মুরাদ টাকলা শুধুমাত্র ভাষা বিকৃতির ফল!

| আপডেট :  ৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ

বর্তমানে বাংলাদেশে আলোচিত নাম সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। তার বি’তর্কি’ত মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নেটিজেনরা অনেকেই তাকে মুরাদ টাকলা অভিধায় ভূষিত করেছেন। তবে এই মুরাদ টাকলা শব্দের পেছনেও রয়েছে এক ইতিহাস।

মূলত রোমান হরফে বাংলা শব্দ ‘মুরোদ থাকলেও’ লেখা থাকলেও ভাষাগত অজ্ঞতাবশত একজন শব্দটির অমুরাদ করেন মুরাদ টাকলা। আর সেখান থেকেই এর প্রচলন শুরু। এক কথায় শব্দটার সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বেশ আগে থেকেই পরিচিত।

অর্থাৎ মুরাদ টাকলা বাংলাভাষার কিবোর্ড বিপর্যয়গ্রস্ত বি”কৃত একটি রূপ। ডিজিটাল মাধ্যমে রোমান হরফে বাংলা লিখতে গিয়ে ভাষাগত অজ্ঞতাবশত এ ভাষার উদ্ভব।মুরাদ টাকলার আক্ষরিক বাংলা অর্থ মুরোদ থাকলে,এর সাথে মুরাদ নামের কোন ব্যক্তি সংশ্লিষ্টতা নেই।

জানা যায়,জয়ন্ত কুমার নামে এক নেটিজেন ফেসবুকে বাংলিশ “মুরোদ থাকলে যুক্তি দিয়ে বল, ফালতু পিক দিছোস ক্যান?লেখাপড়া কইরা কথা বল” লেখেন। কিন্তু এর বাংলা করতে গিয়ে একজন মুরোদ থাকলে এর জায়গায় অর্থ দাঁড় করান মুরাদ টাকলা।তাৎক্ষণিকভাবে এর প্রবক্তা কে মুরাদ টাকলা উপাধিতে ভূষিত করা হয় এবং পরবর্তীতে বিভ্রান্তিকর উচ্চারণে রোমান হরফে বাংলা লেখকদের জন্য সর্বোচ্চ অসম্মানজনক উপাধি হিসেবে মুরাদ টাকলা প্রচলিত হয়ে যায়। এরপর থেকে বাংলা কথা যারা বি”কৃত বানানে লেখেন তাদের মুরাদ টাকলা নামে ডাকা শুরু হয়। মুরাদ টাকলা নামটি মুরাদ নামক কোন ব্যক্তিকে হেও করে নয় বা কোন টাক মানুষকে অ’পমান করে ও নয়।

পরবর্তীতে ফেসবুকে মুরাদ টাকলা নামে একটি পেজ চালু হয় ২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর। অর্থাৎ ৯ বছর আগে ৩ লাখ ৭৩ হাজার এর মত নেটিজেন পেজটিতে লাইক দিয়েছে এবং ফলো করছে মুরাদ টাকলা ফেসবুক পেজটিতে। বাংলা ভাষার বি”কৃতি রোধে ট্রল করে হোক আর মানুষকে মজা দিয়ে হোক সচেতনতা ছড়িয়ে যাচ্ছে পেজটি।

কিন্তু বর্তমানের সদ্য পদত্যাগী তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার মুরাদ হাসান এর বি’তর্কি’ত সব মন্তব্যের জেরে নিটিজেনরা মুরাদ টাকলা নামে অভিহিত করেন।নানা বি’ষয়ে নিজেকে সবসময় আলোচনা রাখেন মুরাদ হাসান।

গত অক্টোবরে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বি’রোধিতা করে আলোচনায় আসেন মুরাদ হাসান। বি’ষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। এই ঘটনার পরপর তার পুরনো কিছু ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। তখন থেকেই একের পর এক বি”কৃত অশালীন বক্তব্য প্রতিহিংসামূলক আ’ক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গি সব মিলিয়ে ভাইরাল হয়ে আলোচনায় ছিলেন ডা. মুরাদ হাসান।

একটি টিভি টকশোতে উপস্থিত বিএনপি’র একজন সাবেক নারী এমপিকে মা’নসিক রো’গী বলে অভিহিত করে। তার সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হন। এছাড়াও ঐতিহ্যবাহী একটি সামাজিক ক্লাবে ঘটিয়েছেন অশভন কান্ড। ক্লাব কর্তাদের সদস্যদের তুমুল আপত্তির মুখে তাকে বের করে দেওয়া হয়।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমাকে নিয়ে বলা কুরুচিপূর্ণ ও আ’পত্তিকর বক্তব্য তাকে পুনরায় সমালোচনার মুখে ফে’লে। সবশেষ,চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার একটি কথোপকথন এর অডিও ভাই’রাস হলে সেই সমালোচনার ঝড় আরো তীব্র হয়।সেখানে তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মাহিকে ধ”ণের হু’মকি দেয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তুলে আনার হু’মকি দেন। পুরো বক্তব্য কিছু অশ্রাব্য শব্দ উচ্চারিত হয়েছে। বি’ষয়টি এখন টক অব দ্য কান্ট্রি যার জেরে মন্ত্রিত্ব যায় তার। সুত্রঃ আরটিভি নিউজ