মন্ত্রীসভায় রদবদলের গুঞ্জন

| আপডেট :  ৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:৩২ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:৩২ অপরাহ্ণ

মন্ত্রীসভা থেকে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদের বাদ যাওয়ার পরেই নতুন করে মন্ত্রীসভায় পদত্যাগের গুঞ্জন শুরু হয়েছে। গতকাল বর্তমান মন্ত্রীসভার তিন বছর মেয়াদপূর্তি হয়েছে। এখন নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ দল সাজাচ্ছে এবং স’রকার পরিচালনা করছে। আর সে কারণেই মন্ত্রীসভায় রদবদলের গুঞ্জন নতুন করে উঠেছে। বর্তমান মন্ত্রীসভা গঠিত হয়েছিল ২০১৯9 সালের ৭ জানুয়ারি। মন্ত্রীসভায় খুব বড় ধরনের রদবদল কখনো ঘটেনি, একদফায় মন্ত্রীসভার কয়েকজনের দপ্তর পরিবর্তন হয়েছিল।

সেই রদবদলে অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিমকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে মৎস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় দেয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় মন্ত্রীসভায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর মৃ’ত্যুর পর নতুন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হয়েছিল আর শেষ পর্যায়ে মন্ত্রীসভায় ডক্টর শামসুল আলমকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। কিন্তু বিভিন্ন সময় মন্ত্রীসভায় বড় ধরনের রদবদলের গুঞ্জন ও আলাপ-আলোচনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত এই রদবদল হয়নি। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীদেরকে সুযোগ দিয়ে তাদেরকে সক্ষমতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছেন।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মুরাদের ঘটনার পর যেসব তথ্য বেরিয়ে আসছে তাতে মন্ত্রীসভার রদবদল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিভিন্ন মহল মনে করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে বিভিন্ন নির্বাচনের আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের যে নির্বাচনী অঙ্গীকার তা পূরণের তাগিদ অনুভব করছে স’রকার। অনেক মন্ত্রণালয়ের স্থবিরতা বিরাজ করছে, অনেক মন্ত্রীরা রুটিন কাজও ঠিকমতো করতে পারছে না, সবাই তাকিয়ে থাকে প্রধানমন্ত্রীর দিকে।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইস্যুতে স’রকারের উপর চা’প বেড়েছে। আর এ কারণেই নির্বাচনের আগে মন্ত্রীসভার একটি রদবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স’রকার প্রচণ্ড ব্যস্ত, আমাদের বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপিত হবে। এই সময়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফর করবেন। ভারতের রাষ্ট্রপতির সফরের পর পর প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর করবেন। ভারতের সফর শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই প্রধানমন্ত্রী দুই দিনের সফরে মালদ্বীপ যাবেন। অনেকে মনে করছেন নতুন বছরের শুরুতেই মন্ত্রীসভা রদবদল হতে পারে।

এ নিয়ে স’রকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে বলে একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানাচ্ছে। ভবি’ষ্যতের দিনগুলোতে রাজনীতি প্রাধান্য পাবে, স’রকার বি’রোধী রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি নির্বাচনে সকল দলকে আনার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক সমঝোতা, দরকষাকষি ইত্যাদির প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষ করে বিএনপি ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক স’রকার ছাড়া তারা কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। এরকম বাস্তবতায় মন্ত্রীসভায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজন হতে পারে বলেও অনেকে ধারণা করছেন।

সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রীসভার রদবদল প্রধানমন্ত্রীর একক এখতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী যখন যেভাবে বিবেচনা করবেন সেভাবে তিনি মন্ত্রীসভার রদবদল করবেন। অন্যান্যবার বিভিন্ন সময় মন্ত্রীসভায় রদবদল করলেও এবার তিনি মন্ত্রীসভার বড় রকমের পরিবর্তনের পথে পা বাড়াননি। এটি প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ব্যক্তিগত বি’ষয়। যদিও মন্ত্রীসভায় অনেক সদস্যদের দায়িত্ব পালনের সফলতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

মন্ত্রীসভার অনেক সদস্যই গত তিন বছরে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন। কিন্তু তারপরও তাদের উপরই প্রধানমন্ত্রী আস্থা রেখেছেন। তবে এখন মুরাদের ঘটনার পর এবং বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক ঘটনার প্রেক্ষিতে মন্ত্রীসভা একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এখন দেখার বি’ষয় যে প্রধানমন্ত্রী আদৌ মন্ত্রীসভা রদবদল করেন কিনা। সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার