এমপি পদও থাকছে না ডা. মুরাদের?

| আপডেট :  ৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭:৩৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭:৩৩ অপরাহ্ণ

জামালপুর জে’লা আওয়ামী লীগের পদ থেকে ডা. মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি জামালপুর জে’লা আওয়ামী লীগের স্বা’স্থ্য বি’ষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। আজ মঙ্গলবার জে’লা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্ম’দ বাকী বিল্লাহ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কারের পরে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সং’সদ সদস্য পদও থাকছে না। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়,“কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরুপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সং’সদ-সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি-(ক) ওই দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা (খ) সং’সদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন, তাহা হইলে সং’সদে তার আসন শূন্য হইবে, তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তী কোন নির্বাচনে সং’সদ-সদস্য হইবার অযোগ্য হইবেন না।”

আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ ম’ন্ত্রণালয়র সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর মতো পরিণতি হতে যাচ্ছে সদ্য পদত্যাগ করা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের। যে কোন সময় দলীয় ভাবে সং’সদ সদস্য পদ শুন্য ঘোষণা করতে চিঠি দিতে পাবে স’রকারি দল।

মঙ্গলবার জাতীয় সং’সদের স’রকার দলীয় প্রধান হুইপ নূর-ই-এলাহী চৌধুরী লিটন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এর আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, মুরাদ হাসানকে এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। দল থেকে ব’হিষ্কারের বি’ষয়ে দলের আগামী কার্যনির্বাহী সং’সদের বৈঠকে চুড়ান্ত করা হবে। জাতীয় সং’সদের প্রধান হুইপ নূর-ই-এলাহী চৌধুরী লিটন বলেন, অতীতের দৃষ্টান্তগুলো ফলো করুন। লতিফ সিদ্দিকীর সময় কী হয়েছিল সেটা দেখু’ন।

২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সং’সদ থেকে পদত্যাগ করেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এর আগে ২০১৪ সালের ১২অক্টোবর মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ন তিনি। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুযায়ী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর মন্ত্রী পদে নিয়োগের অবসান ঘটানোর জন্য প্রে’সিডেন্টকে পরামর্শ দেন। পরামর্শ অনুযায়ী প্রে’সিডেন্ট সংবিধানের ৫৮ অনুচ্ছেদের (১) দফার (গ) উপ-দফা অনুযায়ী ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি ম’ন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর মন্ত্রী পদে নিয়োগের অবসান করা হয়। ওই দিন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি ও প্রাথমিক সদস্য পদ অস্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয় আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর। পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব’হিষ্কার করা হয়।

ডা. মুরাদ হাসানের সং’সদ সদস্য পদের বি’ষয়ে এমন প্রশ্নের জবাবে স’রকার দলীয় হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, দল থেকে শা’স্তির একাধিক স্তর আছে। যেমন পদ থেকে অব্যাহতি ও প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে ব’হিষ্কার। গঠণতন্ত্র মোতাবেক প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে ব’হিষ্কার করতে হলে কারণ দর্শানো নোটিশ দিতে হয়।

অ’ভিযুক্ত সদস্যকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হয়। তারপর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে অ’পরাধের মাত্রা, পারিপার্শ্বিকতা ও আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তিনি বলেন, দলের পদচ্যুতি ঘটলে সং’সদ সদস্য পদ যায় না। এমনকি দল থেকে ব’হিষ্কার হলেও সং’সদ সদস্য পদ খারিজের সরাসরি বিধান নেই। এটি জটিল প্রক্রিয়া।

তবে প্রথাগত প্র্যাকটিস হচ্ছে, মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী প্রথমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে পদত্যাগের অনুরোধ করেন, তিনি পদত্যাগ না করলে তাকে অপসারণের জন্য মহামান্য প্রে’সিডেন্টকে অনুরোধ করেন। তেমনি দল থেকে নির্বাচিত কোনো সং’সদ সদস্য অ’পরাধ করলে দলীয় প্রধানের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সং’সদ সদস্যকে পদত্যাগের অনুরোধ করলে তিনি তা প্রতিপালন করেন। সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর ক্ষেত্রে এ পন্থা অনুসৃত হয়েছে। ডা. মুরাদের বি’ষয়ে দল কি সিদ্ধান্ত নেবেন তা বলার অধিকার আমার নেই। আমি কেবল প্রক্রিয়াটি বললাম।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ এ বলা হয়েছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরুপে মনোনীত হইয়া কোন ব্যক্তি সং’সদ-সদস্য নির্বাচিত হইলে তিনি যদি-(ক) ওই দল হইতে পদত্যাগ করেন, অথবা (খ) সং’সদে উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করেন, তাহা হইলে সং’সদে তার আসন শূন্য হইবে, তবে তিনি সেই কারণে পরবর্তী কোন নির্বাচনে সং’সদ-সদস্য হইবার অযোগ্য হইবেন না।

এদিকে, ওবায়দুল কাদের আজ মঙ্গলবার বিকেলে স’চিবালয়ে মুরাদ হাসানের দলের প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল হবে কি না, জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বি’ষয়ে আমরা সেন্ট্রালি (কেন্দ্রীয় কমিটি) সিদ্ধান্ত নেব। পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটিতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তিনি বলেন, আমরা গাজীপুরের মেয়র এবং ওই মহানগরের সাধারণ সম্পাদকের ব্যাপারে এভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং ছাড়া করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে তার বি’ষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। সুত্রঃ বিডি২৪রিপোর্ট