সব
অসৌজন্যমূলক বক্তব্য ও অশালীন কথোপকথনের জেরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে এবার বিদেশ যাওয়ার চেষ্টায় আছেন বলে জানা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে দেশের বাইরে যেতে বিমানের টিকিটও সংগ্রহ করেছেন তিনি।
জানা গেছে, গত সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মধ্যেই চট্টগ্রামে চলে যান ডা. মুরাদ। নারীর প্রতি শিষ্টাচারবহির্ভূত অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর মঙ্গলবার বিকেলে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এর পর থেকেই সপরিবারে বাইরের দেশের চেষ্টা শুরু করেন। পরে চূড়ান্তভাবে কানাডা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ডা. মুরাদ।
প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ডা. মুরাদের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের কিছুক্ষণ আগে মঙ্গলবার তার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় তথ্য ও সম্প্রচার ম’ন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।
যদিও লাল পাসপোর্ট থাকা সত্ত্বেও অন্য দেশে যেতে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। লাল পাসপোর্টধারী ব্যক্তি স’রকারি আদেশ (জিও) ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে সদ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা ডা. মুরাদ জিও না থাকায় বিদেশগমনে জটিলতায় পড়তে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া তিনি এখন গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। এ অবস্থায় তার বিদেশগমন অনিশ্চিত হতে পারে বলে জানিয়েছে ম’ন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
এর আগে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় তথ্য ও সম্প্রচার ম’ন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে পাঠান ডা. মুরাদ। পরে বিকেল ৩টায় তার পক্ষে পদত্যাগপত্রটি মন্ত্রিপরিষদস’চিবের দপ্তরে জমা দেন তথ্য প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্ম’দ গিয়াস উদ্দিন।
এদিকে তথ্য ম’ন্ত্রণালয়ের নামফলক থেকেও মুরাদ হাসানের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে থাকা প্রতিমন্ত্রীর তালিকা থেকেও তার নামটি বাদ দেওয়া হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার ম’ন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও তার নাম নেই।
পরদিন মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সকালেই পদত্যাগপত্র তথ্য ও সম্প্রচার ম’ন্ত্রণালয়ে পাঠান মুরাদ হাসান। পরে মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একজন কর্মকর্তা পৌঁছে দেন। সেই পদত্যাগপত্রের সারসংক্ষেপ তৈরি করে সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিমন্ত্রী পদে মুরাদ হাসানের অব্যাহতির বি’ষয়টি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে ডা. মুরাদের করা নারীবিদ্বেষী মন্তব্য ঘিরে কদিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা চলছিল। এরই মধ্যে সোমবার রাতে একজন চিত্রনায়িকার সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর ফোনালাপের একটি কল রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে নায়িকার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নোং’রা ও অ’শ্লীল ভাষা ব্যবহার করেন। একই সঙ্গে তাকে আ’পত্তিকর প্রস্তাব ও হ’’ত্যার হু’মকিও দেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এমনকি মুরাদের শা’স্তিরও দাবি ওঠে।
২০১৯ সালের মে মাসে স্বা’স্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে মুরাদ হাসানকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ডা. মুরাদ জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী উপজে’লা) আসনের এমপি। তার বাবা প্রয়াত মতিউর রহমান তালুকদার জামালপুর জে’লা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। মুরাদ জে’লা আওয়ামী লীগের স্বা’স্থ্য ও জনসংখ্যা বি’ষয়ক সম্পাদক ছিলেন।