি’র্যাতন। কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রো’গীদের কাছে থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। কোনো রো’গী তাদের অভিভাবকদের কাছে অ’ভিযোগ করলে তার ও’পর নি’র্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যেত।

নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক ফিরোজা নাজনীন বাঁধনসহ তার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ছিলেন মা’দকাসক্ত।মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজীপুর জে’লা শহরের ভুরুলিয়া কালাসিকদারের ঘাট এলাকায় ‘ভাওয়াল মা’দকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানে র‌্যা’ব ও মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অ’ভিযানে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

এ ঘটনায় ওই পুনর্বাসন কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাঁধনসহ পাঁচজনকে আ’টক করেছে র‌্যা’ব।তরা জানায়, ওই কেন্দ্র থেকে ৪২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উ’দ্ধার করা হয়। কেন্দ্রটি মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সিলগালা করে দিয়েছে।

র‌্যা’বের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিকালে ওই কেন্দ্রের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, সুনির্দিষ্ট অ’ভিযোগের ভিত্তিতে গো’পন সূত্রে খবর পেয়ে নগরীর ভাওয়াল মা’দকাসক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র নামক একটি প্রতিষ্ঠানে অ’ভিযান চা’লানো হয়।

তিনি বলেন, যেভাবে নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনা, চিকিৎসা দেওয়া ও রো’গীদের সেবা দেওয়ার কথা তা সেখানে হতো না। এ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রো’গীদের মা’নসিক, শা’রীরিক ও যৌ’ন নি’র্যাতন করা হতো বলে কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাঁধনের বি’রুদ্ধে অ’ভিযোগ করেছে রো’গীরা।

তিনি আরো জানান, এখান থেকে শা’রীরিক নি’র্যাতনের ফুট প্রিন্ট পাওয়া গেছে। বিশেষ করে রো’গীদের ঝু’লিয়ে পিটানো এবং শা’রীরিক নি’র্যাতনের প্রমাণ হিসেবে রশি উ’দ্ধার করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের নি’র্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, একটি নিরাময় কেন্দ্র পরিচালনার জন্য যে নিয়ম-কানুন আছে তার অধিকাংশই এখানে মানা হতো না। এ কেন্দ্রে নিন্মমানের খাবার সরবরাহসহ ভর্তিকৃত রো’গীদের জন্য কোনো চিকিৎসক ছিল না। এ কেন্দ্রে যে পরিমান রো’গী থাকার কথা তার চেয়ে বেশি রো’গী ছিল। ২০০৯ সালে কেন্দ্রটি অনুমোদনহীনভাবে শুরু করলেও পরে তার অনুমোদন নেওয়া হয়। মালিক ফিরোজা নাননীন বাঁধন নিয়ম-কানুন না মেনে কেন্দ্রটি পরিচালনা করতে থাকেন।

তিনি বলেন, এ কেন্দ্র চিকিৎসার নামে জো’রপূর্বক রো’গীদের আ’টকে রাখা হতো। এমনও রো’গীও রয়েছেন যিনি তিন বছর ধরে এ কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। রো’গীরা কোনো অনিয়মের বি’রুদ্ধে প্র’তিবাদ করলে তাদের ও’পর নি’র্যাতন করতো মালিকের পালিত কর্মচারীরা। এরকম ৫-৭ জন রো’গী পাওয়া গেছে যাদের ও’পর শা’রীরিক নি’র্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রো’গী জানান, কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা রো’গীকে কেন্দ্রের মালিক ফিরোজা নাজনীন বাঁধনের পছন্দ হলে তার ও’পর যৌ’ন নি’র্যাতন চা’লানো হতো।অপর এক রো’গীর মা জানান, তার ১৬ বছরের একমাত্র ছেলে সাত মাস ধরে এ কেন্দ্রে অবস্থান করছে। এ জন্য তার কাছে দেড় লাখ টাকা নেয়া হয়েছে। ছেলে নিরাময় কেন্দ্র ছেড়ে বাড়িতে ফিরতে চাচ্ছে না।

ওই কেন্দ্রে থাকা ২৮ জন রো’গীকে মঙ্গলবার বিকালে তাদের পরিবারের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।প্রেস ব্রিফিংকালে গাজীপুর মা’দকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামীম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।