ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরীমনির শুটিং বিশেষ ফোন, মাঝপথ থেকে ফিরেন মুরাদ

| আপডেট :  ১১ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১১ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ

আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনির সঙ্গে দেখা করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পথে রওনা হয়েছিলেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের আপত্তির মুখে তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সফর থেমে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুরাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সফরের দিনক্ষণ ছিল গত ১৪ই অক্টোবর। জে’লা প্রশাসনে

প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্ম’দ গিয়াস উদ্দিনের পাঠানো এ সফরসূচিতে ঢাকার খামারবাড়ী পূজামণ্ডপ থেকে ওইদিন সকাল ১১ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জে’লার উদ্দেশে তার যাত্রা করার কথা বলা হয়। সফরের উদ্দেশ্য হিসেবে দুুপুর ১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অষ্টগ্রাম কালীবাড়ীতে প্রতিমন্ত্রীর চলচ্চিত্র নির্মাণ কার্যক্রম পরিদর্শনের কথা বলা হয়।

একইদিন তার নির্বাচনী এলাকা জামালপুর-৪ আসনের সরিষাবাড়ী উপজে’লা সফরের সময়ক্ষণও নির্ধারিত ছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে বেলা ৩টায় জামালপুরের পথে রওনা হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়- সফরসূচি তাদের কাছে পৌঁছার পরপরই প্রতিমন্ত্রী ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান।

তখন কুমিল্লার ঘটনার কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যতিব্যস্ত ছিল স্থানীয় প্রশাসন। এরমধ্যে প্রতিমন্ত্রীর আগমনে তার নিরাপত্তা ও প্রটোকলে বাড়তি চা’পের মুখে পড়তে হবে প্রশাসনকে। যা ভাবিয়ে তোলে। সে কারণে প্রশাসন ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসতে তাকে নিরুৎসাহিত করে। কিন্তু এরইমধ্যে প্রতিমন্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পথে রওনা হয়ে ঢাকার ডেমরা এলাকা অতিক্রম করে ফে’লেন।

সে সময় এখান থেকে ফোন করে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাস্তবতা বোঝানো হয়। জে’লা পুলিশের পদস্থ এক কর্মকর্তার কাছ থেকে এই বার্তা পেয়ে প্রতিমন্ত্রী গাড়ি ঘুরিয়ে ফে’লেন। তবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী আসবেন বলে জে’লা তথ্য অফিসের স্টাফদের সবাই সকাল থেকে সেখানে অবস্থান করতে থাকেন।

জানা যায়, তার এই সফরের ৩ দিন আগে ১১ই অক্টোবর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজে’লার অষ্টগ্রামের কালীমন্দির বটতলীতে শুরু হয় ওয়েব সিনেমা ‘গুনিন’-এর শুটিং। পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত এ সিনেমার নায়ক-নায়িকারা হচ্ছেন- শরিফুল রাজ ও পরীমনি। তবে প্রথম’দিন থেকে নায়ক শরিফুলই সেখানে কাজ করছিলেন। যদিও পরীমনির আসার খবরে উৎসুক মানুষ ভিড় জমিয়েছিল। সেজন্যে শুটিং স্পটে ১০ জন পুলিশও মোতায়েন করা হয়।

মা’দক মা’মলায় জা’মিনের পর প্রথম ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে এসে ‘গুনিন’ এর শুটিংয়ে অংশ নেন পরীমনি। এখানে শুটিং ইউনিট ৭ দিন ধরে কাজ করে বলে প্রশাসন সূত্র জানায়। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে জে’লা তথ্য অফিসের এক কর্মচারী জানান- আমরা গেলেও সেখানে মন্ত্রী আসেননি। তবে পরীমনি ওইদিন শুটিং স্পটে ছিলেন। একটা দুর্গম জায়গায় এই শুটিং হচ্ছিল। সেখানেতো গাড়িই যায়না। মাঠের মাঝে এক বটগাছের নিচে শুটিং স্পট। আমাদের যেতেই ক’ষ্ট হয়েছে। এ রকম জায়গায় কি করে প্রো’গ্রাম দিয়েছেন মন্ত্রী। তা আমাদের বোধগম্য হয়নি।

এদিকে প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সফরের এই ব্য’র্থতার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সিধা করার হু’মকি দেন। ঢাকায় ৭ই নভেম্বরে মুক্তিযো’দ্ধা-সৈনিক হ’’ত্যা দিবস পালনে বাংলাদেশ মুক্তিযু’দ্ধ মঞ্চ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে ডা. মুরাদ বলেন-‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া কি বাংলাদেশের বাইরের কোন জে’লারে। সিধা বানাইয়া ফালামু, ডা. মুরাদ হাসান যখন আসবো না সিধা বানাইয়া ফেলবো, সিধা; এই রকম (আঙ্গুল সোজা করে) পাটকাঠির মতো সোজা হইয়া যাবা, বলো ঠিক না বেঠিক (স্লোগান)। সব ঠিক। ঠিকঠাক থাকতে হবে সবাইকে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রসঙ্গে এমন বক্তব্যের আগে মুরাদ বলেন- ‘বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলাদেশ, এই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। তারাই রাষ্ট্রের মালিক। আমরা ওই রাষ্ট্রে বসবাস করবো শান্তিপূর্ণভাবে। এখানে কোনো নৈরাজ্য, ভা’ঙচুরের স্থান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার…ওই মানুষগুলোকে বলে দিতে চাই আরেকবার যদি না’শকতা, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য- বঙ্গবন্ধুর ছবিতে আ’ঘাত করো তোমাদের হাত-পা ভে’ঙে ১৪ হাত মাটির নিচে পুতে দেবো।’ প্রতিমন্ত্রীর ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সিধা করে ফেলার বক্তব্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সূত্রঃ মানব জমিন