নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ‘শান্তি মিশনেও পড়তে পারে’: ফখরুল

| আপডেট :  ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪:৩০ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪:৩০ অপরাহ্ণ

র‌্যা’পিড অ্যা’কশন ব্যা’টালিয়নের (র‌্যা’ব) বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার বি’রুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নি’ষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে জাতিসংঘ শান্তি মিশনেও ‘প্রভাব পড়তে পারে’ বলে আ’শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাস’চিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এই নি’ষেধাজ্ঞার ফলে একটি পরাশক্তি রাষ্ট্র কর্তৃক বড় ধরনের মা’নবাধিকার ল’ঙ্ঘনকারী হিসাবে চিহ্নিত হওয়ায় ভবি’ষ্যতে জাতিসংঘের শান্তি মিশনে মোতায়েনও প্রভাবিত করতে পারে। এর ফলে আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।”

ফখরুল বলেন, “রূঢ় শোনালেও এটা অস্বীকার করার সুযোগ নাই, গু’রুতর মা’নবাধিকার ল’ঙ্ঘনের অভিযোগে মা’র্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এই নি’ষেধাজ্ঞা বর্তমান চলমান গণ ও মানবতাবি’রোধী স’রকারের জন্য সমগ্র বিশ্ববাসীর পক্ষ থেকে একটি শক্তিশালী বার্তা। সেটা হল কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এই ধরনের বিচারহীন সংস্কৃতি চলতে পারে না।

“কেবলমাত্র একটি অগণতান্ত্রিক কর্তৃত্ববা’দী স’রকারের শাসনকালেই এই ধরনের মা’নবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। বাংলাদেশে বিশ্ববাসীর কাছে বর্তমানে সেরকমই একটি কর্তৃত্ববা’দী ও মা’নবাধিকার ল’ঙ্ঘনকারী এবং দু’র্নীতিআশ্রয়ী স’রকার ব্যবস্থা চালু রয়েছে।”

আন্তর্জাতিক মা’নবাধিকার দিবস উপলক্ষে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তর ‘গু’রুতর মা’নবাধিকার ল’ঙ্ঘনের’ অ’ভিযোগে বিভিন্ন দেশের ১৫ ব্যক্তি ও ১০ প্রতিষ্ঠানের সম্পদের ও’পর নি’ষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেয়।এর প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের পদক্ষেপ ‘স’ন্ত্রাসীদেরই উৎসাহী করবে’।

আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ওই নি’ষেধাজ্ঞা তুলতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করবেন, তাতে সফল হওয়ার বি’ষয়েও তিনি আশাবা’দী।বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপি মনে করে, র‌্যা’বের উপরে মা’র্কিন নি’ষেধাজ্ঞার সকল দায়িত্ব স’রকারকেই নিতে হবে। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করবার লক্ষে আইন শৃঙ্খলাকারী বাহিনীকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করার সকল দায়িত্ব তাদেরই।”

যুক্তরাষ্ট্র যাতে এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়, সেজন্য বিএনপি ‘লবিস্ট দিয়ে কাজ করেছে’ বলে যে অ’ভিযোগ ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা করেছেন, সে বি’ষয়ে মির্জা ফখরুলকে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক।উত্তরে বিএনপি মহাস’চিব বলেন, “এটা তো খুব স্বাভাবিক যে, এখন তারা চিহ্নিত হয়ে গেছে।

এখন তাদের উপরে যখন সমস্ত কিছু পড়বে, তখন দায় তাদেরকেই নিতে হবে। তখন তারা দায় অন্যের ঘাড়ে চা’পানোর চেষ্টা করবে। এটাতে জনগণের বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই।“র‌্যা’ব তো আমরা চালাই না, স’রকার চা’লায়। তাদেরকে নির্দেশ দেয় স’রকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয় স’রকার। আমাদের কী করার থাকতে পারে?”

মির্জা ফখরুলের ভাষায়, র‌্যা’বের বি’রুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ ‘কার্যত স’রকারের রাজনৈতিক দায়‘।“কারণ আওয়ামী লীগ স’রকার গণতন্ত্রহীন স’রকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য র‌্যা’বকে বিভিন্ন আইনবি’রোধী সংস্কৃতির অংশ হতে বা’ধ্য করেছে। অতত্রব রাজনৈতিক স’রকারের দায় বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া যাবে না।

“তবে যারা ইতোমধ্যে স’রকারেরর এই ধরনের অ’বৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার জন্য নিজেদেরকে অংশীদারে পরিণত করে নানা ধরনের বিচারবর্হিভূত সংস্কৃতি চালু করতে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের বি’রুদ্ধে অ’ভিযোগ দা’য়ের করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।”

রাষ্ট্রপতির সংলাপ প্রসঙ্গ
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপের আয়োজনের প্রসঙ্গও সংবাদ সম্মেলনে আসে।এ বি’ষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা সংলাপের আয়োজন নিয়ে ‘কিছুই জানেন না’, সুতরাং এখন কিছু বলতেও পারবেন না।সংলাপের আমন্ত্রণ পেলে বঙ্গভবনে যাবেন কিনা- এই প্রশ্নে বিএনপি মহাস’চিব বলেন, “আমরা কিছুই জানি না।”মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রহীন সমাজে’ জবাবদিহিতা পদে পদে বিঘ্নিত হয়। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে তা বিদ্যমান’।

“তাই দেশে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ স’রকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজনের পথ পরিষ্কার করে জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সর্বাত্মক ব্যবস্থা করে জবাবদিহিমূলক স’রকার প্রতিষ্ঠা করে দেশে মা’নবাধিকার ও বিচার পাওয়ার অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫০ বছর পালনকালে এটাই হতে পারে দেশবাসীর জন্য সর্বোত্তম প্রাপ্তি।”

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাস’চিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স উপস্থিত ছিলেন।

‘বিএনপির যৌথ সভা’

বিএনপি মহাস’চিবের সভাপতিত্বে এদিন বিএনপির ও অঙ্গসংগঠনগুলোর যৌথসভা হয়। এই সভায় বিজয় শোভাযাত্রাসহ সারাদেশে জে’লা পর্যায়ে সমাবেশের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়।

বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, অঙ্গসংগঠনের আমিনুল হক, সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম, আবদুল কালাম আজাদ, হেলাল খান, জাকির হোসেন রোকন, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহিম, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ফজলুর রহমান খোকন সভায় উপস্থিত ছিলেন। সূত্রঃ বিডি নিউজ