তারেকের বউ ডাক্তার, কই ছেলের বউ তো কোনোদিন দেখতে আসলো না: প্রধানমন্ত্রী

| আপডেট :  ৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:২৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:২৫ অপরাহ্ণ

বুধবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আওয়ামী যুবলীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রীর স’রকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। ডি’বিসি টিভি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দেশের সব থেকে ব্যয়বহুল হাসপাতালে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিএনপির নেতাদের জিজ্ঞাসা করি, তারা যে সহানুভূতি দেখাতে বলে, তারা যে সহযোগিতা চায়, খালেদা জিয়া কী আচরণ করেছে? একুশে আগস্ট যে গ্রে’নেড হা’মলা তার আগে খালেদা জিয়ার কী বক্তব্য ছিলো? (খালেদা বলেছিলেন) যে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা কোনোদিন বি’রোধী দলের নেতাও হতে পারবে না। এই বক্তৃতাই তো খালেদা জিয়া দিয়েছিলো এবং (বলেছিল) আওয়ামী লীগ একশ বছরেও ক্ষমতায় যেতে পারবে না। আল্লাহর খেলা, এটা বোঝা তো ভার। বরং খালেদা জিয়াই প্রধানমন্ত্রী হতে পারে নাই, বি’রোধী দলীয় নেতাও হতে পারেনি। এটা তার ও’পরেই ফলে গেছে। ঢাকা পোস্ট

তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশে সব থেকে দামি যে হাসপাতাল, যে হাসপাতাল সব থেকে ব্যয়বহুল, সেখানেই কিন্তু তার চিকিৎসা হচ্ছে। তার ছেলের বউতো ডাক্তার। তারেকের বউ ডাক্তার। শুনেছি সে না কি অনলাইনে শাশুড়িকে দেখে। কই ছেলে, ছেলের বউ তো কোনোদিন দেখতে আসলো না। অবশ্য কোকোর বউ এসেছে। তারাতো আসে নাই। যাই হোক, তবুও বিএনপি এত দিন পর একটা সুযোগ পেয়েছে। খালেদা জিয়ার অ’সুস্থতার এই দাবিতে তারা আন্দোলন করছে। খুব ভালো, তারা আন্দোলন করুক। কিন্তু আমার যতোটুকু করার ছিলো সেটা কিন্তু করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্যাটকোর কেস তার বি’রুদ্ধে, নাইকোর কেস তার বি’রুদ্ধে এবং এটা কিন্তু আমাদের না। আমেরিকার এফবিআই খুঁজে বের করেছে। সিঙ্গাপুরে তার এবং তার ছেলের দু’র্নীতি বেরিয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাই বের করেছে। সেই কেসগুলোতো আছেই। সবচেয়ে বড় কথা, এতিম’দের জন্য টাকা এসেছিল, সেই এতিম’দের টাকা এতিম’দের হাতে কোনোদিন পৌঁছায় নাই। সে টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে রেখে দিয়েছে। বাসস

তিনি আরও বলেন, নিজেই খেয়েছে সেই টাকা, খালেদা জিয়াই ভোগ করেছে এতিমের অর্থ। কাজেই সেই সাজা পেয়েছে এবং সেই সাজা সে ভোগ করছে। তারপর সে কা’রাগারে ছিলো। খালেদা জিয়ার বড় বোন আর ভাই আমার কাছে এসেছে। বোন, বোনের স্বামী, ভাই এরা সব এসেছিল। আসলো যখন খুব স্বাভাবিকভাবে রেহা’নাও আমার সাথে উপস্থিত ছিলো। একটা মানবিক দিক থেকে নির্বাহী যে ক্ষমতাটা আমার আছে সেটার মাধ্যমে তার সাজাটা স্থগিত করে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি এবং চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছি।

স’রকার প্রধান বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে এ দেশের কী অবস্থা ছিল? আজকে তার চিকিৎসার জন্য এত চেঁচামেচি করে বেড়াচ্ছে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে আমাদের সাবেক সে’নাপ্রধান জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমানকে সিএমএইচে পর্যন্ত চিকিৎসা করতে দেয় নাই। এমন কী সে যখন আইসিইউতে ভর্তি তাকে স্ট্রেচারে করে কোর্টে নিয়ে হাজির করেছে। তাকে জেনারেল পদ দেওয়া হয়েছিল, সেটা বাতিল করে দিয়েছিল। তার প্রমোশনও বাতিল করেছিল। আমি সে’নাবা’হিনীতে যখন নারীদের ভর্তি নিশ্চিত করি মোস্তাফিজের ছোট মেয়ে প্রথম ব্যাচে জয়েন করে। তার পাসিং আউট প্যারেড যখন হয় তখন খালেদা জিয়া ক্ষমতায়। আমি একটা নিয়ম করেছিলাম সেটা এখনো আছে চলমান যে, বাবা-মা উপস্থিত থাকবে। তারা নিজের হাতে তার স’ন্তানকে ব্যাচ পরাবে। দুর্ভাগ্যের বি’ষয় হলো, খালেদা জিয়া জেনারেল মোস্তাফিজ এবং তার স্ত্রীকে আসতে দেয়নি। তার মেয়ের ব্যাচটা তারা পরাতে পারেনি। অথচ এরাই ছিল আমার সে’না বাহিনীতে প্রথম নারী অফিসার। কিন্তু মোস্তাফিজের সেই পারমিশনটা পর্যন্ত ছিল না। এই হলো খালেদা জিয়া।

শেখ হাসিনা বলেন, এরশাদকে তো কা’রাগারে ব’ন্দি করে রেখেছিল। তাকে চিকিৎসার জন্য কোনোদিনও সুযোগ করে দেয়নি। রওশন এরশাদকে দেয়নি। আবার জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় আমাদের সাজেদা চৌধুরীর অপারেশন হয়েছিল। ঘা শুকায়নি। সেই ব্যান্ডেজ অবস্থায় তাকে গ্রে’ফতার করে জিয়াউর রহমান জে’লে ভরেছিল। ঠিক একই অবস্থা মতিয়া চৌধুরীর। তাকেও তখন জে’লে দিয়েছিল। তারও তখন টিবি হয়েছিল, অ’সুস্থ ছিল। তাকেও জে’লে দিয়েছিল। এ রকম বহু অন্যায় অবিচারের কথা।

তিনি বলেন, আমাদের পার্টির অনেক নেতাকে গ্রে’প্তার করে যে অকথ্য অ’ত্যাচার করেছে- বাহাউদ্দিন নাছিম থেকে শুরু করে মহিউদ্দিন খান আলমগীর, সাবের হোসেন, শেখ সেলিমসহ বহু নেতাদেরকে গ্রে’ফতার করে তাদের উপর অকথ্য নি’র্যাতন করেছে। নাসিমকেতো এমন অ’ত্যাচার করেছিল যে, তাকে মৃ’ত মনে করে তাড়াতাড়ি কা’রাগারে পাঠিয়ে দেয়। সে বেঁচে গেছে। দিনের পর দিন অ’ত্যাচার করেছে, আবার সেই অ’ত্যাচারের ভিডিও নিয়ে খালেদা জিয়া-তারেক জিয়া দেখে উৎফুল্ল হয়েছে। এই ধরনের হিং’স্র একটা চরিত্র আমরা দেখেছি। দেশ রূপান্তর

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু তাই না খালেদা জিয়ার ছেলে কোকো যখন মা’রা গেল আমি গেলাম সহানুভূতি দেখাতে। আমি হঠাৎ করে যাইনি। আমার এখান থেকে আমার মিলিটারি সেক্রেটারি যোগাযোগ করেছে। এডিসি যোগাযোগ করেছে। সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আমি সময় মতো গেছি। আমার এখান থেকে এসএসএফ গেছে, সেখানে তারা দেখেছে কোথায় যাব। আমি যখন রওনা গেছি, গুলশান রোডে ঢুকছি তখন শুনলাম ওই বাড়ির মেইন গেট খুলবে না, আমার গাড়ি ঢুকতে দেবে না। তা আমি বললাম এতদূর যখন চলে আসছি ফিরে আসব কেন? ঠিক আছে পাসে নিশ্চয়ই পকেট গেট আছে সেখান থেকে যাব। যখনই আমার গাড়িটা বাড়ির সামনে থেমেছে আমার যে এসএসএফ অফিসারটা ভেতরে ছিল সে জাস্ট বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে আমাকে ভেতরে নিতে, সাথে সাথে দরজাটা বন্ধ করে তালা দিয়ে দিয়েছে। আমি গাড়ির থেকে নেমে বেকুব, আমি আর ঢুকতে পারি না। আমি গেছি একটা স’ন্তানহারা মাকে সহানুভূতি দেখাতে। আর সেখানে এইভাবে অ’পমান করে ফেরত দিয়েছে আমাকে। আর টিভি

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালে একটা ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল। কারণ তার ইচ্ছা ছিল কোনোমতো জনগণের ভোটটা চু’রি করে সে ক্ষমতায় টিকে থাকবে। কিন্তু চু’রি করা সম্পদ যে ধরে রাখা যায় না, আর জনগণের ভোট চু’রি করলে ক্ষমতায় থাকা যায় না, সেটা সে বুঝতে পারেনি। ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে কর্নেল রশীদ এবং মেজর হুদা। একজনকে কুমিল্লা থেকে, একজনকে চুয়াডাঙ্গা থেকে সে-ই ভোটারবিহীন অবস্থায় নির্বাচিত ঘোষণা করে পার্লামেন্টে এনে বসায়। আর জিয়াউর রহমান যেমন ওই রাজাকার আলবদর বাহিনী এবং যু’দ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়ে তাদেরকে মন্ত্রী, উপদেষ্টা করেছিল, খালেদা জিয়াও সেই একই পদাঙ্ক অনুসরণ করে। সেও সেই যু’দ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানায় এবং ক্ষমতায় বসায়। বাংলানিউজ ২৪

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চু’রি করে খালেদা জিয়া (ক্ষমতা) টিকিয়ে রাখতে পারেনি। ভোট চু’রির অ’পরাধে এই বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন গড়ে তোলে এবং খালেদা জিয়া বা’ধ্য হয় ৩০ মার্চ ৯৬ সালে পদত্যাগ করতে। গণ-আন্দোলনের মুখে খালেদা জিয়া পদত্যাগ করেছিল। এটা বোধহয় দেশবাসীর মনে রাখা উচিত। ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চু’রি করে নির্বাচিত ঘোষণা করেছে নিজেকে। তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছে। আর ঠিক তার দেড় মাসের মধ্যে তাকে ক্ষমতা ছেড়ে যেতে হয়েছে।