মাস্টারবেশন বা হস্তমৈথুন – আপনার ছেলে বা ভাইয়ের অনিশ্চিত আগামী: মোবাশ্বের আহমেদ

| আপডেট :  ৮ ডিসেম্বর ২০২০, ০৩:৪২ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ ডিসেম্বর ২০২০, ০৩:৪২ অপরাহ্ণ

মাস্টারবেশন বা হস্তমৈথুন – আপনার ছেলে বা ভাইয়ের অনিশ্চিত আগামী…

এক বন্ধু গতকাল কল দিয়েছে দোস্ত বিয়ে ৫ দিন পর। আলহামদুলিল্লাহ সুসংবাদ তো। না রে দোস্ত ভয় লাগছে।
আমি বললাম এটা খুউব স্বাভাবিক। জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ন অধ্যায় ভয় লাগা স্বাভাবিক।

বলিস কি? দোস্ত সেটা না আমার সমস্যা ।

কি সমস্যা?
দোস্ত মেয়েদের কথা ভাবলেই সব শেষ। তোর ভাবি তো দুইদিন পরই ভাগবে!
বললাম বিয়ে করা বাদ দে।

বলল বলিস কি? বললাম তোর যে সমস্যা এটাকে প্রিম্যাচুর ইজাকুলেশন বা দ্রুত বীর্যপাত বলে। বললাম এটা নার্ভাসনেস এর জন্য হতে পারে। টেনশন নিস না।
না রে দোস্ত তুই বুঝছিস না। আমার রেগুলার স্বপ্নদোষ হয়।
বললাম এটাও অস্বাভাবিক না। তবে রেগুলার মানে কি? কতদিন পর পর ?
বলল একদিন দুইদিন পর পর।

আচ্ছা বল তো কত বছর বয়স থেকে মাস্টারবেশন করিস? আর দিনে কতবার পর্যন্ত করেছিছ?

গাঁইগুঁই করে বলল ক্লাশ এইট থেকে এইতো বাদ দিলাম ১ মাস আগে। মোট ১০ বছর প্রায়। আর দিনে কখনো ৫ থেকে ৬ বারও করেছি আবার কোন কোন সময় সপ্তাহ খানেক বাদ ও দিছি। বললাম সাধারনত একটা ছেলে ২১ বছরে বিয়ে করে এবং একটা শৃংখল যৌন জীবন পালন করে। এখন তোর বয়স ২৬ এবং ১০ বছর বিশৃঙ্খল যৌনজীবনের জন্য তোর যৌন বয়স ৩৬ এর দিকে তাহলে এটাই স্বাভাবিক। তারপর এসব চিন্তা না করতে এবং ডাক্তারসুলভ বললাম চিন্তা না করতে সব ঠিক হয়ে যাবে।

এক বড় আপু কিছুদিন আগে তার বান্ধবীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলল একটু ফ্রী হলে কথা বলিস তো কি যেন প্রবলেম। জানলাম বিয়ের বাসররাতের পর ছেলে আর একসাথে থাকে না। বাসররাতে নাকি একটু আদর করার পর বলেছে যা গেছে গা! তারপর নেমে সোফায় ঘুমাইছে। বললাম ডাক্তারের কাছে যেতে বলেন। বলে ডাক্তারের কাছে যেতে বললে নাকি তালাক দিবে।

রেগুলার এই সমস্যা শুনতে শুনতে এতটাই খারাপ লাগে যে ভাবি দেশটা একটা নপুংসক জাতি পেতে যাচ্ছে নাকি আগামীতে?

যদিও এ ঘটনাগুলোর শুরু ক্লাশ সেভেন এইটের সময়। সব চেয়ে মারাত্মক হলো বয়ঃসন্ধিকালের সময় টাতে। এসময় ছেলেরা বন্ধুদের সাথে মিশে বা পর্ণ দেখে ছেলেরা মাস্টারবেশনে অভ্যস্থ হয়ে উঠে। সিমেন বা বীর্য্যের কম্পোজিশন দেখলেই বুঝবেন কেন এটা এত গুরুত্ববহ। অনেকেই পশ্চিমাদের উদাহরন টানেন কিন্তু ওদের ডায়েট প্ল্যান আমাদের থেকে পুরোই আলাদা আর আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে ওদের টানা বাস্তবসম্মত না। সিমেনে ফ্রুক্টোজ, ফসফোরাইলকোলিন, এসকরবিক এসিড, ফ্লাভিনস, প্রোস্টাগ্লান্ডিন, সাইট্রিক এসিড, জিংক, কোলেষ্টেরোল, ফসফোলিপিড ইত্যাদি আছে যেগুলো বের করা না হলে পুনরায় এবজররপশন হয়ে শরীর, গোনাডস (যৌনাংগ)) এবং মস্তিষ্কের গ্রোথ এন্ড ডিভলপমেন্টের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

এগুলো যখন কেউ ১৩ থেকে ১৪ বছর বয়সেই হঠাৎ করে বেশি পরিমানে বের করে দেওয়া শুরু করে তখন শরীর ও ব্রেনের গ্রোথ ঠিকমত হয় না। হতাশা, অবসাদ আর অজানা ভীতি পেয়ে বসে।

আরও বেশী ক্ষতি করে এর ফলে সৃষ্টি হওয়া পাপবোধ। এরা যৌনজীবনে বেশিরভাগই প্রিম্যাচুর ইজাকুলেশন এ ভোগে। শুরু হয় পারিবারিক কলহ আর অশান্তি।
যেটা নিয়ন্ত্রনের ভার এখনো আপনার হাতে। আপনার ছেলে বা আপনার ভাইকে এর কুফল সম্পর্কে জানান। সে নেটে কি করে মনিটরিং করুন। সামাজিক কাজে বেশি এক্টিভ করুন। নইলে আপনার ছেলে বা ভাইটি দেখবেন কেমন যেন বাঁকা হয়ে হাঁটছে মেরুদণ্ড হীন আর মস্তিষ্ক এর বিকাশ ঠিকমত না হওয়ায় ব্যক্তিত্বহীন তো বটেই।
(এই সিরিজ লেখা শুরু করেছি মানুষের সচেতনতার জন্য মেডিকেলীয় রেফারেন্সের জন্য নয়। এগুলোর বেশিরভাগই ডাঃ দিলীপ স্যার সহ অন্য অনেক প্রফেসরের মুল থিমগুলোকে গল্প আকারে লিখেছি। সিরিজের সপ্তম লেখা। টপিক্সঃ মাস্টারবেশন এবং প্রিম্যাচুর ইজাকুলেশন )