দুই বছর আগের অডিও ক্লিপ ফাঁস করলো কারা?

| আপডেট :  ৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:৫৭ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:৫৭ অপরাহ্ণ

বি’তর্কি’ত মন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান পদত্যাগ করেছেন। মুরাদ হাসানের পদত্যাগের পিছনে যে অডিও ক্লিপটি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে সেটি হলো চিত্রনায়ক ইমন এবং চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের টেলি আলাপচারিতা। এই টেলি আলাপচারিতাটা সাম্প্রতিক নয়। এটি এক বছরের বেশি আগের মাহি নিজেও স্বীকার করেছেন যে, এটি ২০২০ সালের।

তাহলে প্রশ্ন উঠল যে, ২০২০ সালের অডিও ক্লিপ এখন বাজারে ছাড়লো কারা? বা এই অডিও ক্লিপটি রেকর্ড করলো কারা? এর উত্তরের ভিতরে অনেক রাজনৈতিক র’হস্য লুকিয়ে আছে বলে অনেকেই মনে করছেন। এখন এই অডিও ক্লিপ নিয়ে আজ ডি’বি এবং র‍্যা’বের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইমন। ডি’বির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, মাহিয়া মাহি সৌদি আরব থেকে ঢাকায় ফিরলে তাকেও জি’জ্ঞাসাবাদ করা হবে। কিন্তু এই পুরো ঘটনায় তিনটি প্রশ্ন সামনে এসেছে।

প্রথমত, মাহিয়া মাহি এবং ইমনের সঙ্গে ডা. মুরাদ হাসানের কথোপকথন রেকর্ড করলো কারা? বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী এ ধরনের আড়িপাতা শা’স্তিযোগ্য অ’পরাধ। নিক্সন চৌধুরীর এক মা’মলায় অ্যাডভোকেট শাহদীন মালিক হাইকোর্টে আইন দেখিয়ে বলেছিলেন যে, নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে ডিসির যে টেলি আলাপচারিতা সেই টেলি আলাপচারিতা যারাই রেকর্ড করেছে তারাই শা’স্তিযোগ্য অ’পরাধ করেছে এবং এই যুক্তির ভিত্তিতে নিক্সন চৌধুরীকে হাইকোর্ট জা’মিন দিয়েছিল।

এখন প্রশ্ন হলো যে, একবছর বা দুই বছর আগের এই আলাপচারিতা কারা রেকর্ড করলো? এটি যারা রেকর্ড করেছে তারা কি অনুমতি নিয়ে করেছে বা তারা কি সঠিক কাজ করেছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ এরকম যদি অডিও রেকর্ড করা হয় তাহলে এটি একটি ভয়ঙ্কর ব্যক্তিগত গো’পনীয়তার ল’ঙ্ঘন বলে অনেকে মনে করছেন।

দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো যে, এই ফোনালাপটি এতদিন পরে ফাঁ’স করা হলো কেন? সাম্প্রতিক সময়ে ডা. মুরাদ খুব স্পষ্ট করে বিভিন্ন বি’ষয় নিয়ে কথাবার্তা বলছিলেন। তার এই স্পষ্টবাদিতা কিছু কিছু বি’ষয় আ’পত্তিকর, আবার কিছু কিছু বি’ষয় সত্য। যেমন রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেই বক্তব্য একসময় বিএনপি-আওয়ামী লীগ এমনকি জামায়াতের বক্তব্য ছিলো। তিনি বি’রোধী রাজনীতি নিয়ে যে চাঁচাছোলা সমালোচনাগুলো করতেন সেই সমালোচনাগুলো আলোচনার দাবি রাখে।

তবে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা সম্বন্ধে যে কথাগুলো বলেছেন তা অরুচিকর, কদর্য এবং আ’পত্তিকর। তাহলে কি মুরাদ বলির পাঠা হয়েছিলেন? মুরাদকে কেউ ব্যবহার করেছিল? এই ব্যবহার করার পর তাকে বলির পাঠা বানিয়ে ছুড়ে ফে’লে দেয়া হলো? নাকি মুরাদই কারো এজেন্ট হিসেবে স’রকারকে বিব্রত করার জন্য এবং স’রকারের ভাবমূর্তি ন’ষ্টের জন্য এরকম খেলায় মেতেছিলেন? এই বি’ষয়গুলো বিশ্লেষণ করা দরকার।

এখন নির্বাচনের দুই বছরের মত সময় আছে। এই সময়ে এরকম অনেক কিছুই ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অনেকেই মনে করেন যে, মুরাদের এই ঘটনাটি আসলে একটি কৌশল। স’রকার মুরাদকে ব্যবহার করেছে। যখন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া এবং ছাত্রদের আন্দোলন তখন পুরো দৃষ্টিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করা যায় করার ক্ষেত্রে মুরাদ তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছেন। আর এই কারণেই এতদিন পর তার এই অডিও টেপ বাজারে এসেছে।

কোনটা সত্য কোনটা মি’থ্যা সেটি পরের বি’ষয় কিন্তু রাজনীতিতে এই ধরনের খেলা যদি সামনের দিকে হতে থাকে তাহলে তা একটা ভয়ঙ্কর বার্তা দেবে বলে মনে হয়। মুরাদ যেটি করেছেন সেটি নিঃস’ন্দেহে গর্হিত, অরুচিকর এবং আ’পত্তিকর। একজন রাজনীতিবিদ এরকম শিষ্টাচার বি’রোধী নোং’রা কথাবার্তা বলতে পারেন না। কিন্তু দীর্ঘদিনের পুরনো ঘটনাটি যেভাবে সামনে আনা হলো সেটি কারা কিভাবে আনলো সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার বলে অনেকে মনে করছেন। সুত্রঃ বাংলা ইনসাইডার